স্টাফ রিপোর্টার : সারা দেশের ১০টি শিক্ষা বোর্ডে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছেন। গত বছরের তুলনায় এ সংখ্যা এক লাখ ২৭ হাজার ৭৭১ জন বেশি। বৃদ্ধি হার ১০ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

তবে এবারের পরীক্ষায় ঝরে পড়েছেন দুই লাখ ৮৮ হাজার শিক্ষার্থী।

এবার সাধারণ আট বোর্ডে নিবন্ধন করেন ১০ লাখ ৭০ হাজার ৭০৫ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন আট লাখ ৩৮ হাজার ১৪ শিক্ষার্থী। নিবন্ধন করেও পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন না দুই লাখ ৩২ হাজার ৬৯১ শিক্ষার্থী। অর্থাৎ তারা ঝরে পড়েছেন।

মাদরাসা বোর্ডে নিবন্ধন করেন এক লাখ ১৬ হাজর ১৮২ শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ৭৯ হাজার ৮০২ জন। কারিগরি বোর্ডে নিবন্ধন করেন এক লাখ ১৬ হাজার ৮৯৯ শিক্ষার্থী। এ বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন এক লাখ পাঁচ হাজার ৯৫ শিক্ষার্থী।

সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে এবার নিবন্ধন করেও পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন না দুই লাখ ৮৮ হাজার শিক্ষার্থী।

বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের গ্রামের মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া অনেকে বিভিন্ন কাজকর্মে যুক্ত হচ্ছে। ফলে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। এটি প্রতিরোধ করতে আর কী কী করা যায় তা নিয়ে কাজ করা হবে।

এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ছেলেদের তুলনায় মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। ছেলেদের সংখ্যা ছয় লাখ ৯২ হাজার ৭৩০ এবং মেয়েদের সংখ্যা ছয় লাখ ১৮ হাজার ৭২৮ জন।

তিনি বলেন, এবার পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে প্রশ্ন সেট নির্ধারণ করে সব বোর্ডে অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে প্রতিটি কেন্দ্রে একাধিক প্রশ্নের সেট পৌঁছে দেয়া হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আজ থেকে কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলো। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বহাল থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি তদারকি করবে।

এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সারা দেশে মোট কেন্দ্রের সংখ্যা কমে গেছে। এবার মোট দুই হাজার ৫৪১ কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। যা গত বছরের তুলনায় ৪৪টি কম। এছাড়া বিদেশি সাতটি কেন্দ্রে ২৯৯ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন।

প্রতি বছরের মতো এবারও প্রতিবন্ধী ও বিশেষ চাহিদাপ্রাপ্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট বরাদ্দ থাকবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কেউ পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইলসহ কোনো ধরনের ডিভাইস সঙ্গে নিতে পারবেন না। যদি কারো কাছে এ ধরনের ডিভাইস পাওয়া যায় তবে তাৎক্ষণিক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে প্রশ্নে প্যাকেটে সিলগালাসহ সিকিউরিটি কোডের মাধ্যমে ডাবল প্যাকেটে কেন্দ্রে প্রশ্ন পাঠানো হবে।

প্রসঙ্গত, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা আগামী ২ এপ্রিল শুরু হবে। চলবে ১৩ মে পর্যন্ত। ১ এপ্রিল সরকারি ছুটি হওয়ায় একদিন পিছিয়ে পরীক্ষার রুটিন তৈরি করা হয়েছে।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২৮, ২০১৮)