রাজন্য রুহানি, জামালপুর : ইসলামপুরে মেয়াদত্তীর্ণ কীটনাশক (রিপকর্ড) ব্যবহারে দুই ইউনিয়নের প্রায় দু হাজার গাছের আম ঝরে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সদর ইউনিয়নের পচাবহলা বাজারের ভাই ভাই ট্রেডার্স থেকে এই কীটনাশক কিনে ব্যবহার করায় গাছ থেকে আম ঝরে যাচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।

ধর্মকুড়া শান্তিপাড়া গ্রামের দিনমজুর আবুল মিয়া অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় ডিলার ভাই ভাই ট্রেডার্স থেকে অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের কেমিক্যাল ডিভিশনের রিপকর্ড কীটনাশক কিনে আমগাছে ব্যবহার করা হয়। ব্যবহারের ফলে গাছের আম ঝরে পড়ছে।

নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের রামভদ্রা গ্রামে ভাই ভাই ট্রেডার্সের নিয়োজিত লোক কালু মিয়া কীটনাশক প্রয়োগ করতে গেলে মেয়াদত্তীর্ণ কীটনাশকসহ আটক করে এলাকাবাসী। খরব পেয়ে সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হানিফ উদ্দিন কীটনাশক প্রয়োগকারী কালুকে উদ্ধার করেন।

কীটনাশক প্রয়োগকারী কালু মিয়া বলেন, আমি লেখাপড়া জানি না। মানুষের গাছ ও ফসলি জমিতে বিষ দিয়ে সংসার চালাই। কোনো মেয়াদ-টেয়াদ বুঝি না। বচাবহলা বাজারের শহিদুরের দোকান থেকে বিষ কিনে মানুষের ফলগাছ ও ফসলে ক্ষেতে দেই। এই বছর ওই দোকান থেকে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকার রিপকর্ড কীটনাশক কিনে দুই ইউনিয়নের প্রায় দুই সহস্রাধিক আমগাছ ও ফসলি জমিতে দিয়েছি।

প্রয়োগকৃত কীটনাশকের মেয়াদ না থাকায় এলাকার সব গাছের আম ঝড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে পচাবহলা বাজারের ভাই ভাই ট্রেডার্স থেকে চার বোতল রিপকর্ড কীটনাশক কেনে এলাকাবাসী। বোতলে ২০১৬ ও ২০১৭ সাল পর্যন্ত মেয়াদ থাকলেও কলম দিয়ে তাতে ২০১৮ সাল লেখা হয়েছে।

সরেজমিনে পচাবহলা বাজারে গেলে ভুক্তভোগী আব্দুল হাকিম জানান, আমি প্রতি বছর ১৫-২০ মণ করে আম বিক্রি করি। এ বছর মেয়াদ ছাড়া কীটনাশক দেওয়ায় আমার গাছগুলোতে একটি আমও নেই। এ ছাড়া আবু তালেব, আব্দুস সামাদ, চান মিস্ত্রি ও মমতাজ আলী অভিযোগ করেন, এলাকার দুই সহস্রাধিক গাছে মেয়াদত্তীর্ণ কীটনাশক প্রয়োগ করায় কোথাও কোনো আম নেই। এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এ বিষয়ে ভাই ভাই ট্রেডার্সের ব্যবসায়ী শহিদুর মেয়াদত্তীর্ণ কীটনাশক বিক্রির কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো মেয়াদত্তীর্ণ কীটনাশক বিক্রি করি নি। মেয়াদত্তীর্ণ যে সব কীটনাশক আমার দোকানের বলে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে সেগুলো আমার না। শত্রুতা করে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মতিয়ার রহমান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জানান, মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, এখনও কোনো অভিযোগ পাই নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবসায়ীর লাইন্সেস বাতিল করা হবে।

(আরআর/এসপি/মার্চ ২৮, ২০১৮)