সন্ত্রসী হামলায় বাউফলে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান পন্ড
বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : সন্ত্রসী হামলায় পন্ড হয়েছে পটুয়াখালীর বাউফলের নওমালা আ. রশিদ খান ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষারর্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান। এ সময় আহত হয়েছেন আ. রাজ্জাক নামে অফিস সহকারীসহ অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী। একাদ্বশ (বিজ্ঞান) শ্রেণির ছার্ত্রী মুন্নী আক্তার নামে আহত একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষক জানান, আজ রবিবার সকালে কলেজ মিলনায়নে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পূর্ব নির্ধারিত বিদায় সংবর্ধণা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। প্রায় ৭শ’ শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে সবেমাত্র অনুষ্ঠান শুরুর প্রাক্কালে মাইকে সভাপতি ও প্রধান
অতিথির নাম ঘোষণার মাধ্যমে অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে আসন গৃহন করছিলেন ঠিক সেই মুহুর্তে (সকাল ১১টার দিকে) ২০-২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এসময় আতঙ্কিত হয়ে সাধারন ছাত্রছাত্রীরা দিকবিদিক ছুটোছুটি করতে থাকলে পদদলিত হয়ে জ্ঞান হারায় একাদ্বশ শ্রেণির বিজ্ঞান গ্রুপের ছার্ত্রী মুন্নী আক্তার। আহত হন কলেজের অফিস সহকারী আব্দুর রাজ্জাকসহ অন্তত পাঁচজন। পন্ড হয়ে যায় অনুষ্ঠান।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কলেজের শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে এ ধরণের ন্যাক্কার জনক ঘটনা কঠোর বিচার হওয়া উচিৎ।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক পরীক্ষার্থী (এইচএসসি) জানায়, ‘অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নির্বাচন করাকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই অনুষ্ঠানে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আবু তাহের খান ও ওই ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান শাহজাদা হাওলাদারের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে কলেজের গভর্ণিংবডির
সভাপতি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট কামাল বিশ্বাসকে প্রধান অতিথি করার কারণে তাদের উপস্থিতিতে এক ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনায় ছাত্রছার্ত্রীসহ সবাই তাজ্জব হয়েছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘বর্তমান চেয়ারম্যান ও সাবেক চেয়ারম্যানের মধ্যে অনেক দিনের রাজনৈতিক গ্রুপিং আছে। তবে তা কলেজের শিক্ষকদের মাধ্যমে সংক্রামিত হয়ে ছাত্রছার্ত্রীদের এ ধরণের অনুষ্ঠানকে পন্ড করবে এটা ভাবা যায় না। কয়েক শিক্ষকের স্পস্ট রাজনৈতিক
কারণে সভার প্রধান অতিথি নির্বাচন করাকে নিয়ে এ ধরণের হামলার ঘটনা ঘটল।’
কোন প্রকার আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হবে না জানিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ (ভার) মো. অব্দুল মালেক বলেন, ‘আমি ভেতেরে স্টেজের কাছাকাছি ছিলাম। চেয়ার ছোড়াছুড়িসহ হট্রগোল শুরু হলে ঘটনাস্থলের কাছে থাকা পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করে।
খবর পেয়ে ওসি আরো পুলিশসহ ঘটনাস্থলে এসে ছিলেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। ওই ছাত্রীও সুস্থ্য আছে। আমার এক শিক্ষকের মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়ে তার হাসপাতাল ছাড়ার খবর পেয়িছ৷’
এ ব্যাপারে নওমালা ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাদা হাওলাদার বলেন, ‘কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আবু তাহের খানকে প্রধান অতিথী না করায় কলেজ ছাত্রলীগের ছেলেরা ক্ষুব্ধ হয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে।’
এ বিষয়ে নওমালা কলেজের গভর্নিংবডির সভাপতি কামাল বিশ্বাস বলেন, ‘পুলিশের সামনে কোনো ধরনের উস্কানি ছাড়াই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মশিউরের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। পুলিশের সামনে দা-ছোড়া প্রদর্শণ করে হামলা ভাংচুর চালিয়ে একটি ভীতিকর পরিবেশ তৈরী করা হয়।’
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
(এমএবি/এসপি/মার্চ ২৫, ২০১৮)