নাগরপু (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার চরাঞ্চলে এক সময় চাষ হতো তামাকের। এখন চাষীরা তামাক চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ঝুকছে টমেটো চাষের দিকে। টমেটো শীতকালীন সবজি হলেও এখন বসন্ত কালে প্রচুর টমেটো উৎপাদিত হচ্ছে নাগরপুরের চরাঞ্চলে।

উপজেলা কৃষি অফিসসূত্রে জানা যায়, টমেটো সোলানেসি পরিবারের লাইকোপার্সিকগনের অন্তর্ভুক্ত কোমল ও রসালো সবজি । আমাদেও দেশে টমেটোকে বিলাতী বেগুনও বলা হয়। এতে প্রচুর পরিমানে আমিষ,ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-এ, এবং ভিটামিন-সি রয়েছে। টমেটোতে লাইকোপেন নামে বিশেষ উপাদান রয়েছে বলে এটা ফুসফুস, পাকস্থলী, অগ্নাশয়, কোলন, স্তন, মূত্রাশয়, প্রোষ্টেট সহ ইত্যাদি অঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।

টমাটো একটি অর্থকরী ফসল। শুধু সবজি নয় সালাদ ও সস তৈরিতেও টমেটো ব্যবহৃত হয়ে থাকে। উপজেলার মোকনা ইউনিয়নের বেটুয়াজানী গ্রামের সফল চাষী পাগলা। তার মতই আরো করিম শেখ, সবুর মিয়া,মোতাসিমসহ আরো অনেকে।

টমেটো ছাড়াও ফুলকপি, বাধাঁকপি, লাউ, বেগুনসহ নানা রকমের শীত ও গ্রীষ্মকালীন সবজির চাষ করছেন নাগরপুরের চাষীরা। চাষী পাগলা বলেন আমরা এক সময় ধলেশ্বরী নদীর চরাঞ্চলে তামাক চাষ করতাম। কিন্তও এখন উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ও পরামর্শে আমরা বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছি।এর মধ্যে আমরা প্রতি বছর টমেটোর বাম্পার ফলন পেয়ে থাকি। ফলনের প্রথম দিকে টমেটোর ভালো দাম পেলেও এখন টমেটোর দাম প্রতিকেজি ৫-৭ টাকায় নেমে গেছে। যা আমাদের জন্য লাভজনক নয়। তিনি আরো বলেন টমেটো বা সবজি রাখার জন্য কোন সবজি সংরক্ষনাগার থাকতো তা হলে আমাদের টমেটো পচে নষ্ট হতোনা। এবং আমরা আরো ভালো দাম পেতাম।

চাষী পাগলা জানান, বিভিন্ন বীজ কোম্পানির পরামর্শ ও উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায়, প্রশিক্ষন ও প্রযুক্তি নিয়ে তারা জৈব সার ও সেক্সফোরমেন ট্র্যাপ ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছেন।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে কয়েক একর জমিতে টমেটো ও সবজি চাষ করছেন। কিন্তু এবার ফলন ভালো হলেও টমেটোর ভাল দাম তারা পাচ্ছেননা। তাই চাষীদের লোকাসান ঠেকাতে ও বেশী উৎপাদনের জন্য তার দাবী এলাকায় একটি সবজি সংরক্ষনাগারের।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিএম রাশেদুল আলম জানান, এক সময় এ অঞ্চলের চাষীরা তামাকের চাষ করতো কিন্তু আমরা তাদেরকে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছি। এখন এলাকায় টমেটোর পাশাপাশি প্রচুর শীত ও গ্রীষ্মকালীন সবজির চাষ হচ্ছে।

(আরএসআর/এসপি/মার্চ ০৮, ২০১৮)