চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : চাটমোহরসহ চলনবিল অঞ্চলে পানের দাম বেড়ে চারগুণ হয়েছে। প্রতি শ (৮০টা) পান  বিক্রি হচ্ছে ৪’শ টাকায়। বিপাকে পড়ে গেছে পানসেবীরা। হঠাৎ পানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খুচরা পান ব্যবসায়ীদের সাথে বচসায় জড়িয়ে পড়ছে পানসেবীরা। 

ব্যবসায়ীদের দাবি প্রতিদিন ছয় থেকে দশ হাজার পান দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা পল্লীতে পানের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় পানের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

পান ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া জানান,চাটমোহরের বাজারে পানের যোগান বহুলাংশে কমে গেছে। চিটাগাং থেকে পাইকার ব্যবসায়ীরা এসে এখান থেকে পান খরিদ করে নিয়ে যাচ্ছে। রহিঙ্গা পল্লীতে ব্যাপক পান বিক্রি হয় বলে দাবি তাদের। সে কারণে চাহিদার তুলনায় যোগান অত্যন্ত কম। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পান পান ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে।

খুচরা পান ব্যবসায়ী মগরেব আলী জানান, একটি পান পাইকরী দাম পড়ছে ৫ টাকা। ফলে বাসা বাড়িতে যারা পান সেবন করেন তারা ৫ টাকার পান খুচরা কিনতে চাইলে একটিও হয়না। ফলে বর্তমানে ব্যবসা গুটিয়ে দেয়া হয়েছে।

কয়েকটি খুচরা বাজারে ঘুরে দেখা যায়, কোন খুচরা পান বিক্রেতা তাদের দোকান বসায়নি। হাট গুলোতে দু’একজন দোকানদার দোকান করলেও ৫টি পান কুড়ি টাকায় বিক্রি করছে। এ অবস্থায় অনেকেই পান সেবন কমে দিয়েছে।

পান উৎপাদনকারী চাটমোহরের হরিপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের আক্কাস আলী বলেন,তার চারটি পানের বর রয়েছে। গাছের বয়স বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে পানের উৎপাদন কমে গেছে। যে পান উৎপাদিত হচ্ছে ব্যবসায়ীদের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া স্থানীয় পান ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অন্য জেলা থেকে পান খরিদের জন্য পাইকার ব্যবসায়ীরা পাবনা এসে পান খরিদ করে নিয়ে যাচ্ছে।

সম্প্রতি শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে পানের বরজের ক্ষতি হয়েছে। ফলে উৎপাদনে ধস নেমেছে। এতে করে পানের সংকট দেখা দিয়েছে। একদিনে উৎপাদন কমে গেছে, অন্য দিকে চাহিদা বৃদ্ধির কারনে দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি পান চাষীদের। তবে আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে নতুন পান বাজারে আসলে দাম স্বাভাবিক হবে বলে দাবি উৎপাদনকারীসহ ব্যবসায়ীদের।

চাটমোহর উপজেলার হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, পানের দাম অনেকটাই বেড়েছে। উপজেলার হরিপুর ও পার্শ্ববর্তী জোনাইল ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পান চাষ হয়। তারা এখন পান সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। অনেকে অধিক দামের কারণে অনেকটা অপক্ত পান তুলে বাজারে আনছেন।

(এসএইচএম/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৮)