আকাশ ভুবন

দুলছো ও ঢেউ ? ঠিক তুমি ঠিক,
খুজছো কি আজ ? বক, না শালিক !

বেশ তো হেঁটে যাও আলিপুর !
তোমায় দেখে হাসবে দুপুর !

নামতা পড়ে নাম কিগো তার ?
কাজ না পেলে, দাওনা সাঁতার !

সাঁতরে ডাকো ও মাঠ ও গ্রাম !
ছুটতে ছুটতে অবাক হলাম !

এই যা পাখি, যা পাখি হুস !
একটা কি ফুল পড়লো টুপুস ?

নাচতে পারো ? দাও নাচে মন !
ওইতো আকাশ, এইতো ভুবন !

ওড়ে কদম মাস

হাত তালি দেয় হালুম হুলুম রূপোলী এক বাঘ ।
এখনও সেই অরূপ মনে ছেলেবেলার দাগ ।

টাপুর টুপুর রূপকথাপুর । মেঘ বালিকার গান ।
আতর মাখা রামধনু দিন । মাঠ ভরা সব ধান ।

পাতায় পাতায় ঝুমঝুমি রোদ । পাখির মতো সুখ ।
গাছের নীচে কিশোরী আর একটি কিশোর মুখ ।

বুকের ভিতর অনেক তারা । ঘাসের কুঁড়ি । ঘাস !
ডানা নাড়ায় রূপকথাপুর । ওড়ে কদম মাস ।

কবি ও কিশোরীটি

নীলাকাশ কিশোরীটি, কবি দ্যাখে তাকে ।
যেন রূপকথা জাগে তারার পোষাকে ।

ধুপকথা, চুপকথা, রামধনু পাখি ।
বলে উড়ে যাও আজ হাজার জোনাকি ।

আজ শুধু গান লিখে টান টান সুখে ,
ডুবে যায় রোগা কবি আলোর অসুখে ।

পারা কাঁপে ! কিশোরীটি সারা রাত ধরে
কবিকেই আঁকে শুধু ঘাসের ভিতরে !

কইবো কথা পরে

একটা পাথর নাড়ায় ভীষণ ; একটা নড়ে চড়ে,
একটা মেয়ে ডুব দিয়ে মন একলা আকাশ ধরে ।

ধরতে গেলেই মুখ দেখা যায়, পাগলি বড় মেয়ে ।
উড়িয়ে আঁচল পাথর বাজায় পাথুরে গান গেয়ে ।

বাজো বাজো নীল পাখোয়াজ, নীল ভূবনের পাখি ।
আজ বুকে এক খুশির মেজাজ বইছে কাকে ডাকি ?

ডাকতে ডাকতে হাঁস বাড়িটার পালক ঝরে পড়ে ।
ও “আলোদূত পাতাবাহার” কইবো কথা পরে ।

মন

উড়িয়ে দেবো ওড়নাকে আজ, কাল ওড়াবো কাকে ?
কাল ওড়াবো পাখির কোলাজ, ফুলকি বেড়ালটাকে !

ভুল বলেছি, বেড়াল না মো্‌ দেখছি এখন তুলে ;
বুক রেখেছি একটি নরম নাম জানিনা ফুলে ।

নাম জানিনা ফুল কী ও ঘুম ? খুলছি মনের ঝাঁপি !
এমন সময় বুঝতে পেলুম লোকটি সদালাপি ।

বললে বসুন ঝুমঝুমি ভাই, এইতো আমার বাড়ি ।
ছড়িয়ে দিলুম খুশির সানাই ! মেঘনা,বাউল,জারি !

তোমার মতো বন্ধু পেলে

তোমার মতো বন্ধু পেলে ভুবন পুরের জোনাকী গাছ,
রামধনু দেশ ছড়িয়ে মনে আপন নেশায় শেখাতো নাচ ।

তোমার মতো বন্ধু পেলে কাটুম কুটুম রূপকথা সই,
বলতো এসে, সবাই এসো, আমরা খুশির জলছবি হই ।

তোমার মতো বন্ধু পেলে হারিয়ে যাওয়া উদাসী ভোর,
কুড়িয়ে আলো আবার ঠোঁটে বলতো আমি খুব চেনা তোর ।

তোমার মতো বন্ধু পেলে হৃদকমলের সব কচি ঘাস,
বলতো জাগো, জাগো এবার রাতের শিশির, জুঁই, বেলি মাস ।

তোমার মতো বন্ধু পেলে ভূবন পুরের জোনাকী গাছ,
রামধনু দেশ ছড়িয়ে মনে ফুল ফোটানোর শেখাতো নাচ ।

দেশ

আমি লিখবো মিতুল নদী, আমি লিখবো শালের চারা,
এই এদিকে একটু এসো , জাগছে দ্যাখো মোহর পাড়া ।

আমি ছুটবো খুশির দেশে , আমি খুজবো পথের সারি ,
তাল সুপুরির বনটি কোথায় ? সেই বনে মন মেলতে পারি ।

আমি মাখবো মাদল বুকে , আমি গাইবো সবুজ পাতা ।
আমি রাখবো চোখের ভিতর একলা জাগার একটি খাতা ।

আমি বাইবো হরিণ ডিঙা , আমি লিখবো শিরীন সাঁকো ।
এ-দেশ আমার, এ-দেশ তোমার । ছবির কোলাজ জুড়তে থাকো ।

নাচতে ভালো লাগে

পাখি । পাখি । সাত খুশি মন । ফুলটুসি ধান বাড়ি ।
গাব গুবা গুব আলোর উঠোন । নেই যেন তার আড়ি ।

কদম । কদম । কদম সানাই । দুই চোখে ভোর নদী ।
এই ছোঁয়ালুম খুশির পালক । এই আলাদীন প্রদীপ ।

এই দ্যাখো আজ রূপকথাপুর । খুব চেনা সব মানে ।
ধানের সুবাস । জুঁই, নালি ঘাস । মন রেখো সাবধানে ।

আসমানে এক ঝুমঝুমি দেশ । চাঁদমালি রাত জাগে ।
জুঁই বেলি চর দেয় পাহারা । নাচতে ভাল লাগে ।


পারুল বোনের দেশে

একটা আমি খুশির সানাই হইযে বকুল মাসে !
তাই নাকি রোজ জুঁই নদীটি গান শোনাতে আসে !!

গানের দেশের ফুল তলা ঘর হাততালি দেয়, নাচে !
চরকা বুড়ি সেই খুশিতেই একলা সুতো কাটে !

কাটতে কাটতে সময় না ঠিক, হরিণ মঠের আলো !
চিক চিকিয়ে বলতে থাকে বুকের প্রদীপ জ্বালো!!

প্রদীপ ! নাকি রূপকথা হাঁস হাওয়ায় ভেসে ভেসে !
হাসতে হাসতে যায় নিয়ে ফের পারুল বোনের দেশে !!

যাইনি তোমায় ভুলে

আমি গাইলুম রাজধানী মেঘ আপন ভোলা দেশে ,
চাঁদের মতন আবার কখন নাচবে ময়ূর হেসে ?

রাজধানী মেঘ বললে দাঁড়াও, গান জানিনা তবে
কাল ভেবেছি যাকনা দুদিন একটা কিছু হবে ।

বলেই না সেই রাজধানী মেঘ খুঁজতে গেল বাঁশি
আর ফেরেনি । ভাবছি তাকে আমিই ছুঁয়ে আসি ।

ভাবতে ভাবতে এক আলো পথ পেরিয়ে এসে দেখি,
সাতটা বিরাট তারার দিঘী ! কাটছি সাঁতার সেকি !

সাঁতরে সাঁতরে আর ম্নে নেই , উঠলো হৃদয় দুলে
রাগ করোনা রাজধানী মেঘ, যাইনি তোমায় ভুলে ।

বাড়ি

একলা নদীর সাঁকো !
বললে ও ভাই আজ সারাদিন আমায় তুমি আকো !

যেই এঁকেছি নদীর দু-কুল, যেই এঁকেছি পাখি,
অমনি দেখি হাজার নাচের রাখী !

ভালোবাসার ফুল হয়ে সব বললে কাছে এসে,
আজ চলো যাই নতুন গানের দেশে !

দেশ মানে কি আকাশ , নাকি যা খুশি হয় ডাকো ?
আলো আশার হাত দুটিকে বুকের ওপর রাখো !

হাতছানি দেয় রূপকথা আর তাল তমালের সারি !
সেই তো আমার ধান পতাকা বাড়ি
মেঘনা পুরের পাখি
ডাকছো কাকে ? একটু জোরে ডাকো ।
লোকটা পেরোয় ঘড়ায় চড়ে সাঁকো ।

আর কি দ্যাখো ঘোড়ার চোখে তুমি ?
উরছে পালক মেঘনা বনভূমির !

তির তিরিয়ে বইছে বাতাস চরে ,
লোকটা পাগল ডুবছে গভীর জ্বরে !

বুনছে আকাশ ,রঙিন প্রীতির ফিতে ;
ফুল ফুটেছে একটা চিঠি দিতে !

আর একটা ফুল ফুটুক , জেগে থাকি!
হৃদয় কাঁপায় মেঘনা পুরের পাখি !

কবি পরিচিতি :

গদাধর সরকার ( ছদ্ম নাম – মালিপাখি ), পিতা- নানুগোপাল সরকার, মাতা- লক্ষীরানী সরকার, জন্ম- ১২-১০-১৯৬৭, জন্মস্থান- কৃষ্ণনগর। শিক্ষা- মাধ্যমিক। পেশা-ভুমি ও ভুমি সংস্কার দপ্তরের কর্মচারী ।
নীল আকাশ, তিতলি, জীবনকুচি, পত্রিকায় লেখা প্রকাশ । বই – মালিপাখির ছড়া সংগ্রহ ( ডি এম লাইব্রেরী, কোলকাতা - ৬)

ঠিকানা – মালিপাখি, ( গদাধর সরকার ), মল্লিক পারা, কৃষন্ননগর, নদীয়া, ফোন- ৮৫৩৬৯৮৬০৪৩