ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ইউনিট-১ এর ভিভিইআর-১২০০ রিএ্যাক্টর বিল্ডিংয়ের (পারমাণবিক চুল্লি বসানোর) ফাউন্ডেশনের কংক্রিট ঢালাই কাজ ২রা এপ্রিল সোমবার সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ৩০শে নভেম্বর ঈশ্বরদীর রূপপুরে পারমাণবিক চুল্লি বসানোর কাজের অর্থাৎ ফাষ্ট কংক্রিট পোরিং ডেট বা এফসিডি কাজের উদ্বোধন করেন। আর্ন্তজাতিক আণবিক শক্তি কমিশনের রীতি অনুযায়ী এই উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রথম পারমাণবিক জগতে প্রবেশ করায় বাংলাদেশ বিশ্বের ৩২তম পারমাণবিক দেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করে।

প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর রিএ্যাক্টর বিল্ডিংয়ের (পারমাণবিক চুল্লি বসানোর) ফাউন্ডেশনের কংক্রিট ঢালাই কাজ সম্পন্নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি ইউনিট-২ এর রিএ্যাক্টর বিল্ডিং (পারমাণবিক চুল্লি বসানোর) এর ফাষ্ট কংক্রিট পোরিং ডেট বা এফসিডি কাজ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শুরু হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানী লিঃ এ নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত তরুণ প্রজন্মের মেধাবী বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে ৫০ জনকে মানবসম্পদ উন্নয়নের চুক্তি মোতাবেক আগামী ৮ই এপ্রিল ‘ফাউন্ডেশন ট্রেনিং ফর নিউক্লিয়ার এনার্জি’র উপর প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের মুম্বাই পাঠানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহনের ৫৭ বছর পর রাশিয়ান ফেডারেশনের সহযোগিতায় ঈশ্বরদীর রূপপুরে পদ্মা নদীর তীরে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ব্যয়ের প্রকল্প রূপপুর পরমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে ।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ভিভিইআর-১২০০ (এইএস-২০০৬) রিঅ্যাক্টরের দুটি বিদ্যুৎ ইউনিটের (ইউনিট-১ ও ২) সমন্বয়ে ২ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। সেই সাথে এটি পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভৌত অবকাঠামো তৈরি, বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য পরমাণু প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যোগ্য ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা এবং কার্বনমুক্ত ও বেইসলোড বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা করা সম্ভব হবে।

রাশিয়ান ও বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ ও কর্মী মিলে প্রতিদিন প্রায় সহস্রাধিক মানুষ এখন দিন-রাত এই প্রকল্পে কাজ করে চলেছেন। এখানে ভিভিইআর-১২০০ মডেলের থ্রি প্লাাস জেনারেশনের রিঅ্যাক্টর বসবে। এই রিঅ্যাক্টর বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি রাশিয়ায় শুধুমাত্র একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রয়েছে। বাংলাদেশের রূপপুরে এটি দ্বিতীয় ব্যবহার হবে ।

(এসকেকে/এসপি/এপ্রিল ০২, ২০১৮)