মোস্তাফিজ নোমান : বসন্তকে বিদায় জানিয়ে আসছে নতুন বছর। বাংলা নববর্ষ বাঙালির জীবনে একটি আনন্দময় উৎসব হিসেবে প্রাচীনকাল থেকে উদ্যাপিত হয়ে আসছে। সকল শ্রেনি পেশার মানুষ পহেলা বৈশাখ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করে থাকেন। নতুন বছর বরণ করে নিতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় নিচ্ছে ব্যাপক প্রস্তুতি। চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা গত ক‘দিন যাবত খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন। বৈশাখ বরনে তারা নানাভাবে প্রস্তুস্থি নিচ্ছে। ক্যাম্পাসকে সাজানো হয়েছে নববধুর সাজে। এ ছাড়া গ্রামীন ঐতিহ্যের ধারক বৈশাখী মেলার ও শুভাযাত্রার প্রস্তুস্তি নিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।  

প্রতিবারের মতো এবারও কবি নজরুলবিশ্ববিদ্যালয়েপহেলা বৈশাখে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিকী মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে বৈশাখী উৎসব পালনের জন্য দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম ও কর্মব্যস্ততায় দিনপার করছেন চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি বাঁশের চটা আর কাঁঠ দিয়ে শত ফিট লম্বা বিশাল আকৃতির কুমির হবে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রধান আকর্ষন। সঙ্গে অনুসাঙ্গিক সহায়ক হয়ে থাকবে কাল্পনিক পংক্ষীরাজ ঘোড়া, মোরগ, পেঁচাসহ গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী অনেক কৃর্তি। হুতুম পেঁচা, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহসহ বিভিন্ন আকৃতির তিন শতাধিক মুখোশ, পে-কার্ড, বাংলার লোকায়ত সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন প্রতিকৃতি দিয়ে বাঙালি সাজ-সজ্জার বেশ অনেকগুলো উপকরণ বহন করে ওইদিন সকাল ৯টায় বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা।

বুধবার সমগ্র ক্যাম্পাস ঘুরে পহেলা বৈশাখকে আমন্ত্রণ জানানোর এসব কর্মযজ্ঞ লক্ষ্য করা যায়। এ সময় চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাবিনা ইয়াসমিন স্বর্ণা, সুমাইয়া সুলতানা লিসা, কথিকা রক্ষিক, আশিবুল ইসলাম পিপুন, সাকিব, সেলিম রেজা, নিপু ও নাঈম সহ অন্যরা সমকাল প্রতিবেদককে জানান, বাঙালির গ্রামীণ ঐতিহ্যকে বুকে লালন করে রাখতে পহেলা বৈশাখে আমরা সাজবো বাঙালির সাজে। সাথে যোগ হবে চৈত্র সংক্লান্তি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারো পৌরশহরের বেশ ক‘টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও আমাদের সাথে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করবে।

চারুকলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নগরবাসি বর্মণ জানান, আমরা প্রতিবছর চেষ্টা করি সবচেয়ে ভালো আয়োজন করার। এ বছর পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রধান আকর্ষন হবে শত ফিট লম্বা কুমির। এছাড়া হুতুম পেঁচা, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহসহ বিভিন্ন আকৃতির তিন শতাধিক মুখোশ, প্লেকার্ড, বাংলার লোকায়ত সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন প্রতিকৃতি দিয়ে বাঙালি সাজ-সজ্জার বেশ অনেকগুলো উপকরণ থাকবে।

উপাচার্য প্রফেসর ড. এএইচএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা অশুভকে দূর করা, সত্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রতীক। এই শোভাযাত্রার মাধ্যমে বাঙালির ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, জাতিগত সব ধরনের বৈশিষ্ট্য এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের কাছে হস্তান্তর হচ্ছে।

(এন/এসপি/এপ্রিল ১২, ২০১৮)