চাঁদপুর প্রতিনিধি : চাঁদপুর ও চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচলকারী আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনের মাঝামাঝি স্থানে থাকা পাওয়ার কারে ইঞ্জিনে ওভার হিট ও শটসার্কিটের ফলে জেনারেটরে আগুন লেগে যায়। এতে করে অল্পের জন্য রক্ষা পেলো শত শত যাত্রীর প্রাণ। অগ্নিকাণ্ডে ট্রেনের প্রায় অর্ধকোটি টাকা ক্ষতিসাধিত হয়েছে বলে চাঁদপুরের কর্মরত কর্মকর্তারা জানান।

চাঁদপুর রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ, ক্যারেজ বিভাগ ট্রেনের দায়িত্বে থাকা ইলেকট্রিক ফিটার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, চাঁদপুর-চট্টগ্রামের চলাচলকারী আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চাঁদপুর স্টেশনে পৌঁছার ৫ মিনিটের মধ্যে ট্রেনের ১৭টি বগির মধ্যে মাঝামাঝি স্থানে পাওয়ার কারের বগিতে ওভার হিটের কারণে জেনারেটর থেকে আগুন লেগে যায়। মুহূর্তের মধ্যে ট্রেনের বগিটির ভেতর আগুনের লেলিহান শিখা ছড়াতে থাকে। এরই মধ্যে ট্রেনের খাওয়ার বগির আবুল হাশেম মিয়া নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আবুল কালাম, ক্যারেজ স্টাফ জুয়েল পাটওয়ারী ও রেলওয়ে পুলিশসহ ২০/২৫ জন ট্রেনে থাকা ১২টি অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের সাহায্যে গ্যাস ছিটিয়ে আগুন তাৎক্ষণিক নেভাতে সক্ষম হয়। এতে করে আগুন ছড়াতে না পারায় পাওয়ার কারসহ ১৭টি বগি রক্ষা পেয়েছে। তা না হলে ট্রেনের বগিগুলো পুড়ে বড় ধরনের ক্ষতিসাধন হতো। তবে ট্রেনের যাত্রীরা ৫ মিনিট পূর্বে না নেমে গেলে বগিতে আর বগিতে আগুন ছড়িয়ে পরলে অনেক যাত্রীর প্রাণহানি ঘটতো।

ঘটনার ২০ মিনিট পরে চাঁদপুর স্টেশনে আগুন লাগা ট্রেনে উপস্থিত হন চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ফারুক আহমেদসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৬ জন কর্মী। ততক্ষণে আগুন নিভিয়ে ফেলে ট্রেনের স্টাফরা। পাওয়ার কারে থাকা ২য় ড্রাইভার আঃ করিম ইলেক্ট্রিক ফিটার গ্রেড-২ জানান, আগুন লাগার সময় আমি পাওয়ার কারে ছিলাম। ইঞ্জিন ওভার হিটের কারণে পাওয়ার কারের অ্যাডভেস্টোটের কাপড়ে আগুন লেগে যায়।

চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ফারুক আহমেদ জানান, আমরা আসার পূর্বেই রেলওয়ে স্টাফরা আগুন নিভিয়ে ফেলে। তবে পাওয়ার কারে পরিদর্শনকালে দেখা যায় ওভার হিটের কারণে জেনারেটরে আগুন লেগে এ ঘটনা ঘটেছে।

চাঁদপুর রেলওয়ের টিএক্সআর আবুল কাশেম জানান, পাওয়ার কারে জেনারেটরে শটসার্কিট থেকে অগ্নিকা-ের সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষণিক রেলওয়ে স্টাফরা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মাধ্যমে গ্যাস ছিটিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে।

চাঁদপুর রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা এসএসএই বিদ্যুৎ মোঃ বিল্লাল হোসেন জানান, আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেসের ৮৩৫৮ পাওয়ার কারের ইঞ্জিন সাইডে জেনারেটর সাইট ইঞ্জিনে অ্যাডভেস্টোটের কাপড়ে আগুন লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে করে পাওয়ার কারে জেনারেটরে আগুন লেগে গেলে কানেকশনের তার পুড়ে যায়। যার ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে রেলওয়ে অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ট্রেনটি চট্টগ্রামে যাওয়ার পর তদন্ত কমিটি তদন্ত করে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করবে বলে তিনি জানান।

সর্বশেষ ফোরম্যান বিল্লাল জানিয়েছেন, এই অগ্নিকাণ্ডে ট্রেনের ইঞ্জিনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সেজন্যে চাঁদপুর থেকে ট্রেনটি সকালে চট্টগ্রাম যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

(ইউএইচ/এসপি/মার্চ ০৯, ২০১৮)