নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুরে উফসী জাতের ‘কাজলা বেগুন’ চাষ করে প্রান্তিক চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়ে উঠছে অনেক পরিবার। ভাল ফসলসহ হাটবাজারগুলোতে ওই জাতের বেগুনের চাহিদা ও উচ্চমূল্য পাওয়ায় এলাকার চাষীরা এই বেগুন চাষে ঝুঁকে পড়েছে। তবে কৃষকরা জানিয়েছেন, স্থানীয় কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ সহায়তা না পাওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে বেগুন চাষ করতে পারছেনা।

মহাদেবপুর উপজেলার নাটশাল গোপালপুর গ্রামের ছাবেদ আলীর পুত্র কৃষক ছলিম উদ্দিন মণ্ডল তিন বিঘা জমিতে, অছিমুদ্দিনের পুত্র কৃষক রফিকুল ইসলাম আড়াই বিঘা জমিতে এবং আলিমুদ্দিনের পুত্র কৃষক রিপন মণ্ডল দুই বিঘা জমিতে এবার উফসী জাতের কাজলা বেগুন চাষ করেছেন। এ বেগুন স্থানীয়ভাবে ইসলামপুরী আবার যশোহরী নামেও পরিচিত। এ ছাড়াও উপজেলার অন্যান্য এলাকাতেও অনেক কৃষক ওই জাতের বেগুন চাষ করেছেন।

কৃষকরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে এই জাতের বেগুন চাষ করতে সার, বীজ, কীটনাশকসহ পরিচর্যা ব্যয় হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। আর এ সমপরিমাণ জমিতে ওইজাতের বেগুনের ফলন হয় ২শ’ ৩০ মণ থেকে ২শ’ ৬০ মণ। কৃষকের মতে, জমি থেকে তাদের উৎপাদিত প্রতিমণ বেগুন পাইকারগণ ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকায় ক্রয় করে নিয়ে যায়। এতে করে প্রতি বিঘা জমি থেকে বেগুন বিক্রি করে এবার সকল খরচ বাদ দিয়ে কমপক্ষে ১ লাখ টাকা লাভ হবে। ভাল ফলনসহ বেগুনের উচ্চমূল্য পাওয়ায় এবার চাষীদের মাঝে হাসি-খুশি অবস্থা বিরাজ করছে। কৃষকদের মতে, প্রতিবছর নবেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসে কৃষি ব্যাংক থেকে কৃষকদের মাঝে সহজ শর্তে ঋণ সহায়তা দেয়া হলে অধিক পরিমাণ জমিতে বাণিজ্যিকভাবে এই বেগুন চাষের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এতে করে গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা সচল হবে আর স্বচ্ছলতা ফিরে পাবে এলাকার শত শত কৃষক।
তবে ওইসব কৃষক অভিযোগ করেন, স্থানীয় কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে এ ফসল চাষের জন্য ঋণ সহায়তা নিতে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তা ও এলাকার সুপারভাইজারগণ কৃষকদের ঋণ প্রদানে জমির বিভিন্ন কাগজপত্রের ত্রুটি আবিস্কার করাসহ নানা ধরনের শর্ত জুড়ে দিয়ে কৃষকদের বিভিন্নভাবে হয়রানী করছে। এ হয়রানীর ভয়ে কৃষকরা ঋণ সহায়তা না নিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে স্বল্প পরিসরে বেগুন চাষ করতে বাধ্য হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম মফিদুল ইসলাম জানান, উপজেলার ৪শ’ বিঘা জমিতে এবার প্রান্তিক চাষীরা উফসী জাতের কাজলা বেগুন চাষ করেছে। এ বেগুন চাষে কৃষকদের বিভিন্নভাবে উদ্বুদ্ধ করাসহ সকল ধরনের সহযোগিতা দেয়ার ফলে এবার ওইজাতের বেগুনের ফলন ভাল হয়েছে বলেও তিনি জানান।

(বিএম/এএস/এপ্রিল ১৩, ২০১৪)