সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে চলছে হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি। প্রায়ই এমন চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় মানুষ। গত কয়েকদিনে উপজেলার রায়গঞ্জ পৌরসভার ধানগড়া বাজার ও চান্দাইকোনা ইউনিয়নের চান্দাইকোনা হাটবাজারে খোঁজ নিয়ে ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের কাছে হাতির চাঁদাবাজির কথা জানা যায়।

ধানগড়া বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন, গতকাল সকাল থেকেই বাজারের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের মোড় পর্যন্ত প্রতিটি দোকানে দুজন মিলে একটি বড় হাতি ও একটি ছোট হাতি নিয়ে হানা দেন। দোকানপ্রতি কমপক্ষে ১০ টাকা করে আদায় করা হয়। হাতি নিয়ে দোকানের সামনে এসে তারা দাঁড়ান, টাকা না দেওয়া পর্যন্ত সেখান থেকে হাতি সরানো হচ্ছে না।

এভাবে টাকা আদায়ের কারণে বিক্রিতেও সমস্যা হচ্ছে। ধানগড়া বাজারের ব্যবসায়ী মেহেদি হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাঝে মাঝেই বিভিন্ন এলাকা থেকে হাতি নিয়ে এসে চাঁদা আদায় করা হয়। বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। গতকাল বিকেলে উপজেলার চান্দাইকোনা হাটবাজারে গিয়ে দেখা যায়, বড় হাতির পিঠে বসে একজন হাতিটিকে পরিচালনা করছেন।

তাঁর এই কাজে সহযোগিতা করছেন তাঁরই এক সহযোগী। প্রতিটি দোকান থেকে হাতি দিয়ে টাকা তোলা হয়। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত দোকান থেকে হাতি সরানো হয় না। বাজারের দুই ব্যবসায়ী বলেন, প্রায় প্রতিদিনই অনেক খাতে টাকা দিতে হয়। বর্তমানে হাতিকেও দিতে হচ্ছে। বিষয়টি খুবই পীড়াদায়ক। হাতি পরিচালনাকারী একজন (মাহুত) বলেন, একটি বড় ও একটি বাচ্চা হাতি নিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে খাবারের জন্য কিছু টাকা নেওয়া হয়।

তবে টাকা নেওয়ার সময় কাউকে জোর করা হয় না। লোকজন স্বেচ্ছায় যা দেয়, তা–ই নেওয়া হয়। স্থানীয় প্রকৃতি ও পরিবেশবিষয়ক সংগঠন স্বাধীন জীবনের নির্বাহী পরিচালক আবদুর রাজ্জাক বলেন, বনের পশু পালনের জন্য নির্দিষ্ট আইন আছে। সার্কাস দলে পালনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। তবে বন্য এসব পশুর যাবতীয় দায়িত্ব মালিকের। এভাবে টাকা আদায়ের কোনো সুযোগ নেই।

বড় হাতি অথবা বাচ্চা হাতি দিয়ে এভাবে টাকা আদায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল আখতার মুঠোফোনে বলেন, এভাবে বন্য পশু দিয়ে টাকা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এমএএম/এসপি/মার্চ ০৬, ২০১৮)