স্টাফ রিপোর্টার : ধামরাইয়ে ফসলি জমিতে অবৈধভাবে নির্মানাধীন ইটভাটা এবং নির্মানকৃত দুইটি ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র এবং ডিসি লাইসেন্স না থাকায় ইটভাটার মালিককে প্রায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। অপরদিকে বংশীনদীতে অবৈধভাবে ড্র্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করায় প্রায় অর্ধকোটি  টাকার ড্রেজার ও বিপুর পরিমান পাইপ ধ্বংস করেছে একই আদালত।

ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাকনাইল-সীতি এলাকায় অবৈধভাবে ফসলি জমিতে নির্মানাধীন স্বর্ণা ইটভাটার মালিক আবদুর রশিদকে ১ লাখ টাকা ও নান্নার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনের নির্মানকৃত ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স না থাকায় ৩০ হাজার টাকাসহ তিনটি ইটভাটার মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম।

এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে বংশী নদীর কুশুরা, মহিশাষী, বাসনা, আমছিমুর, বাস্তা, বাটুলিয়া এলাকায় অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল প্রভাবশালীরা।

বৃহস্পতিবার ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ধামরাইয়ের ইউএনও আবুল কালাম কুশুরা বংশী নদীতে অভিযান চালিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা মূল্যের চারটি ড্রেজার ও বিপুল পরিমান পাইপ ধ্বংস করেন। এ সময় বালু উত্তোলনকারীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে ধামরাইয়ের ইউএনও আবুল কালাম বলেন, পর্যায়ক্রমে ধামরাইয়ের বংশী নদীর সকল অবৈধ ড্রেজার ধ্বংস করা হবে এবং অবৈধ ইটভাটায় অভিযান অব্যাহত থাকবে।

উপজেলার আনাচে-কানাচে,আবাসিক এলাকায় ও ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মান করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে আসছে অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যান। এ ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে ইটভাটা নির্মান করা শুরু করে মালিকরা।

এরপর পরিবেশ অধিদপ্তরে ছাড়পত্র ও ডিসির কাছে লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করেই ভাটার মালিকরা বলতে থাকেন, ‘আবেদন করা হয়েছে অচিরেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেয়ে যাব’। কিন্তু আবেদনপত্র বছরের পর বছর সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে পড়ে থাকে আর চলতে থাকে ইট তৈরী। তবু মালিকদের শেষ হয়না আবেদনের দোহাই।

ধামরাইয়ে এ বছর নতুন ৪৭টি ইটভাটা নির্মান করা হয়েছে। সর্বমোট দুই শতাধিক ইটভাটা রয়েছে ধামরাই উপজেলায়। অধিক লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় শত বাধা উপেক্ষা করে পেশিশক্তি কাজে লাগিয়ে হুমকি দমকি দিয়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আবাসিক এলাকায় ও ফসলি জমিতে গড়ে উঠছে অসংখ্য ইটভাটা।

এ যেন ধামরাই উপজেলা ইটভাটা নির্মানের নিরাপদ জোনে পরিনত হয়েছে। ইটভাটায় মাটি সরবরাহে কাজে নিয়োজিত উপজেলার প্রতিটি কাচা-পাকা সড়কে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দ্রুত গতিতে দাপিয়ে বেড়া শতশত ট্রাক। ফলে অধিকাংশ সড়ক বেহাল অবস্থা। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে এসব রাস্তা-ঘাট। ধূলো-বালিতে বিবর্ণ হয়ে গেছে অধিকাংশ ঘর-বাড়ি থেকে শুরু করে গাছপালা।

(টি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৮)