রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় রমজানে স্কুল বন্ধের সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে শিক্ষার নামে কোচিং বাণিজ্য করে একাধিক বিদ্যালয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। শিক্ষকদের ভয়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় টানা বর্ষণের মধ্যে বৃষ্টিতে ভিজে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অত্যন্ত কষ্ট করে শিক্ষার্থীরা স্কুল পাঠাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করে অভিভাবরকা। এতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে প্রথমিক চিকিৎসাও নিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

সরজমিনে রবিবার ও সোমবার উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সকল বিদ্যালয় চলছে পাঠদান। পৌর শহরের এলএম পাইল্ট উচ্চ বিদ্যালয়, লুধুয়া এমএম উচ্চ বিদ্যালয়, শামছুর নাহার উচ্চ বিদ্যালয়, রাখালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, বামনী আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়, হাদরগঞ্জ রোকেয়া হাসমতের নেছা বালিকা বিদ্যালয়, হামছাদি বিজয়নগর উচ্চ বিদ্যালয় ও কাজেরদিঘীরপাড় সমাজ কল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়সহ একাধিক বিদ্যালয় সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে রমজানে বিদ্যায়ল খোলা রেখে শিক্ষার নামে কোচিং বাণিজ্য করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসাতে বাধ্যতামূলক করেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের নিয়মিত এ পাঠদান চালাচ্ছেন। রমজানের শুরুতে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষর্থীরা স্কুল আসছেন। এতে অনেকেই জ্বরসহ বিভিন্ন রোগে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এছাড়াও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জনপ্রতি ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে কোচিংয়ের নামে অতিরিক্ত ৪’শ টাকা আদায়ের অভিযোগও পাওয়া গেছে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, কোন কারণে স্কুলে না আসলে হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত দেখিয়ে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে মুঠোফোনে তাদের চাপ দেয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের রোষানলের ভয়ে বাধ্য হয়ে তাদের অবৈধ নির্দেশ মেনে ইচ্ছার অমতে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে হচ্ছে। এজন্য শিক্ষকদের অতিরিক্তি ৪শ টাকাও দিতে হচ্ছে বলে জানান তারা।
এ ব্যপারে যোগাযোগ করা হলে লুধুয়া এমএম উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, স্কুলের শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের কোচিং কার্যক্রম চলছে। এজন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কিছু টাকা নেয়া হবে। সরকারি অনেক নির্দেশ থাকে সব মানা সম্ভব নয়। আপনি যেভাবে খুশি সেভাবে লেখেন আমি ক্লাস নিচ্ছি।
এদিকে পৌর শহরের এলএম পাইল্ট উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম বলেন, সরকারি বিধি মেনে স্কুল বন্ধ করা হয়েছে। রমজানে স্কুলে কোচিং কার্যক্রম চলছে। বিদ্যালয়ে কোচিং এরজন্য কোন বাধা নেই। এজন্য ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ২ থেকে ৩ শত টাকা আদায় করা হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর কোনো প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে বিদ্যালয়ে ক্লাস বা কোচিং করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এরপরও যদি কোনো বিদ্যালয় খোলা রেখে ক্লাসের নামে কোচিং করা হলে খোঁজখবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আলম বলেন, রমজানে সরকারিভাবে সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে কোচিং করে বা অতিরিক্ত টাকা নেয় তাহলে তদন্ত করে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এমআরএস/এএস/জুলাই ০৮, ২০১৪)