কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : মাদ্রাসায় থেকে ঠিকমতো রেখাপড়া না করায় ইসমাইল হোসেন (১৩)এক মাদ্রাসা ছাত্রকে শিক্ষক ও ছাত্ররা মিলে বেধড়ক পিঠিয়ে আহত করেছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার চরচাপলী হাফেজী মাদ্রাসার শিক্ষক আসাদুজ্জামানের এ বর্বরতায় এখন আঁতকে উঠছে এ কিশোর।

গত ২৫ মার্চ দুপুরে এ ঘটনা ঘটলেও মাদ্রাসার পক্ষ থেকে শিশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। এ কিশোরের নির্যাতনের ঘটনায় এখন আতংকিত মাদ্রাসার অন্য শিক্ষার্থীরাও।

বিলম্ব প্রাপ্ত খবরে শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিশোর ইসমাইলের দুই হাতের কব্জি এখন কালো হয়ে রয়েছে। রশি দিয়ে তাকে ঝুলানো হয়েছিলো মাদ্রাসার আড়ার সাথে। দুই পায়েই অসংখ্য দাগ।
মাদ্রাসার বাইরে খেলা অপরাধে তার উপর চালানো হয়েছে এ নির্যাতন।

এ নির্যাতনে শিক্ষক আসাদুজ্জামান অন্য শিক্ষার্থীকেও বাধ্য করে ইসমাইলকে দড়ি দিয়ে বাঁধতে। এরপর চলে বেত্রাঘাত।

কিশোর ইসমাইল ও তার দিনমজুর বাবা আলমগীর হোসেন এখন মাদ্রাসার শিক্ষকদের এমন নির্দয় নির্যাতনে ভীতসন্ত্রস্থ্য হয়ে আছে। এ ঘটনায় অনেক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে তাদের অভিভাবকরা মাদ্রাসা থেকে বাড়ি নিয়ে গেছে। সাগর তীরবর্তী এ মাদ্রাসায় কাগজে কলমে ৬৫ জন শিক্ষার্থী।

স্থানীয় একাধিক গ্রামবাসী জানান, এই মাদ্রাসায় এভাবেই মারা হয়। ছাত্ররা মাদ্রাসায় না এলে অণ্য ছাত্রদের পাঠিয়ে বাড়ি থেকে ধরে এনে তারপর ঝুলিয়ে বেত্রাঘাতসহ কঠোর শাস্তি দেয়া হয়। এলাকার সবাই এটা জানলেও হুজুররা মারে তাই কেউ কিছু বলে না।

শরীফপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওঃ মো. ওয়ালিউল্লাহ হানিফ বলেন, মাদ্রসায় শিক্ষার আড়ালে শিশুদের এমন বর্বর নির্যাতন আদিম যুগকে হার মানিয়েছে।

অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, পড়াল্যাহা না করায় একটু মারছি। হ্যার ফল যে এইয়া হইবে বুজিনি। দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে মারা ঠিক কিনা জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দেন নি।

মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, তিঁনি ঘটনাটি জেনেছেন। আহত ছাত্রকে চিকিৎসাসহ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে।

এ ব্যাপারে মহিপুর থানার ওসি মোঃ মিজানুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে তাদের কাছে কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এমকেআর/এসপি/মার্চ ৩১, ২০১৮)