ধামরাই প্রতিনিধি : ধামরাইয়ে প্রাফিক্স ফ্যাক্টরি লিমিটেডের অপারেটর নারী শ্রমিককে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃদ পাচ ধষককে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে বিজ্ঞ আদালত। ধামরাই থানার পুলিশ হাতে নাতে গ্রেফতার কৃত ওই ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আরো গভীর তদন্তের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে সোমবার আদালতে প্রেরণ করেন। 

বিজ্ঞ আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বলে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানিয়েছে ধামরাই থানার ওসি শেখ রিজাউল হক দিপু।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই গণধর্ষণের শিকার ওই ধর্ষিতার ডাক্তারী (মেডিকেল টেষ্ট)পরীক্ষাও সম্পনন হয়েে বলে জানিয়েছেন।রিমান্ডে আনার পর আজ থেকে গ্রেফতার কৃতদের ব্যাপক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্তের স্বার্থে আগাম কিছু বলা ঠিক হবে না বলেণ ওসি রিজাউল হক দিপু।

চাঞ্চল্যকর এই গণধর্ষণের ঘটনায় ধামরাইয়ে সাধারণ মানুষের মুখে মুখে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। ডিইপিজেড সহ ধামরাই ও তার আশ পাশে হাজার হাজার গামেন্টস্ এ নারী শ্রমিকরা কাজ করছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছুটির সময় আলাদা। সন্ধ্যা ও রাত দশটা পর্যন্ত ছুটির সময় রয়েছে। কখনো কখনো ছুটির পর বাড়ি বা গন্তব্যে পৌছতে আরো বেশী রাত হয়ে যায়। রাতে পুলিশের জরুরী টহল তাকলেও ফাক ফোকর দিয়ে এম ঘটনা ঘটে পরিবেশকে কাপিয়ে তুলে । যা রবিবার গভীর রাতের গণধর্ষণের ঘটনা হাজারো নারী শ্রমিকদের মনে চরম নিরাপত্তা হীনতা ও আতংকের সৃষ্টি করেছে।

উল্লেখ্য, গত রবিবার গভীর রাতে ধামরাইয়ে প্রাফিক্স ফ্যাক্টরি লিমিটেডের অপারেটর নারী শ্রমিককে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের কালে হাতে নাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে পাঁচ ধর্ষক। সাত কিঃ মিঃ তাড়া করে গাড়ি সহ ধর্ষিতাকে উদ্ধার ও ধর্ষকদের আটক করেছে পুলিশ। উদ্ধার কৃত আলামত সহ ধর্ষিতাকে পুলিশ উদ্ধারের পর তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষাও সম্পন্ন করেছে।

রবিবার রাত সাড়ে এগারটায় ঢাকা আরিচা মহা সড়কের কসমস এলাকা থেকে বাস সহ এদের আটক করা হয়।এ ধর্ষণের শিকার হওয়ায় গার্মেন্টস কর্মী বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। সে কারো সাথে কোন কথা বলছেনু না। কর্মস্থলেও যাননি বলে জানা গেছে।

গ্রেফতার হওয়া ওই পাচ ধর্ষক উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছেও ধর্ষনর কথা শীকার করেছে।তারা কিভাবে এঘটনা ঘটিয়েছে তাও বলেছে।

গ্রেফতারকৃত ও রিমান্ডে আনা ওই পাঁচ অপরাধিরা হচ্ছে বাবু মল্লিক (২৫), চালক, মোঃ আজিজ (৩০)(৩), বলরাম (২০), সোহেল (২২), মুকবুল হোসেন (৩৮) কে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আজ সকাল সাড়ে দশটায় আদালতে পাঠিয়েছে ধামরাই থানা পুলিশ।

পুলিশ আরো দুই বাসের হেলপার ছিল। তারা অপ্রাপ্ত বয়সের বলে ও কোনো অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত নয় বিধায় তাদের ছেড়ে দেবার কথা বলেছেন ধামরাই থানার ওসি রিজাউল হক

ধর্ষিতা জানান, সে ধামরাই কালামপর এলাকায় গ্রাফিক্স ফ্যাক্টরি লিঃ এ অপারেট পদে এক জন শ্রমিক। প্রতিদিনের মত রবিবার ছুটির পর রাত ন’টার পরে ফ্যাক্টরির সামনে থেকে বাসায় আসার জন্য যাত্রীসেবা পরিবহনের একটি নং- ঢাকা, মেট্রো-জ-১৪- ০৮১৫ বাসে উঠেন। এরপর কালামপুর আসার পর সকল যাত্রী নামাইয়া দেয়া হয়। পরবর্তীতে ওই নারী শ্রমিকের গন্তব্যে ইসলামপুরের দিকে না আসিয়া এদিক সেদিক ছুটাছুটি করে রাত সাড়ে এগারটার দিকে জয়পুরা বাসস্ট্যান্ডের কিছু দুরে কেলিয়ার ভিতরে নির্জন সড়কে বাসের ভিতরে সিট পেতে ইচ্ছার বিরুদ্ধে মুখে চেপে ধরে ধর্ষণ করতে থাকে। অপরজন একেক একবার একজন গাড়ি চালাতে থাকে। এসময় ওই নারী শ্রমিকের মুখ কাপড় দিয়ে চেপে ধরে রাখে আরেক জন।

হঠাৎ মুখ থেকে হাত সরে গেলে মেয়েটির আত্মচিৎকারে পাশ্ববর্তী লোকজন ও পাল সিএনজির লোকজন পুলিশে ফোনে জানালে মহা সড়কে জরুরী ডিউটিরত পুলিশের এসআই ভজন রায় ও মলয় কুমার সাহা সহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ধাওয়া করে গাড়িটি বেরিকেড দিয়ে হাতে নাতে ধর্ষকদের আটক করে ও ধর্ষিতাকে উদ্ধারসহ যাত্রীসেবা পরিবহনের বাস নং- ঢাকা, মেট্রো-জ-১৪- ০৮১৫ গাড়িটি আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। এঘটনায় এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। এই সব ধর্ষকদের দেখতে থানায় উৎসুক মানুষ ভীড় জমে যায়। আজ রিমান্ডে আনার পরও উৎসুক মানুষের ভড়ি জমে।

ধামরাই থানার ওসি অপারেশন ও এমামলার আইও মোঃ জাকারিয়া বলেন থানায় একটি নিয়মিত ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৬ ,০৯-০৪-১৮ ইং এ বিষয়ে আরো তদন্ত চলছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন গ্রেফতাকৃত পাচ জনকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠালে বিজ্ঞ আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

এ ব্যাপারে ধামরাই থানা ওসি শেখ রিজাউল হক দিপু বলেন পুলিশ খুব তৎপর থাকায় দ্রুত জানতে পেরেই ছয়/সাত মাইল দৌড়িয়ে এদের ধরা হয়েছে। এই ধর্ষকদের আটক করে ভিকটিমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। পাঁচজনকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা পর আজ বিজ্ঞ আদালত থেকে রিমান্ডে আনা হয়েছে।

এছাড়া এই বাসে দুটি অপ্রাপ্ত বয়সের শিশু ছিলো তাদের বিরুদ্ধে কো প্রকার অভিযোগ না থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রিমান্ডের পরে জানতে পারবো ধর্ষিতাকে মেরে ফেলার চক্রান্ত ছিলো কিনা ও আরো কারা কারা জড়িত আছে কিনা তা বেড়িয়ে আসবে বলেন ওসি।


(ডিসিপি/এসপি/এপ্রিল ১০, ২০১৮)