আন্তর্জাতিক ডেস্ক  : ভারতের রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন বিজেপিবিরোধী একটা ঐক্য গড়ে উঠছে দ্রুতই, উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচনে একজোট হয়ে যা দেখিয়েছে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী এবং মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি।

আর এবার বিরোধী জোট গড়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তবে তা কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে। মমতা অবশ্য পাশে পেয়েছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওকে।

সোমবার পশ্চিমবঙ্গ মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় নবান্নে দুই মুখ্যমন্ত্রীর দু’ঘণ্টা বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে চন্দ্রশেখর বলেন, ‘বিজেপির উপর রাগ হলে কংগ্রেস এসে যাবে। তাতে কী লাভ হবে? কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয়েরই প্রশাসন দেশের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাই বিকল্প হলো মুক্তমনের নেতাদের নিয়ে ফেডারেল ফ্রন্ট। আমরা সেটাই চাইছি।’

মমতার বক্তব্য, ‘সব দলের একে অপরকে সম্মান করা উচিৎ। কিন্তু রাহুল গান্ধী আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। তারা তাদের কথা বলতেই পারেন। আমরা আমাদের কথা বলব। ভবিষ্যতে বোঝা যাবে।’

প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিকল্প বিরোধী জোট কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। তবে সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে মমতার যতটা ঘনিষ্ঠতা, বর্তমান কংগ্রেস সভাপতি রাহুলের সঙ্গে যে ততটা নয়, সেটা পরিষ্কার। দিন কয়েক আগে সানিয়ার ডাকা নৈশভোজে মমতা নিজে না গেলেও সংসদীয় নেতাদের পাঠিয়েছিলেন।

দুই মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে বিভিন্ন রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলোকে একজোট করে ফেডারেল ফ্রন্ট তৈরি করাই আপাতত মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ বলে প্রাথমিক কৌশল স্থির হয়েছে।

চন্দ্রশেখর বলেন, ‘একটা বিষয় স্পষ্ট করতে চাই, এটা একটা সূত্রপাত। ভবিষ্যতে আপনারা পুরো বিষয়টা জানতে পারবেন। খুব দ্রুত আমাদের বৃহত্তর মঞ্চ হবে। আমরা যে কর্মসূচি তৈরি করব তা বর্তমানে প্রথামাফিক যা দেখা যায়, তার থেকে আলাদা হবে। এটা হবে সাধারণ মানুষের কর্মসূচি। বিজেপি, কংগ্রেস, কেসিআর কোনও মডেলই হবে না।’

মমতার বক্তব্য, ‘আমরা ফেডেরাল ফ্রন্ট চাই। রাজ্যগুলি মজবুত হলে দেশও হবে। একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সকলের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাড়াহুড়ো নেই যে আজই সব করতে হবে। রাজনীতিতে সময় লাগে। পরিস্থিতি কখনও কখনও এমন হয় যে, সকলের কাছে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ আসে। তাতে ভালো হয়। সব দলের সঙ্গে আমরা ভালো সম্পর্ক বজায় রাখি। এর থেকে ভাল আর কী হয়!’

এ বৈঠককে অবশ্য ‘গুরুত্বহীন চমক’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রে স্থিতিশীল সরকার রয়েছে বলে আঞ্চলিক দলগুলো বাজার গরম করতে চাইছে।’ সূত্র: আনন্দবাজার।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২০, ২০১৮)