আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : এখন মান-অভিমানের সময় নয়, দল এখন সংকটে আছে, দলের চেয়ারপার্সন কারাগারে এমতাবস্থায় চা-পাওয়ার হিসেব না করে নেত্রীকে মুক্ত করতে আন্দোলনে ফের রাজপথে সক্রিয় হয়েছি । 

মঙ্গলবার দুপুরের দিকে একান্ত আলাপকালে এমন মতামত ব্যক্ত করেন এক সময়ের জেলা বিএনপির প্রভাবশালী সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র ফয়জুল করিম ময়ূন। দলের কঠিন সময়ে জেলার নেতৃত্ব নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও দীর্ঘদিনের নিরবতা ভেঙ্গে নিজের অবস্থান রাজপথে ফের জানান দিতেই তৃতীয় মাত্রায় যোগ করেন তিনি।

মূলত ২০১৭ সালের ২৫শে মে জেলা বিএনপির নতুন কমিটি আসে। সেখানে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে ৪৮ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষনার পর থেকেই নিজের নিরবতা জানান দিতে থাকেন। কমিটি ঘোষনার আগ পর্যন্ত ফয়জুল করিম ময়ূন বেগম খালেদা রব্বানী গ্র“পের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে উপস্থিত থাকলেও কমিটি ঘোষনার পর নিজ বাসায় নিজের অনুষারীদের নিয়ে বিভিন্ন বৈঠক করতে থাকেন।

এ বিষয়ে ময়ূন বলেন, দলে সর্বশেষ যে কমিটি ঘোষনা করা হয়, তাতে আমি বিস্মিত হয়েছি, কারন এই কমিটিতে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাকে এই কমিটিতে সহ-সভাপতি রাখা হয়েছে, যা আমার পক্ষে মেনে নেয়া কঠিন, সেটা না করে তারা যদি আমাকে জেলা বিএনপির সদস্য হিসেবে রাখতে পারতেন, আমি মেনে নিতাম। ১/১১ এর সময়ে দলের জন্য মিথ্য মামলায় কারাগারে দিন কাঠিয়েছি, নিজের ব্যক্তি মালিকানাধিন বিল্ডিংয়ে দলের কার্যক্রম চালানোর জন্য জেলা বিএনপির অফিস করে দিয়েছি ,অতচ দেশের বৃহত্তম একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে জেলা বিএনপির কার্যক্রম চালানোর জন্য বর্তমানে একটি কার্যালয় নেই, এর জন্য তিনি দলের অভ্যান্তরিণ কোন্দলকে দায়ী করে বলেন, অনেক চেষ্ঠা করেছি এই কোন্দলের অবসানের জন্য।

তিনি আরো বলেন, ৩-৪ বছর পূর্বে দলীয় কর্মিসভাকে কেন্দ্র করে বিভাদমান দুটি গ্রুপের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি ৬টি মামলা মধ্যস্থতা করে শেষ করে দিয়েছি। এসবের পর নানান কারনে নিজের জমানো ক্ষোভ থাকলেও যেহেতু দল করি এবং আমি শহীদ জিয়ার আদর্শকে মনে প্রানে বিশ্বাস করি বিধায় দলের কঠিন সময়ে চেয়ারপারসনকে মুক্ত করতে ফের হামলা, মামলা ও পুলিশের হয়রানী মাথায় নিয়ে রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় হয়েছি, তাকে মুক্ত করেই ঘরে ফিরবো।

জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট দূর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিশেষ আদালতের দেয়া সাজা এবং তার মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রঘোষিত সাম্প্রতিক কর্মসূচি পালনে ঢাকা সহ দেশের মহানগরী, জেলা-উপজেলায় নির্দেশনা আসলে জেলা বিএনপির দুটি বলয়ের পাশাপাশি সক্রিয় হন জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র ফয়জল করিম ময়ূন এর নেতৃত্বাধিন আরেকটি তৃতীয় বলয় । এর পরই মূলত রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলতে থাকে বিষয়টি নিয়ে।

রাজনীতির উত্তপ্ত মাঠে এতদিন তিনি নিরব থাকলেও চেয়ারপারসনের সাজার রায়কে কেন্দ্র করে হটাৎ সরব হয়ে উঠেন মাঠের রাজনীতিতে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে নিজ বলয়ের অবস্থান প্রমানের অংশ হিসেবে কেন্দ্রঘোষিত সব কর্মসূচিই পালন করছেন নিয়মিত, বাড়াচ্ছেন গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে যোগাযোগ। চেয়ারপার্সনের রায় ঘোষণার পর গত কয়েকদিনে পুলিশি বাঁধায় পন্ড হয়েছে একাধিক কর্মসূচি।

(একে/এসপি/ফেব্রুয়ারি, ২৬, ২০১৮)