বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : নৈরাজ্য চলছে পটুয়াখালীর বাউফলের বগা ফেরিঘাটে টোল আদায়ে। সরকারি বিধি উপেক্ষা করে ওই ফেরিঘাটে তিন-চারগুন বেশি টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, বগা ফেরিঘাটের ৩০ মাসের ইজারা প্রদান করা হয় পটুয়াখালী জেলা স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ১৬ মার্চ থেকে ইজারা নেয় ১ কোটি ৯ লাখ ১৬ হাজার টাকায় পটুয়াখালীর মেসার্স আবির নিবির ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

সরকারি বিধি অনুযায়ী কন্টেইনার, ভারী যন্ত্রপাতি, ভারী মালামাল ও সরঞ্জাম পরিবহনে সক্ষম ট্রাক পারাপারে ১ শ’ ২৫ টাকা, তিন বা ততোধিক এক্সেলের ট্রাক, কাভার্ড ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, কন্টেনারবাহী ট্রাক, রেকার, ক্রেন এবং অন্যান্য আর্টিকুলেটেড যানবাহন পারাপারে ১শ’ টাকা, মিডিয়াম দুই এক্সেলের রিজিট ট্রাক ও বানিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত ট্রাকটর ট্রেইলর ৫০ টাকা, বড় বাস ৩১ আসন অথবা তদউর্ধ আসন বিশিষ্ট মটরযান পারাপার ৪৫ টাকা, মিনি ট্রাক, কৃষি কাজে ব্যবহৃ যান ৪০ টাকা, মিনি বাস, কোস্টার, মাইক্রো বাস ৩০ টাকা, ফোর হুইল চালিত যানবাহন ২৫ টাকা ও সিডান কার, ৩-৪ চাকার মোটরাইজড যান, মটর সাইকেল ১৫ টাকা, রিক্সা ভ্যান, রিক্সা, বাইসাইকেল ও ঠেলা গাড়ি ৫ টাকা করে পারাপারের জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তা মানছে না ইজারাদার প্রতিষ্ঠানটি।

সরকার নির্ধারিত টোলের চেয়ে ৩-৪ গুন বেশি টোল আদায় করছেন তারা। আবদুর রশিদ নামে ঢাকা মেট্রো-ট-১১-১৩৩৭ মালবাহি ট্রাকের ড্রাইভারের অভিযোগ, ঝালকাঠি থেকে মালামাল বোঝাই করে রবিবার দুপুরে ওই ফেরি পার হলে তার কাছ থেকে ৩শ’ টাকা নেয় ঘাট ইজারাদারের লোকজন। অথচ এর আগে এই নদীর চেয়ে অন্তত চার গুন বড় নদী পারাপাওে লেবুখালি ফেরিতে মাত্র ২শ’ টাকা নেওয়া হয় তার কাছ থেকে। পাশের উপজেলার দুমকি

গ্রামের আবদুল জলিল নামে এক টমটম চালকের অভিযোগ, প্রতিমাসে অন্তত ১২-১৪ বার মালামাল পরিবহনে বগা বন্দরে আসেন তিনি। বগা ফেরিঘাটে তার খালি গাড়ী থেকে ৫০ ও মালামাল বহনকালে ১শ টাকা টোল নেয়া হয়। এতে কোন রশিদও দেওয়া হয় না তাকে। আবুল হোসেন নামের বরিশালের এক মাইক্রোবাস চালকের অভিযোগ করেন, সকালে খালি গাড়ি নিয়ে (ঢাকা মেট্রো-চ-১৩ -০৭৭২) বগা ফেরি পার হলে ৫০ টাকা নেওয়া তার কাছ থেকে। লেবুখালী ফেরিতে পারাপারে সেখানে নেয় ৪০ টাকা।

রাসেল নামে তেলবাহি ছোট সাইজের এক লড়ীর (ঝালকাঠি-ড-৪০-০০-৮৫) ড্রাইভারের অভিযোগ, ওই ফেরিতে ১শ’ ৪০ টাকা নেওয়া হয় অথচ এর আগের লেবুখলী ফেরিতে তার কাছ থেকে নেওয়া হয় ১শ’ টাকা।

পাশের দুমকী উপজেলার গবরবদি এলাকার অটোচালক নুরুজ্জামানের অভিযোগ, আসার পথে ৪০ টাকা এবং ফেরার পথে ৭০ টাকা টোল নেওয়া হয় তার কাছ থেকে। তাকেও দেওয়া হয়নি কোন আদায় রশিদ।

অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ বাউফল-বগা-পটুয়াখালী ও বাউফল-বগা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী কয়েকজন
মটরবাইক চালকেরও।

এ ব্যাপারে বগা ফেরিঘাটের টোল আদায়কারী সঞ্জিব দাস বলেন, ‘আমরা নিয়ম মেনেই টোল আদায় করছি।’ তবে বিভিন্ন ধরণের যানবাহন পারাপারে সরকার নির্ধারিত টোলের সঙ্গে তাদের টোল আদায়ের কোন মিল আছে কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে কোন সদোত্তর দেন নি তিনি।

স্থানীয় কয়েকজন অতিরিক্ত টোল আদায়ের কারণে বাসের ভাড়া বেড়েছে, খেসারত গুনছেন এমন অভিযোগ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনাও করেছেন।

(এমএবি/এসপি/মার্চ ১৮, ২০১৮)