মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
বেশ কিছু দিন ধরে ফেসবুকে আসতে খুব ভয় করে। আসলেই দেখতে হয়, নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন। এই পোস্ট দেখলে আমি পাশকাটিয়ে চলে যাই, কারণ আমি এইগুলা নিতে পারি না। আমার ব্রেইন এর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়।

আমার মনে হয় ধর্ষকের ফাঁসি কিংবা যেকোনো বড় ধরনের সাঁজা দিলেও এই নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন থামিয়ে রাখা সম্ভব না। কারণ মস্তিষ্ক বিকৃত মানুষের ভয় কাজ করে খুব কম।

নির্যাতন, ধর্ষণ, ধর্ষণের পরে খুন হওয়ার পেছনে আমার কাছে মনে হওয়া কিছু কারণ :

প্রথমত, বর্তমান আমাদের দেশে প্রতিটি নেশায় ভেজাল। আমাদের দেশে ইয়াবা ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে। ইয়াবা এক ধরনের যৌন উত্তেজক। এছাড়া গাঁজায় মেশায় ঘুমের ট্যাবলেট সহ বিভিন্ন উত্তেজক। মদ সহ সকল নেশায় ভ্যাজাল, মানুষ এই উত্তেজক নেশা নিলে নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন করবেই। কোন শাস্তি এদের আটকাতে পারবে না। একজন মাতাল যৌন উত্তেজনা ধরে রাখতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক। কারণ এই নেশার নামে যৌন উত্তেজকগুলা ওদের মস্তিষ্ক বিক্রিত করে দেয়, ওরা তখন হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

দ্বিতীয়ত, আমাদের দেশের মতো হয়তো পৃথিবীর অন্য কোথাও রাস্তায়, ফুটপাতে, ট্রেন ষ্টেশন, বাস ষ্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল সহ বিভিন্ন ব্যস্ত এলাকায় ওপেনে যৌন উত্তেজক ওষুধ বিক্রি হয় না। এই উত্তেজক ওষুধ সবচেয়ে বেশি কেনে অবিবাহিত মানুষ। অনেক জায়গায় দেখেছি ১৮, ২০ বছরের ছেলেরাও কেনে। ভবিষ্যতে বিভিন্ন যৌন উপকার পাবে এটা বলে ওদের কাছে বিক্রি করে এই ওষুধ। নিয়ম হচ্ছে প্রেসক্রিপশন নিয়ে গেলে ফার্মেসী থেকে ওষুধ আনা যাবে। কিন্তু আমাদের দেশে ফার্মেসীতে ওষুধ আনতে প্রেসক্রিপশন লাগে না। যৌন সমস্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, এই সমস্যা যদি রাস্তার অশিক্ষিত ডাক্তার সমাধান করে সেই মানুষদের থেকে আর কি আশা করা যায়।

এছাড়া কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলে মেয়ে আলাদা পড়ানো হয়, একজন মানুষ যখন জন্ম থেকে( বয়েজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বয়েজ হোস্টেল ইত্যাদি) তার বিপরীত লিঙ্গের সাথে না চলে তাহলে তার মাথা যৌবনের কারণে বিক্রিত হতে পারে। এই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছেলেরা প্রচুর নীল ছবি দেখে।

- সুশিক্ষার অভাব।

- একই লিঙ্গের সম্পর্ক বৈধ না করা।

- বিচার ব্যবস্থার এবং প্রশাসনের দুর্বলতা।

এছাড়াও অনেক কারণ রয়েছে। মানুষ কেন নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন করে এই কারণগুলো বের করে সমাধান না করে শুধু শাস্তির ভয় দেখিয়ে নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন ঠেকানো সম্ভব না। আগে সমস্যা চিহ্নিত করুন, পরে সমাধান করুন।

লেখক : অনির্বাণ বিশ্বাস
ছাত্র, জার্নালিজম কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ
স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।

(এসএস/অ/এপ্রিল ০৬, ২০১৮)