বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : জমি সংক্রান্ত বিরোধে পটুয়াখালীর বাউফলে রাসেল (২৫) নামে পিটিয়ে খুন করা করা হয়েছে এক যুবককে। আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের গুলিঠামৌজ গ্রামের ওই যুবক শুক্রবার রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এ ঘটনায় কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়েছে আরো ৯ জনকে। এদের মধ্যে ৩ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) ও ২ জনকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, এ ঘটনায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গভীর রাতে নিজেদের বসতঘরে আগুন
লাগিয়ে পালিয়ে যাওয়ার।

স্থানীয়রা জানায়, কয়েক বছর আগে থেকে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল গুলিঠামৌজ গ্রামের হানিফ মোল্লার সঙ্গে প্রতিবেশি শহিদুল ইসলামের। ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে কয়েকদিন আগে জোরপূর্বক একটি দোকান ঘর নির্মাণ করেন শহিদুল।

শুক্রবার সকালে এ বিষয়ে স্থানীয় আবুল কালাম সিকদারের সঙ্গে কথা বলছিলেন হানিফ। এসময় অদূরে থাকা শহিদুল (৪৫) ও তার ছোট ভাই ফিরোজের (২৫) নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল লোহার রড, শাবল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় হানিফের ওপর। বড় ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয় রাসেলকে। জ্ঞান হারায় সে। খবর পেয়ে স্ত্রী লালমোন বেগম (২২) ও মা আনোয়ারা বেগমসহ (৭০) স্বজনরা এগিয়ে আসলে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়
তাদের কয়েকজনকেও।

উদ্ধার করে আহত রাসেল, হানিফ, লালমোন, আনোয়ারা, সাহিদা বেগম, আসাদুল হককে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয। অবস্থায় গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাসেল, সাহিদা ও হানিফকে সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসাপাতলে পাঠানো হয়। রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাসেল।

ওই রাতে রাসেলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দ্বিতীয় দফায় চার-পাঁচজন লাঠিসোঁটা নিয়ে হানিফের ঘরে ঢুকে জয়ফুন নেছাসহ (৬০) অন্তঃসত্ত্বা দুই নারী রাশিদা বেগম (২৫) ও খাদিজা বেগমকে (১৯) মারধর করা হয়।

রাশিদা বেগম জানান, মারধর করে রাসেলের মৃত্যুর ঘটনায় বাড়াবাড়ি না করার জন্য শাসিয়ে যায় তাদেরকে। তিনি অভিযোগ করেন, ‘ফাঁসানোর জন্য ফিরোজ তার নিজ বসতঘরের মালামাল সরিয়ে নিয়ে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়।’

এ ব্যাপারে যোগাযোগের চেস্টায় শহিদুল ইসলাম ও তার ছোট ভাই ফিরোজের মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়িতে তাদের বসতঘরও রয়েছে তালাবন্ধ। তবে হানিফ মোল্লার স্বজনরা ফিরোজের ঘরে আগুন লাগিয়েছে এমন দাবি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদের এক স্বজনের।

এ ব্যাপারে বাউফল থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের স্বজরা লাশের সঙ্গে বরিশালে। এ কারণে এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ’

(এমএবি/এসপি/মার্চ ২৪, ২০১৮)