মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : মদনে গোবিন্দশ্রী ইউনিয়ননের পদমশ্রী মৌজায় ১ নং খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত ১৩০৭ দাগে কবরস্থানের জায়গা নিয়ে একই গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা চলছে। যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা বিরাজ করছে। 

এলাকাবাসী ও ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পদমশ্রী মৌজায় উল্লেখিত দাগে বহুকাল আগে থেকে একটি কবরস্থান বিদ্যমান রয়েছে। এলাকার একটি স্বচ্ছল পরিবার নিজে লাভবান হওয়ার আশায় ওই দাগের ২৫ শতাংশ ভূমি নিজেদের প্রকৃত অবস্থা গোপন করে ছোলেমা আক্তার ও স্বামী আরজু মিয়ার নামে সরকার কর্তৃক বন্দোবস্ত নেয়। এ খবর এলাকায় জানাজানি হলে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

পরবর্তীতে ইউনিয়ন ও উপজেলার নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে উপজেলা সদরে একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সাবেক গোবিন্দশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখারুল খান আজাদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়। সালিশ বৈঠকে উল্লেখিত এস এ দাগটি সর্ব সাধারনের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। উভয় পক্ষ এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। কিন্তু সম্প্রতি ছোলেমা আক্তার ও তার স্বামী আরজু মিয়ার লোকজন কবরস্থান থেকে কয়েকটি রেন্ট্রিগাছ কেটে নিয়ে যায়। এলাকাবাসী তাতে বাধা দিতে চাইলে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ও খুন জখমের হুমকি দেয়। বিষয়টি বর্তমান স্থানীয় ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমানকে অবগত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রতিদিনেই দুপক্ষের মধ্যে বাক বিতন্ডা চলছে।

কদমশ্রী গ্রামের বাসিন্দা আজ্জত আলী ও আলী আজগর জানান, সরকারী জায়গা বহুকাল আগে থেকেই আমাদের এলাকার সবাই মিলে এই স্থানে মৃতব্যাক্তি দাফন করে আসছি। আমাদের বাপ-দাদার অনেকের কবর সেখানে রয়েছে। এখন কেউ নিজের আর্থিক পরিচয় গোপন রেখে বন্দোবস্ত নিয়ে কবরস্থান দখল করতে চাইলে সেটি মেনে নেওয়া কষ্টকর। এর মাধ্যমে তারা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করার পায়তারা করছে। আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এই জমির বন্দোবস্ত বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।

গোবিন্দশ্রী ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমান জানান, এই মহিলা (ছোলেমা আক্তার) লোভী প্রকৃতির। এলাকার গন্যমাণ্য লোকজন সালিশ করে বিষয়টি সুরাহা করে দিয়েছেন। তাকে এই কবরস্থানে যেতে নিষেধ করা সত্বেও কবরস্থানের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের কথা শুনে না। বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানে দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

অভিযুক্ত ছেলেমা আক্তার ও তার স্বাামী আরজু মিয়া সালিশের রায়ে কবরস্থান উন্মুক্ত রাখার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার লোকজন কয়েকটি গাছ কেটেছে। তবে এখন থেকে আর সেখানে (কবরস্থানে) যাব না।

সলিশ বৈঠকে উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার খান এখলাছ জানান, ‘এই মহিলা খুবই দূর্ত। সে কখন কি করে বলা কঠিন। আমরা সিদ্ধান্ত দিয়েছিলাম কবরস্থানের জায়গা উন্মুক্ত থাকবে। কিন্তু এখন শুনলাম সে সালিশের সিদ্ধান্ত মানছে না।’

(এএমএ/এসপি/মার্চ ২৭, ২০১৮)