শরীয়তপুর প্রতিনিধি : মাদক সেবন ও মাদক বিক্রির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় মাদক সেবিদের হামলা ও হাতুড়ি পেটার শিকার হয়েছেন শরীয়তপুর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ হোসেন মোহাম্মদ আলমগীর মৃধা। শুক্রবার সকালে কাগদী দক্ষিন পাড়া গ্রামে নিজ এলাকায় এ হামলার শিকার হন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য আলমগীরকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি শরীয়তপুরের পুলিশ প্রশাসন ও প্যানেল মেয়র আলমগীর মৃধার নেতৃত্বে কাগদি বাজারে একটি মাদক বিরোধী সমাবেশ হয়। সেখানে স্থানীয় কিছু চিহ্নিত মাদক সেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কথা বলেন প্যানেল মেয়র আলমগীর। তিনি ওই সকল মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানান। এছরাও সব সময় আলমগীর মৃধা মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।

শুক্রবার ফজরের নামাজ শেষে আলমগীর প্রাতঃভ্রমন করেন। এরপর সে সকাল ৭ টার দিকে কাগদী বাজারে এসে একটি চায়ের দোকানে চা পান করছিলেন। পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা শরীয়তপুর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাগদি এলাকার রমিজ উদ্দিন বেপারীর ছেলে মাদক ব্যবসায়ী শাহজালাল বেপারী, হারুন মাদবরের ছেলে জালাল মাদবর ও জলিল শেখের ছেলে সাদ্দাম সহ আরো কয়েকজন মিলে আলগীরের উপর অতর্কিতে হামলা করে।

হামলাকারীরা আলমগীরের মাথায় ও ঘাড়ে এলোপাতারীভাবে হাঁতুড়ি দিয়ে পেটাতে থাকে। মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মুহুর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পরে জ্ঞান হারায় আলমগীর। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আলমগীর মৃধার মাথার আঘাত গুরতর হওয়ায় শরীয়তপুরের চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আলমগীরের স্ত্রী পারভীন আক্তার বাদী হয়ে শরীয়তপুর সদর পালং মডেল থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। কয়েকমাস আগেও মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলায় এক মসজিদের ঈমানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছিল মাদকাসক্তরা। তার কোন সঠিক বিচার হওয়ায় আলমগীরের উপর এ হামলার সাহস পেয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল বলেন, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ ও ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হোসেন মোহাম্মদ আলমগীর মৃধা সব সময়ই মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে।

স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবিদের সুপথে ফিরিয়ে আনতে তিনি অনেক উদ্যোগও গ্রহন করেছেন। সম্প্রতি একটি মাদক বিরোধী সভায় আলমগীর চিহ্নিত মাদকাসক্ত ও মাদক বিরোধীদের বিষয়ে আলোচনা করায় তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা করা হয়। আমি হামলাকারিদের গ্রেফতার পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশানকে অনুরোধ করবো।

শরীয়তপুর সদর পালং মডেল থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, প্যানেল মেয়রে উপর হামলাকারিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ তাদের আটকের চেষ্টা করছে।

(কেএনআই/এসপি/এপ্রিল ১৩, ২০১৮)