স্টাফ রিপোর্টার : দলের গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বাতিল করা বিএনপির গলার কাঁটা হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

দলের গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বাতিল করা বিএনপির গলার কাঁটা হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) গলার কাঁটা হয়ে যাবে এ ৭ ধারা। বিএনপির গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা তুলে দিয়ে তারা নিজেরাই নিজেদের ফাঁদে পড়ছে। সরকারকে তাদের ফাঁদে ফেলতে হবে না। সঙ্কট তারা নিজেরাই তৈরি করেছেন এবং সঙ্কটের ফাঁদে তারাই পড়বেন।’

বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারায় কমিটির সদস্য পদের অযোগ্যতার কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ৮-এর বলে দণ্ডিত ব্যক্তি, দেউলিয়া, উন্মাদ বলে প্রমাণিত ব্যক্তি, সমাজে দুর্নীতিপরায়ন বা কুখ্যাত বলে পরিচিত ব্যক্তিরা জাতীয় কাউন্সিল, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, জাতীয় স্থায়ী কমিটি বা যেকোনো পর্যায়ের যে কোনো নির্বাহী কমিটির সদস্য পদের কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী পদের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার রায়ের আগে বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বাদ দিল কেন, রহস্য কী? এ প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন না। তারা বারবার এড়িয়ে যাচ্ছেন। এ প্রশ্নের জবাব দেশবাসীও চায়, জনগণও চায়, আমারও চাওয়ার অধিকার আছে।’

তিনি বলেন, ‘এ ধারা ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে, উন্মাদ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে, আদালতে দণ্ডিত হওয়ার বিরুদ্ধে। নৈতিকতার দিক থেকে একটা রক্ষাকবচ। এটা বাদ দেওয়ায় রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের যে বৈশিষ্ট, যে চরিত্র সেটা কোন অবস্থায় দাঁড়ালো, তার মানদণ্ডটা কোথায় সেটি আমাদের বুঝতে হবে।’

৭ ধারা বাদ দিতে এর যৌক্তিকতা তুলে ধরতে বিএনপি ওয়ার্কিং কমিটি কোনো মিটিংও করেনি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তাহলে কী তারা দুর্নীতি করার অবাধ লাইসেন্স দিয়ে দিল, উন্মাদ হওয়ার লাইসেন্স দিল, দেউলিয়া হওয়ার লাইসেন্স দিল এবং দণ্ডিত হলেও যা তা করা যাবে এরকম লাইসেন্স দিয়ে দিল? বিএনপির নেতা হলে নৈতিকতার কোনো সীমারেখা মানা যাবে না, কোনো সীমারেখার প্রয়োজন নেই? দুর্নীতিবাজ, উন্মাদ, দেউলিয়া বিএনপির নেতা হতে পারবে? নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হতে পারবে?’

তিনি আরও বলেন, ‘দণ্ডিত পলাতক ব্যক্তিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার জন্য তড়িঘড়ি করে রায়ের আগে ৭ ধারা নির্বাসনে পাঠানো হলো কেন? এ প্রশ্ন করলে তারা আরেক দিকে চলে যাচ্ছেন।’

খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন কি-না তা আদালতের বিষয়

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া আগামী জাতীয় নির্বাচন করতে পারবেন কি-না? এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘সেটা আদালতের সিদ্ধান্তের বিষয়। এটা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের ব্যাপার নয়, আওয়ামী লীগের সরকারেরও সিদ্ধান্তের ব্যাপার নয়। যে বিষয়টা আদালতের এখতিয়ার সেটা অহেতুক রাজনীতে টেনে এনে আমি কেন মন্তব্য করতে যাব? দরকার তো নেই। তারা যেটা বলে সেটা তাদের বোঝার ভুল হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘রায় দিয়েছে আদালত, তারা (বিএনপি) আন্দোলন করছে সরকারের বিরুদ্ধে। এখানে যুক্তিটা কোথায়? তার মানে তারা আদালতের সিদ্ধান্ত মানেন না, এ কথাটি প্রকাশ্যে বলে দিলেই হলো।’

এর আগের নির্বাচনে বিএনপি আসেনি আগামী নির্বাচনটা সরকার কীভাবে করতে চায়- এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শোনেন, কারও জন্য কিছু আটকে থাকে না। কারো জন্য নির্বাচনের ট্রেন অপেক্ষা করবে না। সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন যথারীতি চলবে।’

উস্কে দেয়ার প্রয়োজন নেই, তারা সুযোগ পেলেই করে

বিএনপি বলছে আপনি (ওবায়দুল কাদের) বিএনপিকে সহিংসতার জন্য উস্কে দিচ্ছেন- এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি উস্কে দেয়ার তো প্রয়োজন নেই, তারা সুযোগ পেলেই করে। পারে না বলে অক্ষমতার অজুহাত দিয়ে লাভ নেই। সুযোগ পেলে তারা সবই করে, ক্ষমতায় কুলোলে সবই করে। এখন ক্ষমতায় কুলোচ্ছে না, কী করবে? এখন এগুলো করতে গেলে প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হবে, পাবলিকই প্রতিরোধ করবে।’

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আগামী ১১ মার্চ ভারত সফরে যাচ্ছেন বলেও এ সময় জানান ওবায়দুল কাদের।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৮)