বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : সিলেবাস ক্রয় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীদের। এতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ,অভিভাবকদের। আর প্রাথমিকের সব শিক্ষার্থীর সিলেবাচ কেনা বাধ্যতামূলক করার এ অভিযোগ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রিয়াজুল হকের বিরুদ্ধে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ২৩৪টি সরকারি, হাইস্কুল সংযুক্ত ৭টি ও ১০-১২টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এতে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট শিক্ষার্থী রয়েছে সংখ্যা ৪৫ হাজার ৯৮জন।

পৌর সদরসহ কয়েক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, শিক্ষার্থদের কাছে মাথাপিছু ৭-১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে সিলেবাস। প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা অনুযায়ি মাথাপিছু সাত টাকা হিসেবে আদায় করা হচ্ছে একত্রে। আদায়ের দায়িত্বে আছেন
সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা। আর আদায়কৃত ওই টাকা চলে যায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার হাতে।

কয়েক শিক্ষক জানান, বিগত বছর গুলোতে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি বিদ্যালয়ের জন্য একটি সিলেবাচ দেওয়া হত। আর তা দেখে শ্রেণি শিক্ষকরা ব্লাকবোর্ডে লিখে দিতেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা উঠিয়ে নিতেন। অনেক সময় অভিভাবকেরা তাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য ফটোকপি করে নিয়ে নিতেন ওই সিলেবাসটি। তাতে খরচও পড়তো কম। দুই থেকে তিন টাকার মতো খবর হতে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক বলেন, ‘প্রতি সিলেবাস তৈরিতে তিন টাকা ব্যয় হয়েছে। অথচ নিচ্ছে সাত টাকা। এর প্রতিবাদ করলেই হয়রানি হতে হয় বিভিন্ন অজুহাতে। এ কারণে মুখ খুলতে চায় না কেউ ।’

এ ব্যাপারে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ইউইও) মো. রিয়াজুল হক মোবাইলফোনে বলেন, ‘এটা ঠিক নয়, প্রিন্টিং কস্ট কিছু নিতে পারে।’ তবে কে বা কাহার প্রিন্টিং কস্ট নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একটা গাইড লাইনের মতো আছে। শিক্ষরা খরচ হিসেবে কিছু নিতে
পারে। ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে টাকা আদায়ের বিষয়টি সঠিক নয়।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) মো. শহিদুল ইসলাম মোবাইলফোনে (০১৭১৮২৮২৯৮৫) বলেন, ‘সিলেবাস বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে থাকে। তারা ওটা দেখে পাঠদান করবেন। শিক্ষার্থীরা হাতে নিতে চাইলে অতিরিক্ত ব্যাবস্থা। প্রাথমিকের ছোট ছোট ছাত্রছার্ত্রীদের বোর্ডে লিখে দিলে তা সঠিক ভাবে নিতে পারে না। প্রিন্ট করে দেওয়া ভাল উদ্যোগ হলেও মাথাপিছু সাত টাকা করে নেওয়া সঠিক নয়। বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।’

(এমএবি/এসপি/মার্চ ১৫, ২০১৮)