শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : অনিয়ম আর দূনীর্তির রাহুগ্রাসে নিমর্জ্জিত হয়ে পড়েছে দিনাজপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। অফিস পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন হয়নি অনিয়ম, ঘুষ আর দুর্নীতি। অফিসের অফিস সহকারী, রেকর্ড কিপার, এমএলএসএস, নৈশ্য প্রহরী, নিরাপত্তা কর্মী আনসারই এখন দালালের ভুমিকায় নেমেছেন অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যে। ঘুষের টাকা না  পেলে নানা অজুহাতে মাসের পর মাস ঘুরাচ্ছেন পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের। ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হচ্ছে না এ অফিসে। এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে পাসপোর্ট গ্রহকরা। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। 

সরেজমিনে দিনাজপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন অজুহাতে পদে পদে হয়রানী’র শিকার হচ্ছেন পাসপোর্ট প্রত্যাশিতরা। আর ঘুষ দিলে সকল অবৈধ বৈধ হয়ে যাচ্ছে এখানে। বাসায় পৌছেঁ যাচ্ছে পাসপোর্ট।টাকা ছাড়া কোন কাজই হয় না দিনাজপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। কর্মকর্তা না হয়েও নিন্ম পদস্থ কর্মচারীরা কার্যালয়ের চেয়ারে বসে সেবার নামে উপার্জন করছে বাড়তি টাকা। অফিসের কর্মরতরাই এখন দালালের ভুমিকায় নেমেছেন অনিয়ম আর ঘুষ বাণিজ্যে।

দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ছেড়ে নিজস্ব কার্যালয়ে এখন চলছে দিনাজপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম। অফিস পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন হয়নি অনিয়ম, ঘুষ আর দুর্নীতি। বন্ধ হয়নি হয়রানী। পাসপোর্ট করতে এসে ঘুষ ছাড়া কোন সেবাই পায় না পাসপোর্ট প্রত্যাশিতরা। কাগজে কলমে সহকারী কর্মকর্তাসহ ৬ জন সরকারী নিয়োগপ্রাপ্ত জনবল থাকলেও চেয়ারে বসে কার্যক্রম চালাচ্ছেন বাড়তি আরও ১৩ জন।

অফিসের রেকর্ড কিপার আবু বককর, অফিস সহকারী সাথী, নৈশ্য প্রহরী সাহাবুদ্দিন, নিরাপত্তা আনসার কর্মী ছবি লাল এবং কর্মকর্তার নের্টওয়াকেই গড়ে উঠেছে দালালচক্র। এতে করে প্রতি পাসপোর্ট করতে বাড়তি এক হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের। আর টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালেই পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে তাদের। বিভিন্ন ভুলের অজুহাতে অফিসের লোকজন টাকা আদায় করছে। ৩ হাজার ৪’শ ৫০ টাকার স্থলে বিভিন্ন পদে পদে টাকা দিয়ে তা দাড়াচ্ছে ৬ হাজারে।

এখানে যারা কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে চেয়ারে বসে কাজ করছেন তারা কেউই সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নন। আনসার, আউটসোর্সিং কর্মচারী ও অফিসের পিওন হয়েই চেয়ারে বসে আদায় করছেন ঘুষের অর্থ। নিজেরা কর্মকর্তা নন, বিষয়টি স্বীকার করলেও বাড়তি অর্থ আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করেছেন তারা।

এত কিছু হয়ে গেলেও কিছুই জানেন না দিনাজপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রতিকা সরকার। কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, কোন অনিয়মের বিষয়ে অবগত হলে তিনি তার মত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

অফিসের স্থান পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন হয়নি দিনাজপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের অনিয়ম,দূর্নীতি ও ঘুষের দৌরাত্ম। এখানে প্রতিনিয়ত হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হচ্ছেন, পাসপোর্ট প্রত্যাশিরা। এসব থেকে মুক্তি পেতে উবর্ধতন কর্তৃপক্ষের একান্ত হস্তক্ষেপ করেছেন তারা।

(এসএএস/এসপি/এপ্রিল ১১, ২০১৮)