কবীর চৌধুরী তন্ময়


দেশের সাধারণ মানুষ অনেক সময় বিভক্ত-বিভ্রান্তের মাঝে পড়ে যায়। চারদিকে সত্য-মিথ্যার মিশ্রণে নানা ধরনের তথ্য-উপাত্তের ছড়াছড়ি আর বলাবলি। মানুষ যেন অনেক সময় নিজেকেই বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। কাকে বিশ্বাস করবে, কোথায় যাবে এবং কোন সংবাদকে আপন মনে করবে তা অনেক সময় কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। 

পরিস্কার করি, আমাদের বিচার কাজ পরিচালনায় কিছু উকিল মহোদয়ের বক্তব্য দিয়ে। আসামি পক্ষের উকিল মহোদয় সব সময় বলে থাকেন, আমার আসামির বিরুদ্ধে একটাও সঠিক তথ্য-উপাত্ত আদালতে উপস্থাপন করতে পারেনি। উপস্থাপন করতে পারেনি একটা স্বাক্ষীও। আমার মক্কেল নিরাপরাধ। তার একদিন তো দূরের কথা, এক মিনিটের জন্যেও সাজা ভোগ করতে পারে না।

তখন সহজ-সরল মানুষগুলো তাদের সহজ-সরল বিশ্বাস নিয়ে উকিল মহোদয়ের কথা বিশ্বাস করে। তখন কতিপয় মানুষের ভিতর একটা সন্দেহ কাজ করে-হয়তো এই নিরাপরাধ ব্যক্তিটি শুধু শুধু হয়রানির শিকার হচ্ছে। রাজনৈতিক ভাবে তাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে কারাগারে প্রেরণ করেছে। তাকে কষ্ট দিচ্ছে।

আবার ন্যায় বিচার প্রার্থী পক্ষের উকিল মহোদয়ও সব সময় বলে থাকেন, আমরা সকল তথ্য-উপাত্ত সঠিক ভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। আসামির সকল অপরাধ প্রমাণ করতে পেরেছি। সঠিক তথ্য আদালতে পেশ করেছি। স্বাক্ষীগণও তাদের সঠিক স্বাক্ষী দিয়েছে। অতএব, এতো-এতো ধারায় অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার আশাবাদী।

তখনও সাধারণ জনগণ সহজ-সরল বিশ্বাস নিয়ে তা অবলোকন করে। আবার ন্যায় বিচার প্রার্থীর উকিল মহোদয়ের কথা শুনে সবাই ভাবতে থাকে, সত্যিই যদি ওই ব্যক্তি অপরাধী না হয়ে থাকে তাহলে এতো-এতো স্বাক্ষী কি মিথ্যে বলেছে? সকল তথ্য-উপাত্ত কি মিথ্যে? শুধু-শুধু কী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন হয়েছে-ইত্যাদি প্রশ্নও সাধারন মানুষের মনে উকি দেয়।

এই ধরুন, খালেদা জিয়ার বিচারকাজের ঘটনা নিয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে খোদ খালেদা জিয়াও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি নিয়ে জাতির সামনে একের পর এক মিথ্যাচার করেছে। মামলা থেকে রেহায় পাওয়ার জন্য বিভিন্ন নাটকও মঞ্চায়ন করেছে। বিচারকের প্রতি অনাস্থা, আদালত পরিবর্তন এবং দীর্ঘ ১০ বছর সময় নষ্ট করার কৌশলও অবলম্বন করেছে। বার-বার উচ্চ আদালতের দারস্থ হয়েও কোনোভাবে এ মামলাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতে পারেনি। আবার মামলার সাথে সম্পৃক্ত নয়; এই ধরেণের বক্তব্য দিয়ে আদালতের করুণা লাভের আশায় অভিনয় করেছে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এমনকি স্বেচ্ছায় গ্রেফতারি পরোয়ানা গ্রহণ করে দেশের কতিপয় মানুষের আবেগ-অনুভূতি নিজেদের আয়ত্বকরণ করার চেষ্টাও করেছে।

শুধু তাই নয়, ১৯৯৩ সালের ৪ ডিসেম্বর (চেক নম্বর ৪৮৮২৪০১) ৪ লাখ টাকা তুলে বগুড়া জেলার গাবতলী থানার দাড়াইল মৌজায় ১৭টি দলিল মূলে ২ দশমিক ৭৯ একর জমি ২ লাখ ৭৭ হাজার টাকায় ক্রয় করা হলেও সেখানে কোনও এতিমখানা তৈরি করেনি-মিডিয়াতে এই সংবাদ প্রকাশ হলে রাতের অন্ধকারে ওই জমির উপর নতুন সাইনবোর্ড সাটানোর কাজ করে বিএনপি।

কিন্তু কেন এই মথ্যাচার? রাতের অন্ধকারেইবা সাইনবোর্ড সাটানো প্রয়োজন কি হতে পারে- এই প্রশ্নগুলো আমার মত পাঠক আপনার মনেও আসতে পারে। সোজা উত্তর হল, জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা থেকে কোনও মতেই খালেদা জিয়া রেহায় পাচ্ছে না জেনেই দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার একটা অপকৌশল নিয়েছে। আর সেটা খালেদা জিয়ার জেলে যাওয়ার আগে করা সংবাদ সম্মেলনেই স্পষ্ট হয়ে উঠে। আর সাইনবোর্ড, সেটাও সেই অপকৌশলের অংশ। নিউজ হবে, তাদের আদর্শের সংবাদ মাধ্যমগুলো এ নিয়ে মনগড়া তথ্য আর পাতা ভরা লেখা দিয়ে কিছু পাঠককে নিজেদের পক্ষে ধরে রাখার চেষ্টা করা করবে। আর সেই সাথে গজিয়ে উঠা অনলাইন সাইট তো আছেই। আছে তাদের একঝাক স্যোশাল অ্যাক্টিভিষ্ট; যারা ডলার ইনভেষ্ট করে বুস্ট পোস্টের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সাধারণ জনগণকে নিজেদের অনুকূলে ধরে রাখার রাজনৈতিক মিথ্যাচার।

জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা নিয়ে এতো-এতো কথা হয়েছে; কোনটা আলোচনা আর কোনটা সমালোচনা তা নিয়ে মানুষ রীতিমত ভাবনায় পড়ে যায়। আর বিএনপির সিনিয়র-জুনিয়র নেতাকর্মীর সাথে তাদের অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট, বিএনপির আদর্শের সংবাদ মাধ্যমগুলোর সাথে মামলা পরিচালনায় উকিল মহোদয়ের সুন্দর উপস্থাপনের উপর অনেকে শক্ত বিশ্বাস স্থাপন করে ফেলে। তারা যা বলেছে তাই সত্য এবং বাস্তব। সাথে তাদের কিছু বুদ্ধিজীবীর কয়েকজনের কন্ঠে কণ্ঠ মিলানোর সুর টিভি স্ক্রিনে ভেসে আসায় তা আরও শক্ত আকার ধারণ করেছে-এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

পাঠক! আমার মত নিশ্চয় আপনারও মনে আছে মানবতাবিরোধী অপরাধী সাঈদীকে চাঁদে দেখা যাওয়ার গল্পের কথা! রাজাকার দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর চাঁদে উঠার মিথ্যে তথ্য নিয়ে কিছু মানুষ যেভাবে ভোঁদৌড় শুরু করেছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। গণণায় এদের সংখ্যা বেশী না হলেও, তাদের প্রচার বা উপস্থাপন ছিলো যথেষ্ট শক্ত। সুন্দর উপস্থাপনের মাধ্যমে কিছু সংখ্যক মানুষের জীবনহানী পর্যন্ত করতে সক্ষম হয়েছে। সাময়িক সময়ের জন্য মানুষের মাঝে একটা উত্তেজনা বিড়াজ করতে পেরেছে। অনলাইনে, অফলাইনে এই গল্পটা এতোটাই আকার ধারণ করেছিল, যা এতো তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়ার কথা নয়।

তবে এ-উত্তেজনা বেশি দিন বজায় রাখতে না পেরে আবার শুরু করে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খেয়ে মিথ্যে শিশু মারার ষড়যন্ত্রের সংবাদ। সেখানেও এক শ্রেণির সাধারণ মানুষের মাঝে হাহাকার শুরু হয়েছিল। দৌঁড়াতে থাকে নিজেদের সন্তানের জীবন বাঁচাতে। এই বুঝি সন্তান শেষ হয়ে গেল! তখনও অনেকে ভারতকে জড়িয়ে, শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে নানা ধরনের সমালোচনা করেছে। যার সুত্রপাত তাদের অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্টরা পরিকল্পিতভাবে এই মিথ্যাচার আগুনে পেট্রোল ঢেলে দিয়েছিল। মিথ্যা ভিডিও, ভুঁইফোর সংবাদ মাধ্যমকে সুত্র আকারে তুলে ধরে সহজ-সরল মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে।

এই অপপ্রচারও শেষ পর্যন্ত বেশি দিন ঠিকিয়ে রাখতে পারেনি। আর এভাবেইে স্বাধীনতাবিরোধীরা ৭১ থেকেই অপপ্রচার করে আসছে। তাদের নোংরা মন-মানসিকতা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে ইসলামকে ব্যবহার করে আসছে। সাধারণ মানুষের বিশ্বাসকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, খেলছে। সহজ-সরল মানুষের সহজ-সরল আবেগকে কাজে লাগিয়ে মানুষ ও মানবতাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। আর সে চেষ্টা আজও বিদ্যমান। কিছু একটা হলেই ইসলামকে টেনে আনা। ইসলামের অপব্যাখা সৃষ্টি করার মাধ্যমে দেশের ৯০ ভাগ মুসলমানকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা। আস্তিক-নাস্তিক, কাফের-মুরতাদ বলে দেশের সুর্য সন্তানদের একের পর এক বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করা। স্বাধীনতার সপক্ষের মেধাবী সন্তানদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো তাদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ।

এই যেমন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে উচ্চকণ্ঠ জনপ্রিয় লেখক জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা হামলার পরে এই হামলাকে জায়েজ করার লক্ষ্যে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি পরিকল্পিতভাবে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে নাস্তিক বলে প্রচার করতে শুরু করে। তারা এর আগেও বহুবার এই ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে। স্বয়ং স্থানীয় রাজনীতিবিদদেরও জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে লাগিয়েছে। আন্দোলন করেছে। সিলেট থেকে জাফর ইকবালকে বের করার প্লে-কার্ড তুলে ধরেছে।

বিএনপির পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার কারাবাস থেকে জাতিকে অন্যদিকে ফিরাতেই জাফর ইকবাল হত্যা চেষ্টা হামলা নাকি সরকারের সাজানো নাটক! অবাক হলেও সত্য, এই ধরনের বক্তব্য জাফর ইকবাল হত্যা চেষ্টা হামলাকে সমর্থন করার সামিল। শুধু সমর্থনই বলা নয়, বরং এই ধরনের হামলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার রীতিমত ষড়যন্ত্র।

কারণ তারা জানে, আমাদের দেশের এক শ্রেণির মানুষ এখনো অপরের বুলিতে নিজের জীবন সাজাতে ব্যস্ত! চিলের পিছনে নিজের কানের খোঁজে সময় পার করে। সঠিক তথ্য যাচাই-বাচাই করা যেন তাদের এক ধরনের সময় নষ্ট। চা দোকানে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় পার করবে কিন্তু নিজেকে সচেতন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে এক মিনিটও ব্যয় করবে না। নিজ সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ ও দশের কল্যাণে নিয়োজিত করবে, সে ব্যাপারে কোন পদক্ষ্যেপ নেই। অথচ, পরের কথায় নিজে জীবন বলিদান।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা বিচারকাজের উভয় পক্ষের উকিল মহোদয়ের সকল কথা একটা সময় সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে, যখন বিচারপতি রায় ঘোষণা করেন। আস্তে-আস্তে বিশ্বাস করতে সক্ষম হয় সাদা-কালোর মাঝে কী ছিলো! এক শ্রেণির মানুষ পুরোপুরি বুঝতে সক্ষম হলেও আরেক শ্রেণির মানুষ থাকে বির্তকের মাঝে। বিশ্বাসহীনতার মাঝে। এক. তাদের নিজেস্ব স্বত্তার অভাব। দুই. অসচেতনতা এবং পরনির্ভরশীলতা। আর এটাকেই কাজে লাগাতে চেষ্টা করে ষড়যন্ত্রকারীরা। কারণ, বিকর্ত সৃষ্টি করাই যে তাদের কাজ। ষড়যন্ত্র করাই যে তাদের কাজ।

কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, শত-সহস্র মিত্যাচার, ষড়যন্ত্র করেও খালেদা জিয়াকে সত্যের কাছ থেকে মুক্ত করতে পারেনি। সুশাসনের কাঠগড়া থেকে মুক্ত করতে পারেনি। তিঁনি দুর্নীতিতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ডে খালেদা জিয়া এখন কারাভোগ করছেন। মিথ্যে সাজানো মঞ্চায়ন করার পরেও দেশের সচেতন মানুষকে খালেদা জিয়ার পক্ষে মাঠে নামাতে পারেননি।

এখন মানুষ রাজাকার সাঈদীকে ঘৃণা করে, ঘৃণা করে মিথ্যে তথ্য-উপাত্ত রটানো ওই গোষ্ঠীকে। ঘৃণা করে তার চাঁদে যাওয়ার বানানো মিথ্যে গল্পকেও। মানুষ জেনে গেছে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খেলে শরীরের তারতম্য উঠানামা করে, জ্বড়-জ্বড় ভাব হয়। এখন সহজ-সরল মানুষ আবার তাদের নিজ-নিজ স্রষ্টার কাছে অভিশাপ দিচ্ছে- ষড়যন্ত্রকারীরা ধ্বংস হোক, নিপাত যাক।

মানুষ বিএনপির মিথ্যাচারকে এখন ঘৃণা করে। দুর্নীতি না করার বক্তব্য নিয়ে খোদ খালেদা জিয়ার মিথ্যাচার নিয়ে দেশের জনগণ তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, এতিমরা অভিশাপ দিচ্ছে।

আসলে শয়তান অভিশাপে কখনও ধ্বংস হয় না। বরং অভিশাপেই শয়তানের জন্ম। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। যে ইসলামের নামে ইসলামের শান্তিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, সেই শান্তির ধর্ম ইসলামকে ভালো করে জানতে হবে। শয়তানের মিষ্টি-মিষ্টি কথা পরিহার করতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীরা আগ বাড়িয়ে সব সময় পাশে দাঁড়ায়, কিন্তু সমস্যা তৈরি করে পিছু হটে। ষড়যন্ত্রকারীরা সংখ্যায় কম হলেও তাদের নোংরা থাবা কিন্তু অনেক শক্তিশালী। অবৈধ টাকার পাহাড় দিয়ে তারা অনেক কিছু করতে সক্ষম।

আজ কোনও-কোনও মসজিদ, মন্দির, প্রার্থনালয়ের ধর্মগুরুর পোশাকে লুকিয়ে আছে শয়তান। রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীর আড়ালে শয়তান। তাদের কাজ- ভালো মানুষের পোশাক পড়ে মানবতাকে ধ্বংস করা। মানুষে-মানুষে ভিভেদ সৃষ্টি করা। আবার আপনার খুব পাশে অবস্থানরত আপনারই আপন বন্ধুর আড়ালে শয়তান লুকিয়ে আছে, লুকিয়ে আছে আজ বড়-বড় সরকারি আসনের অন্তরালেও।

দেশের লাখো-কোটি মানুষের প্রিয় লেখক জাফর ইকবাল। তিঁনি শঙ্কামুক্ত। কিন্তু বাংলাদেশ শঙ্কামুক্ত নয়। আমাদের সবাইকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। গালভরা গল্প আর মিডিয়ার পাতা ভরা লেখা বিশ্বাস করার আগেই আমাদের সকল কিছু নিয়ে ভাবতে হবে। একান্ত মনে করার আগেই যাচাই-বাচাই করতে হবে। কারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস দীর্ঘদিন লুকিয়ে রেখে মিথ্যাচার করেছে, কারা বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ জাতির সামনে তুলে ধরতে বাধা দিয়েছে, কারা পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করেছে, কারা স্বাধীনতাবিরোধীদের এদেশে রাজনৈতিক, সামাজিক, অথনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এনে প্রতিষ্ঠা করেছে; তা ভাবতে হবে, জানতে হবে। কারণ আপনার উপর নির্ভর করছে ভবিষ্যত জাতি। তাদের চিহ্নিত করে বয়কটের মাধ্যমে একটি সুস্থ ও সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে আপনাকেই এগিয়ে আসতে হবে। খালেদা জিয়ার মামলা এবং লেখক জাফর ইকবালের হত্যাচেষ্টা হামলা নিয়ে যারাই মিথ্যাচার করবে তাদেরও চিহ্নিত করতে হবে। বেলা শেষে তাদের বুঝাতে হবে, তোমরাই পরিত্যাক্ত। তোমরাই নষ্টদের দলে। সমাজ-সভ্যতা তোমাদের নিক্ষিপ্ত করেছে।

আপনার বিশ্বাস আপনাকে সঠিক ও সহজ পথ দেখাবে। আপনার শিক্ষা আপনাকে শয়তান চিনাতে সহায়তা করবে। আপনার ধর্ম আপনাকে মানবতার পাশে দাঁড়াতে শিক্ষা দেবে। আপনার অর্জন আপনাকে অপরের কল্যানে ব্যয় করতে বলবে। আপনার সচেতনতা অপরকে সঠিক ও সুন্দর পথ দেখাবে। শয়তানের গর্জন ক্ষণস্থায়ী ও দূর্বল। মানুষ, মানবতা ও মানবপ্রেম সব সময় সত্য ছিনিয়ে এনেছে, মানবতার জয় হয়েছে। সেদিকেই আমাদের এগিয়ে যাওয়া উচিত।

লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ)।