সিলেট প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় কিশোরী বিউটি আক্তার ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল মিয়া (২৯) বিয়ানীবাজার উপজেলার রামদা গ্রামে তার ফুফুর বাড়িতে আত্মগোপন করেছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাব। শনিবার গ্রেফতার বাবুল মিয়াকে নিয়ে সিলেট র‌্যাব-৯ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-৯ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমদ।

এর আগে আগে শুক্রবার (৩০ মার্চ) রাতে সাড়ে ১২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে বিয়ানীবাজার থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৯।

কিশোরী বিউটি ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের পর দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয় এবং দেশের বিভিন্নস্থানে আসামিকে ধরতে তৎপর হয়ে ওঠে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অবশেষে ঘটনার ১৫ দিনের মাথায় রামদা গ্রামে ফুফুর বাড়ি থেকে বাবুলকে গ্রেফতার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমদ জানান, বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে সে ঘটনার সঙ্গে জড়িত এমন স্বীকারোক্তি দেয়নি। আজ বিকেলে তাকে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে স্কুলছাত্রী বিউটি আক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুলের শ্বশুর আব্দুল কাদির (৫০), খালা জহুর চাঁন বিবি (৬০) ও খালাতো বোন ঝুমা আক্তারকে (২০) জিজ্ঞাসাবাদ করে শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ। ২৯ মার্চ সন্ধ্যায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফরিদ মিয়ার জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২১ জানুয়ারি শায়েস্তাগঞ্জের ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের দিনমজুর সায়েদ আলীর মেয়ে বিউটি আক্তারকে (১৬) বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাবুল মিয়া ও তার সহযোগীরা। এরপর এক মাস তাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। এক মাস নির্যাতনের পর বিউটিকে কৌশলে তার বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায় বাবুল।

এ ঘটনায় গত ১ মার্চ বিউটির বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল ও তার মা স্থানীয় ইউপি মেম্বার কলম চানের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে মেয়েকে সায়েদ আলী তার নানার বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন।

এরপর বাবুল ক্ষিপ্ত হয়ে ১৬ মার্চ বিউটি আক্তারকে উপজেলার গুনিপুর গ্রামের তার নানার বাড়ি থেকে রাতের আঁধারে জোর করে তুলে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণের পর তাকে খুন করে মরদেহ হাওরে ফেলে দেয়।

বিষয়টি জানাজানি হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিউটিকে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে ১৭ মার্চ তার বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল মিয়াসহ দুইজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ২১ মার্চ পুলিশ বাবুলের মা কলম চান ও সন্দেহভাজন হিসেবে একই গ্রামের ঈসমাইলকে আটক করে।

(ওএস/এসপি/মার্চ ৩১, ২০১৮)