সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি : উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ভাড়ারিয়া গ্রামের গনেশ মন্ডলের পৈত্রিক বাড়ি জালদলিল করে জালিয়াতির মাধ্যমে দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূয়া দলিলের মাধ্যমে আপন বড় ভাই ছোট ভাইয়ের ভাড়ারিয়া মৌজার ৪৩৪ ও ৪৩৫ নং দাগের ৭.২৫ শতাংশ জমি দখলের চেষ্টা করে। 

এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, উপজেলার রাজানগর ইউপি ভাড়ারিয়া গ্রামের মৃত বাসুদেব মন্ডলের দুই ছেলে ১। গৌরাঙ্গ চন্দ্র মন্ডল ২। গনেশ চন্দ্র মন্ডল। রাজনগর ভারারিয়া মৌজায় ৪৫৫ ও ৪৫৬ নং দাগে ১৪.৫ শতাংশ জায়গায় আর এস ৪৫৫ ও ৪৫৬ নং দাগে ৭.২৫ শতাংশ জমি গনেশ মন্ডল নিয়ে ১৫ বছর যাবত ভোগদখল করে বসবাস করে আসছেন। গনেশ মন্ডলের আপন বড় ভাই গৌরাঙ্গ মন্ডল জাল দলিল তৈরী করে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে গনেশ মন্ডলকে বেদখল করার পায়তারা করছেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পৈত্তিক ওয়ারিশ প্রাপ্ত গনেশ মন্ডল ও তার পরিবার এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের অবগত করেন।

গনেশ মন্ডল এ বিষয়টি স্থানীয় ভাবে জানালে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে গৌরাঙ্গ মন্ডল। তার পর থেকে গৌরাঙ্গ মন্ডল তার ছেলেরা লোকজন নিয়ে জোর পূর্বক বসবাস করা বিল্ডিংসহ ভিটি বাড়ি দখলের পায়তারা করে আসছে। পরিবার পরিজন নিয়ে একমাত্র বাসস্থান ভিটি বাড়ি রক্ষার্থে অনড় অবস্থান নেয় গনেশ মন্ডল। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গৌরাঙ্গ মন্ডল ও তার বাহিনী। প্রতিনিয়ত গনেশ মন্ডলের পরিবারকে ভয়ভীতি হুমকি দমকিসহ বিভিন্ন ভাবে উক্তাক্ত করে আসছে গৌরাঙ্গ মন্ডল ও তার ছেলেরা এ ঘটনায় ওই গনেশ মন্ডল মুন্সীগঞ্জ আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা করেন যার নং ১১২/২০১৭ এবং বিভিন্ন দপ্তর ও স্থানীয় প্রেসক্লাবে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

গনেশ মন্ডল বলেন, আমার বড় ভাই আমার বাবা বাসুদে মন্ডলের মৃত্যুর পরে কোন এক সময় ১৯৮৪ সালের নিবন্ধন করা মুকুল মন্ডলের নামে নকল ও ভূয়া দলিল প্রদর্শন করেন যা পুংঙ্খানু পুংঙ্খ্যভাবে পর্যবেক্ষন করলে জালদলিল হিসেবে গণ্য হবে। আমার বাবার মৃত্যুর পরে আমি আমার পিতার সন্তান হিসেবে ওয়ারিশ সনদ দেখায়ে আমার ভাগের ৭.২৫ শতাংশ জায়গার আমার নামে নাম জারি এবং বিগত দিনের ২৬ বছরের সরকারের পাওনা খাজনা পরিশোধ করি।

এ ব্যাপারে রাজানগর ভারারিয়া গ্রামের মৃত মরন বেপারীরর ছেলে আব্দুল খালেক,যাদব চক্রবর্তীর ছেলে নিখিল চক্রবর্তী,সাইজদ্দিনের ছেলে দেলোয়ার জানান, গনেশ মন্ডল পৈত্রিক সূত্রে ওই জায়গার মালিক,তাই সে তার বাড়ির ৭.২৫ শতাংশ জায়গার মধ্যে বিল্ডিং তৈরী করেছেন, বিল্ডিং তৈরীর সময় গৌরাঙ্গ মন্ডল ও তার ছেলেরা ওই জায়গার মালিক থাকলে বাধা প্রদান করতো। কিন্তু তারা কোন বাধা প্রদান করেন নাই।

গনেশ মন্ডলের মেয়ে তৃষ্ণা মন্ডল বলেন, যে দলিলটি দেখিয়ে জমি দাবি করা হচ্ছে, সেই দলিল মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজধিখান উপজেলায় ১৯৮৪ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর নিবন্ধন করা হয় অথচ মুকুল চন্দ্র মন্ডলের জন্ম আইডি কার্ড অনুযায়ী ১৯৯৩ সালে। এমনকি আমার দাদা সম্পাত্তির প্রকৃত মালিক বাসুদেব মন্ডল ১৯৮৪ সালে জীবিত থাকার পরের কিভাবে সে মকুল মন্ডলের জন্মের পূর্বে এই দলি সম্পাদন করলো ।

রাজানগর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য আউয়াল মোল্লা বলেন, গৌরাঙ্গ মন্ডল ও গনেশ মন্ডল দুই ভাই বাড়িরর জায়গা নিয়ে ঝঘড়া ঝাটি করলের আমরা বেশ কয়েক বার গ্রাম্য শালিশে মিমাংশা করে দিয়েছি। পৈত্রিক জায়গাই গনেশ মন্ডল বসবাস করছে এবং বিল্ডিং তোলেছে এখন শুনছি গৌরাঙ্গ মন্ডল ও তার ছেলেরা ওই জায়গার মালিক বলে দাবি করছে। কত সালে কিভাবে তারা মালিক হলো সেটা জানতে হবে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গৌরাঙ্গ মন্ডল বলেন, এই সম্পত্তি আমার বাবা আমাকে ও আমার বড় ছেলেকে লিখে দিয়ে গেছেন। এই সম্পতি শ্রীনগর উপজেলায় রেজিট্রি হয়েছে। আমারা আমার ভাইকে আমাদের জায়গায় বিল্ডিং তুলতে দিয়েছি শুধু। এই সম্পত্তির মালিক আমরা।

(এসডিআর/এসপি/মার্চ ১১, ২০১৮)