পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি : বরগুনার পাথরঘাটায় বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে একটি প্রাথমকি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মার-ধরের ঘটনা ঘটছে। এঘনায় পাথরঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি জরুরী সভায় উল্লেখিত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও সঠিক বিচার দাবি করেছেন। 

ভুক্তভুগী প্রধান শিক্ষক ও প্রতক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে উপজেলার ৬নং কাকচিড়া ইউনিয়নের ১১৮ নং মধ্য জালিয়াঘাটা সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিরোদ চন্দ্র শীল এর সাথে দীর্ঘ যাবৎ অশোভন আচারণ করে আসছিল উক্ত বিদ্যালয়ের জমি দাতা মৃতঃ আঃ লতিফ কাজীর ছেলে স্থানীয় কাজী শাহিন শাহনেওয়াজ। কাজী শাহিন শাহনেওয়াজ প্রায়ই বিদ্যালয়ের রুম ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা ছাড়াও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে তার কথামতো চলতে বাধ্য করে আসছিল।

৭মার্চ পূর্বের মতো বিদ্যালয়ের একটি রুম শাহিন ব্যবহার করতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিরোদ চন্দ্র শীল শাহিনকে বিদ্যালয়ের রুম দিতে অস্বীকার করে বলেন বিদ্যালয়ের কোন রুম খালি নাই, বরং রুম কম থাকায় এক রুমে দুটি ক্লাস নিতে হচ্ছে। শাহিন এতে ক্ষুদ্ধ হতে থাকে এক পর্যায় পরের দিন ৮মার্চ দুপুর আড়াইটারি দিকে সে বিদ্যালয় প্রবেশ করে সহকারী শিক্ষকদের সামনে প্রধান শিক্ষক নিরোদ চন্দ্র শীলকে লাথি ও চড় থাপ্পড় মারতে থাকে। এসময়ে সহকারী শিক্ষকরা প্রতিবাদ করলে শাহিন কঠর হুশীয়ারি দিয়ে বলে এখানে চাকুরী করতে হলে তার কথার অবাধ্য হওয়া যাবে না।

এ ব্যাপারে প্রতক্ষদর্শী উক্ত বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. সামসুল হক ও বিমল বেপারী বলেন ৮মার্চ দুপুরে আকস্মিক ভাবে শাহিন বিদ্যালয় প্রবেশ করে তাদের সামনেই প্রধান শিক্ষক নিরোদ চন্দ্র শীলকে লাথি ও চড় থাপ্পড় মারতে থাকে, তারা প্রতিবাদ করলে শাহিন প্রধান শিক্ষক নিরোদ চন্দ্র শীলকে ছেড়ে দিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালা-গালি করে চলে যায়। এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক নিরোদ চন্দ্র শীল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন আমি শাহিনের কথামতো না চলায় শাহিন আমার বিদ্যালয়ে ঢুকে আমাকে সকল শিক্ষকের সামনে লাথি ও চড় থাপ্পড় মারে।

তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন যাবৎ শাহিন আমাকে বলে আসছে যে এই বিদ্যালয় তার বাবার জমিতে তাই এখানে চাকরী করতে হলে শিক্ষা অফিসের কথা নয়, তার কথা মতো চলতে হবে। নিরোদ চন্দ্র শীল বলেন বাবা ‘আমি হিন্দু এটাই কি আমার অপরাধ’ আমি ৩৭ বছর যাবৎ চাকরী করি আমার অনেক ছাত্র/ছাত্রী দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাল চাকরী করে আজ আমি এই বৃদ্দ বয়সে সবার সামনে মারখাব?

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাহিন মুঠোফোনে জানান, একটি রুম চেয়েছিলাম প্রধান শিক্ষক নিরোদের কাছে সে রুম দেয়নি। আর শিক্ষককে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে।

এ ব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ছগির হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলে,ন একজন বয়স্ক প্রধান শিক্ষককে মার-ধরের ঘটনা খুবই দুঃখজনক আমরা এ ব্যাপারে জরুরী সভা ডেকে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিষয়টি স্থানীয় এমপি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি তাদের বিচার করার অপেক্ষায় আছি। ভবিষ্যতে বিষয়টি নিয়ে আমরা কঠর আন্দোলনে নামতে পারি।

(এটি/এসপি/মার্চ ১০, ২০১৮)