জে জাহেদ, চট্টগ্রাম : এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম সংলগ্ন মাঠে ‘ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা ২০১৮’ শুরু হয়েছে।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুল মান্নান।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আ্দুল মান্নান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ড.এসএম মনির উজ জামান, চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার, পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা ও সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।

স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ্দুল মান্নান বলেন, ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও অবকাঠামোগতসহ সব ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। দেশের মানুষ দ্রোগোড়ায় ডিজিটাল সেবা পাচ্ছে। শুধু তাই নয় ডিজিটালের সুবাদে বর্তমানে দেশের ১২ কোটি মানুষ মোবাইল ব্যবহার করছে। এর মধ্যে ৫ কোটি মানুষ তেমন শিক্ষিত না। তারপরও এটি সম্ভব হয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে।’

ডিজিটালের সুবাদে দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘সবখানে ডিজিটাল হওয়ায় দেশের প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছে। কেউ দুর্নীতি করবে সেই সাহসটুকুও পাচ্ছে না। কারণ ঘুষ নেওযার আগে সে ভাবছে কোনো রেকর্ডিং কিংবা গোপনে ভিডিও করা হয়েছে কি না।’

‘দেশের ৯৯ ভাগ শিশু স্কুলে নাম লেখাচ্ছে এর মধ্যে মাত্র ৫ ভাগ শিশু ড্রপ আ্উট হচ্ছে। ফলে স্বাধীনতার পরবর্তী মাত্র ১৮ ভাগ মানুষ শিক্ষার্থী হলেও বর্তমানে এই শিক্ষার হার প্রায় ৭২ ভাগ। সবকিছু সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেথ হাসিনার কল্যাণে।’ বলেন আব্দুল মান্নান।

জেলার পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের সব সেক্টরে ই-সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এই সেবা পৌঁছে গেছে। বিশ্বের কোনো দেশে একসাথে সব সেক্টরে এরকম ডিজিটাল পরিবর্তন হয়েছে কি না সন্দেহ আছে। যেটা বাংলাদেশে সম্ভব হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক জানিয়েছে, মেলায় ১২৫টি স্টল রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান ৪৩টি, ব্যাংক ২৫টি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২৭টি, আইটি প্রতিষ্ঠান ১০টি, ফুড অ্যান্ড কফি কর্নার ১২টি, এনজিও এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ৮টি।

মেলায় শ্রেষ্ঠ ডিজিটাল সেন্টার ২টি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২টি, দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান প্রতিষ্ঠান ২টি, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নাগরিক সেবায় উদ্ভাবন বাস্তবায়ন ১টি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ১টি, তরুণ উদ্ভাবক ৩টি ,স্টল ১টই-সেবা প্রদানকারী দপ্তর ১টি , পোর্টালের দপ্তর (জেলা ১টি ও উপজেলা ১টি)সহ মোট ১৫টি পুরস্কার দেওয়া হবে।

এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর গল্প বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতার ১২টি এবং আমার চোখে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার ১২টি, আইসিটিবিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতার ১৫টি, ফ্রি কুপন ড্রয়ের ৯টি ও সেলফি কনটেস্টের ৫টি পুরস্কারসহ ৬৮টি এবং অংশগ্রহণকারী সব স্টল, অতিথিদের শুভেচ্ছা পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হবে।

প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে মানুষ দোরগোড়ায় সহজে ডিজিটাল সেবা পাচ্ছেন।সব সেক্টরে ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। ২০১১ সাল থেকে মাঠ পর্যায়ে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা শুরু হয়েছে। মানুষ এটিকে গ্রহণ করেছেন। প্রতিবছর এ মেলায় মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ছে।’ ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছাতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরতে এ মেলার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। মেলার সার্বিক তত্ত্বাবধান করছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এটুআই (অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন) প্রজেক্ট।

তরুণদের জন্য রয়েছে আইসিটি কুইজ প্রতিযোগিতা, প্রজেক্ট জমা দেওয়ার জন্য ইনোভেথন, সিভি-ক্লিনিক, ড্রোন প্রদর্শনী, আমার চোখে ডিজিটাল বাংলাদেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সেলফি কনটেস্ট। এছাড়া সরকারি দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, বিভাগ, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ব্যাংকিং ও বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সেবার প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।


এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের আউটার স্টেডিয়ামে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা চলবে।

(জেজে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৮)