হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত উপজেলা সভাপতি আবুল হোসেন আকল মিয়া হত্যার রহস্য উদঘাটনের পথে। হত্যার সাথে জড়িত অন্যতম আসামি জসিম উদ্দিন ওরফে শামীম গ্রেফতারের পর শনিবার সন্ধ্যায় ১৪৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যার পূর্বে তাকে ১৪৪ ধারায় জবানবন্দির জন্য আদালতে হাজির করা হয়। দীর্ঘ সময় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের কাছে সে জবানবন্দি প্রদানকালে আকল মিয়া হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সে মূল পরিকল্পনায় জড়িত ছিল এবং তার সহযোগীদের নাম প্রকাশ করলেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং ডিবির ওসি মোঃ শাহ আলম সাংবাদিকদের তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

তিনি জানান, শামীম তার সহযোগীদেরকে নিয়ে আকল মিয়াকে পরিকল্পনা করে হত্যা করে। মূলত জমি সংক্রান্ত বিরোধের জন্যই আকল মিয়াকে তারা হত্যা করে।

তিনি আরো জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার তেজকোনিপাড়া এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার
নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে শামীকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে শনিবার সন্ধ্যায় তাকে আদালতে আনা হয়।

তিনি জানান, যেহেতু বিষয়টি চাঞ্চল্যকর এবং সমগ্র জেলাবাসী এই রহস্য উদঘাটনের দিকে তাকিয়ে ছিলেন তাই পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা এই বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে ঘটনার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবেন। শনিবার রাতে অথবা রবিবারও এই ব্রিফিং হতে পারে।

আদালত পরিদর্শক ওহিদুল আলম জানান, শনিবার সন্ধ্যার পূর্বে আসামি শামীমকে ১৪৪ ধারায় জবানবন্দির জন্য আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম তার জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন।

উল্লেখ্য, ১ মার্চ ভোরে হাজী আবুল হোসেন আকল মিয়া বাল্লা রোডের তার নিজ বাসা থেকে মসজিদে আসার পথে দুর্বৃত্তের হামলায় নির্মমভাবে নিহত হন। বাজারের একটি দোকান ভিট নিয়ে অন্য এক
ব্যবসায়ীর সাথে বিরোধ ছিল এবং এ ব্যাপারে আদালতে মামলা চলমান। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই তাকে হত্যা করা হয়। পরে ৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলায় সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি গঠন করে হরতালসহ বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছে। গত ২১ মার্চ হরতাল কর্মসূচির শেষে নেতৃবৃন্দ ১০ দিনের মাঝে হত্যাকারীকে গ্রেফতার এবং মূল ঘটনা উদঘাটনের আল্টিমেটাম দেন। নির্ধারিত সময়ের শেষ দিনে রহস্য উদঘাটন করায় চুনারুঘাটে আনন্দ বিরাজ করছে। এখন তারা জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অপেক্ষায়।

সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান মাসুদ নির্ধারিত সময়ের মাঝে রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এর ফলে চুনারুঘাটবাসী নতুনভাবে আশায় বুক বেধেছেন। তাদের প্রিয় আকল মিয়া হত্যার ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে।

(এমইউএ/এসপি/মার্চ ৩১, ২০১৮)