চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার দুইটি রেলওয়ে স্টেশনের প্রায় শত কোটি টাকা মূল্যের ৭৭ একর জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা রেলের মূল্যবান এসব জমি দখল করে তার ওপর অবৈধভাবে গড়ে তুলছেন বহুতল দালান-কোঠা ও দোকানপাট । এ নিয়ে সংশ্লিষ্ঠ রেল বিভাগ রহস্যজনকভাবে নীরব ভূমিকা পালন করছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার উথলী ও আনছারবাড়িয়া রেলস্টেশন সংলগ্ন রেল বিভাগের প্রায় ৭৬ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে উথলী মৌজার ৩নং খতিয়ানের ৬৩ একর ৫৪ শতক, সেনেরহুদা মৌজার ৩নং খতিয়ানে ৩ একর ৫৬ শতক, মৃগমারী মৌজার ২নং খতিয়ানে ৬ একর ৭৬ শতক ও কুমারীডাঙ্গা মৌজার ২নং খতিয়ানে ২ একর ১১ শতক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উথলী রেলওয়ে স্টেশনের এলাকার একজন জানান, সরকারি কঠোর বিধি-নিষেধ থাকা সত্বেও এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা স্টেশনের আশপাশের রেলওয়ের বিপুল পরিমাণ এসব জমি অবৈধভাবে দখল করে অর্ধশতেরও বেশি পাকা দোকান-ঘরসহ প্রায় ৩ শতাধিক স্থাপনা গড়ে তুলেছে। স্থানীয় দালাল চক্র বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশী ভূ-সম্পত্তি কার্যালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগ সাজসে উৎকোচ প্রদানের মাধ্যমে নামকাওয়াস্তে লীজ ও ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে এসব জমি দখল করছে এবং পরবর্তীতে অবৈধ দখলদাররা তাদের দখলীয় রেলওয়ের জমি অন্যত্র বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

রেলওয়ের জমিতে গুদাম-ঘর নির্মাণকারী এক ব্যক্তি বলেন, সম্প্রতি তিনি এলাকার প্রভাবশালী এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ শতক জমি ৫ লাখ টাকায় কিনেছেন।

তিনি আরও জানান, ওই প্রভাবশালী ব্যক্তির দখলে রেলওয়ের ১ একর জমি রয়েছে। রেল বিভাগের কর্মকর্তারা অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব দোকানপাট ও দালান-কোঠা স্থাপনকারীদের বিরদ্ধে প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করছেন না। এ কারণে দখলদাররা আইনের তোয়াক্কা না করে রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে নির্ভয়ে দোকানপাট ও দালান-কোঠা নির্মাণ করার সাহস পাচ্ছে।

এ ব্যাপারে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ডিইও ইউনুস আলী জানান, রেলের জমি বেদখলের পিছুনে রেল বিভাগের কেও জড়িত আছে কি-না তা আমার জানা নেই। রেলওয়ের জমি অবৈধ দখলের প্রমাণ পেলে অবৈধ দখলদার ও রেলের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

(টিটি/এসপি/মার্চ ১৩, ২০১৮)