নিউজ ডেস্ক : কম খরচে লিভারের রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) একদল গবেষক।

তারা জানিয়েছেন উদ্ভাবিত স্টেম সেল থেরাপি এবং বিলিরুবিন ডায়ালাইসিসের এ পদ্ধতিতে প্রচলিত যন্ত্রপাতিকেই নতুনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে অনেক কম খরচে অকার্যকর লিভার বা হেপাটাইটিসের চিকিৎসা করা যাবে।

গবেষণা দলের অন্যতম সদস্য বিএসএমএমইউর লিভার বিভাগের অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব গণমাধ্যমকে জানান, লিভার সিরোসিস অথবা অন্য কোনো কারণে লিভার অকার্যকর হলে তাদের উদ্ভাবিত নতুন এই চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব।

তিনি বলেন, ‘লিভার সিরোসিস অথবা অন্য কোনো কারণে লিভার অকার্যকর হলে একমাত্র প্রচলিত চিকিৎসা হলো লিভার প্রতিস্থাপন। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও করা যাচ্ছে না। ভারতে এই চিকিৎসায় খরচ হয় ৪০ লাখ টাকারও বেশি। এজন্য আমরা নতুন দুটি চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছি। এর একটা হলো স্টেম সেল চিকিৎসা, অপরটি ডায়ালাইসিস।

তিনি জানান, নতুন এই পদ্ধতিতে লিভার পুরোপুরি ঠিক না হলেও এর অবস্থার উন্নতি হবে।

অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব বলেন, ‘যে যন্ত্রের সাহায্যে রক্ত থেকে প্লেটিলেট আলাদা করা হয়, সেটাকেই আমরা নতুন কাজে ব্যবহার করেছি। এই মেশিনের নির্মাতার সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি। যন্ত্রটি দিয়ে আমরা যখন প্রথম স্টেম সেল সংগ্রহ করি তখন তারা অবাক হয়েছিল’।

তিনি বলেন, ‘এই স্টেম সেলকে বলা হয় শরীরের রাজমিস্ত্রি। যখনই কোনো অর্গানে সমস্যা হয় তখন এই স্টেম সেলের কাজ হচ্ছে সেটি মেরামত করা। আমরা একটি ইনজেকশন দেই। যখন রোগীর স্টেম সেলের সংখ্যা বেড়ে যায় তখন ওই যন্ত্রের সাহায্যে প্লেটিলেটকে আলাদা না করে স্টেম সেলকে আলাদা করেছি। তারপর স্টেম সেলগুলোকে লিভারের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে’।

তিনি জানান, যেসব রোগীর চিকিৎসায় এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগেরই লিভারের অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

অধ্যাপক আল-মাহতাব জানান, তাদের এই উদ্ভাবন গত মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় সম্মেলনে তুলে ধরেছেন। আরো দুটো আন্তর্জাতিক জার্নালেও এই আবিষ্কারের কথা প্রকাশিত হয়েছে।

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক কোনো গবেষকই তাদের এই উদ্ভাবনকে চ্যালেঞ্জ করেননি।

তিনি জানান, এই স্টেম সেল চিকিৎসার পেছনে খরচ পড়বে এক লাখ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকার মতো। এটা তারা এখন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় নামিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। থাইল্যান্ডে এই চিকিৎসা করতে খরচ হয় ১৬ থেকে ১৭ লাখ টাকার মতো।

তিনি আরও জানান, প্রচলিত ডায়ালাইসিস পদ্ধতিতে সাধারণত চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হলেও তাদের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে লাগবে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। সূত্র : বিবিসি

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ০৭, ২০১৮)