আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, শিক্ষকদের হাতে অস্ত্র দিলেই স্কুলে হামলা বন্ধ করা যাবে। গত সপ্তাহে ফ্লোরিডার একটি স্কুলে হামলার ঘটনায় ১৭ জন নিহত হয়। ওই হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থী ও নিহতদের স্বজনেরা একটি অস্ত্র বিরোধী র‌্যালিতে অংশ নেয়। খবর বিবিসি।

র‌্যালি শেষে তারা ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন। হতাহতদের স্বজনদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, স্কুলের শিক্ষকদের হাতে অস্ত্র থাকলে হামলার ঘটনা খুব দ্রুত কমবে।

ট্রাম্প বলেন, যারা স্কুলে হামলা চালায় তারা কাপুরুষ। স্কুল অস্ত্রমুক্ত এলাকা বলে তারা সেখানে হামলা চালাতে উৎসাহিত হয়। কারো হাতে অস্ত্র নেই বলে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। যদি আগ্নেয়াস্ত্রে পারদর্শী কোনো শিক্ষক আপনাদের থাকত তবে তারা খুব ভালোভাবেই ওই হামলা প্রতিহত করতে পারত। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্যে কলেজ ক্যাম্পাসে অস্ত্র বহনের বৈধতা থাকলেও ফ্লোরিডায় সে সুযোগ নেই।

২০১৬ সালে নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প শ্রেণিকক্ষে বন্দুক নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এমন তথ্য অস্বীকার করেছেন এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

শিক্ষকদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে অনেকেই একমত প্রকাশ করেছেন। তবে ২০১২ সালে কানেক্টিকাটের স্যান্ডি হুক এলিমিনেটরি স্কুলে হামলার ঘটনায় নিহত ড্যানিয়েলের বাবা মার্ক বার্ডেন বলেন, আরো বেশি অস্ত্রই হামলা কমানোর জন্য উপযুক্ত নয়। তিনি বলেন, স্কুলের শিক্ষকদের এখন আরও অনেক বেশি দায়িত্ব। তাদের এখনও আরও অনেক কিছু করার রয়েছে।

বুধবার ফ্লোরিডার একটি স্কুলে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১৭ জনকে হত্যা করা হয়। সেমি-অটোমেটিক রাইফেল দিয়ে সেখানে হামলা চালানো হয়। আর ওই অস্ত্র বৈধভাবেই কিনেছিলেন হামলাকারী নিকোলাস ক্রুজ।

ওই ঘটনার পর হামলাকারীর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠে এবং জানা যায় ২০১৬ সালেই মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। ক্রুজের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এই তথ্য সামনে আসার পর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবী আরো জোরালো হয়। ফ্লোরিডা হামলায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া ডেভিড হগ ট্রাম্পকে সরাসরি উদ্দেশ্য করে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবী জানান।

হগ বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, হাউস অফ রেপ্রেজেন্টেটিভ কিংবা সিনেট, সবকিছুই আপনার নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু এরপরও মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার জন্য এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনি একটি বিলও আনেননি। এটা সত্যিই হতাশাজনক।

অস্ত্র বিক্রির আগে ক্রেতার অতীত জীবন পর্যালোচনার কার্যক্রম জোরদারের বিষয়টি সমর্থন দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস বলছে, ইতিমধ্যেই আগ্নেয়াস্ত্রের মালিক হবার ক্ষেত্রে নিয়মকানুন আগের চেয়ে কঠিন করতে ট্রাম্প রিপাবলিকান সিনেটর জন করনিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় একটি বিল আনার ব্যপারে কথা বলেছেন।

মারজোরি স্টোনম্যান ডগলাস হাই স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, অস্ত্র বিক্রির আগে আমরা অবশ্যই ক্রেতার অতীত জীবন পর্যালোচনা করব এবং খুব কঠোরভাবেই তাদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখব।

তবে অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে আগে ট্রাম্প এমন মনোভাব প্রকাশ করেননি। অস্ত্র রাখার ক্ষেত্রে মানুষের যে ব্যক্তিগত অধিকার আছে সেখানে কিছুতেই তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু ফ্লোরিডার হামলার পর তিনি তার আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৮)