রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল জেলার যমুনা নদী বিধৌত চরাঞ্চলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অধিক জমিতে বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বাজার দর ভাল পাওয়ায় নদী ভাঙ্গন ও বন্যা কবলিত এসব চরাঞ্চলে অবহেলিত কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক। 

নদী ভাঙ্গন ও বন্যা কবলিত এসব চরাঞ্চলের মধ্যে ভূঞাপুর উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নের চরভরুয়া, চরতারাই, বলরামপুর, কুঠিবয়ড়া, রামাইল, বাসিদকল, গাবসারা ইউনিয়নের রুলিপাড়া, গোবিন্দপুর, রামপুর, রায়ের বাসালিয়া এবং ডিগ্রী চর অঞ্চলে বাদাম চাষীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

বেলে মাটিতে বাদাম চাষ অত্যন্ত উপযোগী হওয়ায় করালগ্রাসী যমুনার পানি কমে গিয়ে চর জেগে উঠতে শুরু করলেই চৈত্র-কার্তিক মাসেই চরাঞ্চলের কৃষকগণ তাদের বেলে মাটি জমিতে বাদামের বীজ বপন সহ চাষ শুরু করে। ২ থেকে আড়াই মাসের মধ্যেই কৃষক বাদাম তুলতে শুরু করে।

সোনামুই গ্রামের চাষী আকবর আলী জানান, বাদাম আবাদে অন্যান্য ফসলের চেয়ে খরচ একদম কম। বাদাম সুস্বাদু ও মুখরোচক খাবার হওয়ায় এর চাহিদা সবসময় থাকে। বাজারেও দাম ভাল। তাই শুধু আমরাই না এবার আশপাশের অনেক গ্রামের মানুষই বাদাম চাষ করেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলে চলতি মৌসুমে যমুনার চরে ২,১৩৬ হেক্টর জমিতে চিনাবাদাম চাষ হচ্ছে। বাদামের ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন বাদামের আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফারহানুল কবির জানান, বাদাম ভিটামিনযুক্ত হওয়ায় এর চাহিদা খুব বেশী। এ ফসল একদিকে খাদ্যের যোগান দিয়ে থাকে, অন্যদিকে ভোজ্য তেলের চাহিদাও পূরণ করে। বাদাম গাছের কচিপাতা কেটে কৃষকরা তাদের গবাদি পশুকে খাওয়ান, এটা গরুর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। চলতি বছরেও বাদামের ফলন ভাল। বাদাম আবাদে সার, শ্রমিক খরচ কম হওয়ায় কৃষকেরা বাদামের আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। গোপালপুর ও ভূঞাপুর উপজেলায় প্রায় ১ হাজার কৃষক লাভের মুখ দেখবেন। চলতি মৌসুমে বাদামের বাম্পার ফলন বিগত সালের লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাবে।

(আরকেপি/এসপি/মার্চ ১২, ২০১৮)