স্টাফ রিপোর্টার : যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করছে, তারাই দেশে জঙ্গিবাদ ছড়াচ্ছে এমন অভিযোগ করেছেন অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধনে অংশ নেয়া বক্তারা। শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গিবাদ নির্মূল মঞ্চের মানববন্ধনে বক্তারা এ কথা বলেন।

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও প্রগতিশীল লেখক ড. জাফর ইকবালের উপর জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। বক্তারা বলেন, এদের বিরুদ্ধে এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে। জঙ্গিবাদের মদদদাতা, সহায়তাকারী ও নেপথ্যে থাকা গডফাদারদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলেই দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব হবে।

মানবন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট শাহানা রব্বানী। তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাছাড়া দিয়ে উঠার সুযোগ পেয়েছে। বাংলাদেশে দশ ট্রাক অবৈধ অস্ত্র সে দলটির নেতৃত্বেই এসেছিল। তারা এ দেশের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না। পরাজিত এ শক্তি দেশের সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট করতে এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তারা আগুন সন্ত্রাস দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। আর এখন জঙ্গিদের দিয়ে দেশের প্রগতিশীল ও মুক্তমনা মানুষগুলোকে শেষ করে দিতে চাইছে। তাদের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর ভূমিকা রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আজ ড. জাফর ইকবাল হামলার শিকার হয়েছেন, কাল হয়তো আরও একজন বুদ্ধিজীবীর উপর এ হামলা চালানোর পরিকল্পনা তারা আঁকছে। তাদের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গিবাদ মুক্ত করতে হবে। যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গিবাদ নির্মূল মঞ্চের সভাপতি আলী হোসেন বলেন, এ দেশে জঙ্গিবাদ ছড়াচ্ছে কারা সেটা আমরা সবাই জানি। আমাদের চারপাশে তারা মুখোশ পরে ঘুরছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকারদের আমরা যেভাবে চিহ্নিত করেছিলাম, তেমনি জঙ্গীবাদের মদদদাতা, সহায়তাকারী ও গডফাদারদের এখনই চিহ্নিত করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে এদেশকে তারা পাকিস্তান বানানোর পাঁয়তারা কোনোভাবেই বন্ধ করবে না।

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমরা দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূলের আন্দোলনে নেমেছি। এ আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। আমাদের আন্দোলনের স্রোতেই জঙ্গিরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হবে। বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ মুক্ত না করে আমরা ঘরে ফিরব না। মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গিবাদ নির্মূল মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক শিহাব রানা আশরাফুল, শেখ রুবায়েত ইসলাম প্রমুখ। মানববন্ধনে মুক্তমনা, সাংবাদিক, পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় পাঁচশ’ মানুষ অংশ নেয়। রাজধানী বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এ মানবন্ধনে যোগ দেয়।

(ওএস/এসপি/মার্চ ১০, ২০১৮)