শর্মিষ্ঠা সাহা

(স্থান-শহীদ মিনারের পাদদেশ। অনেকে বসে আছে জুতা পায়ে। অর্ক, নয়ন, মিম ও মিলনের প্রবেশ।)

মিম: দেখ সবাই,শহীদ মিনার
মিলন: So nice!
নয়ন: Let’s go.

( তিনজন দৌড়ে উপরে শহীদ মিনারের পাদদেশে উঠতে যায়।)
অর্ক: এই এই দাঁড়া সবাই, কি করছিস তোরা্?
নয়ন: (থমকে দাঁড়িয়ে) কেন শহীদ মিনারে যাচ্ছি।
অর্ক: তাই বলে জুতা পায়ে!
নয়ন: এরা সবাই তো জুতা পায়ে বসে আছে ।
অর্ক: সবাই ভুল করলে তোরাও ভুল করবি? ওই সাইনবোর্ডে কি লেখা আছে বলতো?
মিলন: (মিমের দিকে তাকিয়ে) কি?
অর্ক: উ: কাকা যে কেন তোদের ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াচ্ছে। (মিমের দিকে) এই তুই বলত?
মিম:শহীদ মিনারে খালি পায়ে উঠুন।
অর্ক: হ্যাঁ বাংলা ভাষার জন্য যাঁরা নিজের জীবন দিয়েছে, তাদেরকে সম্মান জানানোর জন্য।
নয়ন: কিন্তু আজতো ২১শে ফেব্রুয়ারি না। I mean it’s not international mother language day.
মিলন: exactly.
অর্ক: শোন, ভাষা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরি এই শহীদ মিনার। ১৯৫২ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি বা্ংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়ার দাবীতে আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর গুলি চালায় পাকিস্তান পুলিশ। গুলিতে মারা যায় সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেক ছাত্র।
নয়ন: yes I know, 21st February has been declared as ‘International mother language day by UNSCO” to promote the preservation and protection of all languages. But what is the meaning of this monument?
অর্ক: মাঝে যে বড় স্তম্ভ – ওটা মা, মাতৃভূমি এবং মাতৃভাষার প্রতিক। পাশে যে চারটি স্তম্ভ সেগুলো মায়ের সন্তান। মা তার সন্তানদের সাখে নিয়ে শহীদদের শ্র্দ্ধা জানাচ্ছে।
নয়ন: So interesting.
মিলন: We feel proud as a Bangali for this.
মিম: তোমরা বাংলায় বলনা প্লিজ।
নয়ন: ঠিক আছে বাংলায় বলছি। আমরা কি তবে জুতা খুলে যাব?
(মঞ্চের অপর দিক দিয়ে মিলনের বন্ধু শুভ ও তার বড় বোন কুমকুমের প্রবেশ।)
মিলন: ওই দেখ, আমার বন্ধু শুভ।
নয়ন: সাথে কে?
মিলন: মনে হয় ওর বড় বোন।
মিম: কিন্ত ওরা তো জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠে যাচ্ছে!
অর্ক: আরে তাইতো। (দৌড়ে ওদের দিকে যেতে যেতে) আরে আরে কি করছেন?
কুমকুম: কেন, কি করলাম? আরে অর্ক যে, তুমি এখানে?
অর্ক: হ্যাঁ আমি। ফাইনাল পরীক্ষা শেষ, স্কুল ছুটি – তাই কাকাতো ভাই-বোনদের নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়েছি।
কুমকুম: আমিও তাই, এটা আমার ছোট ভাই শুভ। (শুভকে মিলনের সাথে কথা বলতে দেখে) আরে তোরা দুজন বন্ধু নাকি?
শুভ: হ্যাঁ আমরা একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়ি।
কুমকুম: ও তাই নাকি! খুব ভাল, খুব ভাল। অর্ক আর আমি একই স্যারের কাছে অংক আর বিজ্ঞান প্রাইভেট পড়ি।
নয়ন: তাই বল, তোমরা নিশ্চয়ই প্লান করে আজ এখানে এসেছো? আগে বললে আমিও আমার বন্ধুকে আসতে বলতাম।
অর্ক: কি বলছিস তুই, আমিতো কিছুই জানতাম না।
শুভ: (গলা খাকারি দিয়ে) আসলে মিলন আমাকে ফোন করেছিল।
মিম: অ্যা, বল কি, তুমি?
মিলন: হ্যাঁ আমি, এতে তোদের কোন সমস্যা হয়েছে?
কুমকুম: আরে না না, ঠিক আছে। এখন বুঝলাম, হঠাৎ আজই কেন শুভর শহীদ মিনারে আসতে হল।
সবাই: হা:, হা: ..
নয়ন: এই, আমরা না শহীদ মিনারের কাছে যেতে চেয়েছিলাম?
কুমকুম: হ্যাঁ হ্যাঁ, চল সবাই..
(কুমকুম ও শুভ এগিয়ে যায়। অন্যরা জুতা খুলেতে শুরু করে।)
অর্ক: দাঁড়াও দাঁড়াও, জুতা পায়েই চলে যাচ্ছ যে?
কুমকুম: তো .. কি করব? (অন্যদের জুতা খোলা লক্ষ্য করে) মানে আজকে তো একুশে ফেব্রুয়ারি না।
অর্ক: ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা শুধুএকদিনের জন্য নয়। এ স্থানটা বাঙালির চেতনার সুত্র। এদের প্রতি শ্রদ্ধা সব সময়ের।
শুভ: একদম ঠিক কথা।
মিলন: We are showing respect to our language martyrs.
নয়ন: Yes, their sacrifice is so significant for us as a nation.
কুমকুম: বুঝলাম, চল আমরা সবাই জুতা খুলেই শহীদ মিনারে যাই।
অর্ক: অবশ্যই। তোদের মত দেশের সবাই যদি বুঝতে পারত, তবেই না আমরা সঠিকভাবে শহীদের শ্রদ্ধা জানাতে পারতাম। (উঠে গিয়ে) আয় আমরা গান ধরি।
সকলে: আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি। (নেপথ্যে মিউজিক বাজে)