আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : সরকারের ভ্যাট ও কর ফাঁকি দেয়ার কৌশল হিসেবে সংশ্লিষ্ট কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে একই মালিক কর্তৃক প্রতারনার মাধ্যমে ব্রিকস ফিল্ডের (ইটভাটা) চারবার নাম পরিবর্তন করে ব্যবসা করে যাচ্ছেন বাকেরগঞ্জের চরামদ্দি ইউনিয়নের কাটাদিয়া গ্রামের দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি।

সূত্রমতে, সরকারের বকেয়া ভ্যাট ও কর ফাঁকি দেয়ার কুট কৌশল হিসেবে একই ইট ভাটার নাম চারবার পরিবর্তন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে কোন প্রকার অনুমতি ও নির্দেশনা ছাড়াই মহাদাপটের সাথে নিজেদের ইচ্ছেমতো একেক একসময় একেক নাম দিয়ে ব্রিকস্ ফিল্ডের ব্যবসা করছেন কাটাদিয়া এলাকার জয়নাল আবেদীন খানের পুত্র প্রভাবশালী শামিম খান ও ফজলে আলী খানের পুত্র জয়নাল খান।

সূত্রে আরও জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী কোন ইটভাটা প্রতিষ্ঠান করতে হলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট ও কর অফিসের অনুমোদন নিতে হবে। সরকারী সকল নিয়মকে বৃদ্ধাঅঙ্গুলি দেখিয়ে দীর্ঘদিন থেকে কোনপ্রকার অনুমোদন ছাড়াই প্রভাবশালীরা ইট ভাটার ব্যবসা করে যাচ্ছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-২০১৫ সালে কাটাদিয়া এলাকায় শামিম ও জয়নালসহ ৩/৪ জনে মিলে ‘ডিজেবি’ নামের একটি ইট ভাটা নির্মান করেন। ২০১৫-২০১৬ সালে পূর্বের নাম পরিবর্তন করে একইস্থানে ‘কেএইচবি’ নামকরন করে ইট তৈরী করা হয়। পুনরায় ২০১৬-১৭ সালে আবারও নাম পরিবর্তন করে ‘খান ব্রিকস্’ নাম দিয়ে ইট তৈরী করেন। সর্বশেষ ২০১৭-১৮ সালে ওই নাম পরিবর্তন করে ‘টু-স্টার ব্রিকস’ নাম দিয়ে ইট তৈরীর ব্যবসা করে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে ব্রিকসের মালিক জয়নাল আবেদীন বলেন, আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া অন্য সকল কাগজপত্র রয়েছে। চারবার নাম পরিবর্তনের নামে ভ্যাট ও কর ফাঁকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করে দফারফা করার প্রস্তাব দেন। এছাড়া বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তারা অবহিত রয়েছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

চরামদ্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাউছে আজম লাল জানান, টু-স্টার ব্রিকস্ নামের কোন ইট ভাটার প্রত্যায়নপত্র তিনি দেননি বা এই নামের কোন ইট আছে বলে তার জানা নেই।

বরিশাল ভ্যাট অফিসের ইন্সেপেক্টর মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, চরামদ্দি কাটাদিয়া এলাকার শামিম ও জয়নালসহ বেশ কয়েকজনে মিলে একটি ইট ভাটা করেছিলো। তারা একাধিকবার নাম পরিবর্তন করেছে বলে শুনেছি।

তিনি আরও জানান, খান ব্রিকস্ ইট ভাটার কাছে ভ্যাট বাবদ তাদের তিন লাখ ৯৬ হাজার টাকা ভ্যাট পাওনা রয়েছে। এছাড়া টু-স্টার ব্রিকস্ নামের নতুন কোন ইট ভাটার অনুমোদন তারা দেননি।

এ ব্যাপারে সরেজমিনে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

(টিবি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮)