সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর গলাচিপায় খেয়া পারাপারে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলাগাছিয়া-গলাচিপা নদীর উপরে ইচাদী টু আমখোলা খেয়া পারাপারে সরকারি নির্ধারিত অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদ করলে ভাইয়া বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হতে হয় সাধারণ মানুষকে।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনই এ খেয়া দিয়ে গলাচিপা-দশমিনা উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। বিশেষ দিবস, মেলা ও ঈদের সময় জনপ্রতি ২০ টাকা, মটর সাইকেল ২৫ টাকা আর বাইসাইকেল ১০ টাকা করে আদায় করা হয়। হাতের মালামালেও অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয় এ খেয়া পারাপারে। তবে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নৌকায় পারাপারের জনপ্রতি ৬ টাকা, মোটরসাইকেল ১৫ টাকা ও বাইসাইকেল ৫ টাকা করে খেয়াঘাটে নেওয়ার কথা রয়েছে। প্রতিটি খেয়াঘাটের দৃশ্যমান স্থানে টোল চার্ট প্রদর্শনের নিয়ম থাকলেও কোথা টোল চার্ট টানানো নেই।

এদিকে তিন বছর আগে ভাড়ার মটর সাইকেল চালানো বাদ দিয়ে বাংলা ১৪২৪ খ্রি: জন্য আমখোলা ও ইচাদী খেয়াঘাট ৪ লাখ ৪১ হাজার টাকায় ইজারা নেন জুয়েল আহমেদ। জুয়েল ইজারা নেয়ার পর থেকেই প্রকাশ্যে সরকারি এ নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এ ঘাটে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভাইয়া বাহিনীর প্রধান জুয়েল-জাফর ও তার বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হয়।

স্থাণীয় ব্যবসায়ী রফিকুল আমিন বলেন, ‘জুয়েল খেয়া ইজারা নেয়ার পর থেকে ঘাটের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছে। বেশির ভাগ সময় জুয়েলের ভাই জাফর বসে এই খেয়া ঘাটে। কেউ অতিরিক্ত টাকা আদায়ের ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে ভাইয়া বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হতে। আমরা উভয় পারের মানুষ ভাইয়া বাহিনীর হাতে জিম্মি।

আমখোলা খেয়া পারাপারে ঘাটে অপেক্ষমান ইচাদী এলাকার পারুল বেগম বলেন, ভাই খেয়ায় চল্লিশ জন যাত্রী না হলে খেয়া ছাড়েনা। আর মুমূর্ষ রোগী নিয়ে খেয়ার কাছে এসে খেয়া ছাড়তে বললে চল্লিশ জন যাত্রীর (চারশ টাকা) দেওয়া হলে খেয়া ছাড়ার শর্ত দেওয়া হয়। অনেকে রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে বাধ্য হয়েই তিন/চার শত টাকা দিয়ে পারাপার হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক বলেন, এক লোক অতিরিক্ত টাকা নেয়ার প্রতিবাদ করলে জুয়েল-জাফর ভাইয়া বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হন। পরে চাঁদাবাজির মামলা করার হুমকি দেয় ভাইয়া বাহিনীর প্রধান জাফর।

এ ব্যাপারে আমখোলা খেয়া ঘাটের টোল আদায়কারী জাফর বলেন, ‘বেশি টাকায় ইজারা নিয়েছি। এ ছাড়া প্রশাসন ও স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করতে হয় তাই অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছি। প্রশাসন জানে আমরা বেশি টাকা নেই। টোল চার্ট টানানোর প্রয়োজন নেইতো? কত টাকা দিতে হবে তাতো মুখেই বলছি টানাতে হবে কেন?

এ ব্যাপারে গলাচিপা উপজেলার নির্বাহী অফিসার তৌসিফ আহমেদ জানান, গলাচিপার প্রায় সব খেয়াঘাটেই অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ রয়েছে পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হাফিজ বলেন বিষয়টি শুনে উপজেলার নির্বাহী অফিসারকে দ্রুত তদন্তের নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমানিত হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আমরা যেখানে অনিয়ম দেখছি সেখানে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। প্রয়োজনে ওইখানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।

(এসডি/এসপি/এপ্রিল ০১, ২০১৮)