লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি : কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে আধিপত্য বিস্তাররের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষ চলাকালে মোটরসাইকেল, গাড়ি ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সাসহ অন্তত ২৫টি যানবাহন ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আগুন দেওয়া হয়েছে কমপক্ষে ৫টি মোটরসাইকেলে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলার সদরের মনোহরগঞ্জ বাজার, ঝলম উত্তর ইউনিয়নের বড় কেশতলা, লালচাঁদপুর ও ছিখোটিয়া এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

প্রতক্ষ্যদর্শী, স্থানীয় এলাকাবাসী ও দলীয় নেতাকর্মী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে উপজেলার ঝলম উত্তর ইউনিয়নের বড় কেশতলা গ্রামে কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ও লাকসাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম ওরফে চৈতি কালামের অনুসারী হুমায়ুন কবির পন্ডিতের বাড়িতে তাঁর বাবার কুলখানি অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য মনোহরগঞ্জে প্রবেশ করবেন আবুল কালাম।

এমন খবর পেয়ে উপজেলা বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদস্য সদস্য কর্ণেল (অব.) এম.আনোয়ারুল আজিমের অনুসারীরা নেতাকর্মীরা। সকাল ১১ টার পর থেকে উপজেলার সদরের মনোহরগঞ্জ বাজার, ঝলম উত্তর ইউনিয়নের বড় কেশতলা, লালচাঁদপুর ও ছিখোটিয়া এলাকা দিয়ে কালামের অনুসারীরা ও কালাম নিজে মনোহরগঞ্জে প্রবেশের চেষ্টা করলে আজিমের অনুসারীরা তাঁদের ধাওয়া করে।

এক পর্যায়ে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংর্ঘষ চলতে থাকে। এতে উভয় গ্রুপের অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হন। তবে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ওই বাড়িতে পৌছে কুলখানি অনুষ্ঠানে যোগদান করে মনোহরগঞ্জ এলাকা ত্যাগ করেন বিএনপি নেতা আবুল কালাম। এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে দু’টি মাইক্রোবাস, ৮/৯ টি মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সাসহ প্রায় ২৫টি যানবাহন ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এছাড়া ৫টি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।

মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি (আজিম গ্রুপ) মো.ইলিয়াছ পাটোয়রি বলেন, আজিম ভাইসহ আমাদের কোন নির্দেশনা না দেওয়া সত্ত্বেও বিএনপির তৃণমূল ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা কালামের সেই চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়েছেন।

বিএনপি নেতা আবুল কালামের গ্রুপে মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার জাহান ভূঁইয়া দোলন বলেন, কবির পন্ডিতের বাড়িতে আমাদের দাওয়ার করা হয়েছে। সেখানে যাবার সময় আমাদের উপর আক্রমনের চেষ্টা চালানো হয়েছে। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া আমাদের বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আনোয়ার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। তবে এখন পর্যন্ত বিএনপির কোন পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এসএস/এসপি/এপ্রিল ০৭, ২০১৮)