কালিয়া প্রতিনিধি : অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে গেছে চিকিৎসা। এখনও ক্ষত শুকায়নি,ঝরে পুজ। সেই রাতের কমান্ডো ষ্টাইলে সন্ত্রাসীদের হামলার দৃশ্য মনে পড়লে এখনও আতকে ওঠেন সেই সাংবাদিক দম্পতি ও তার পরিবার। দৈনিক সমকালের নড়াইলের কালিয়া প্রতিনিধি ও কালিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মশিউল ০৯,২০১৪)হক মিটু ও তার স্ত্রী রিনা বেগমকে গুলি ও বোমা ছুড়ে হত্যা প্রচেষ্টা ঘটনার তিনটি বছর পেরিয়ে গেল। গত ২০১১ সালের ১০ জুলাই গভীর রাতে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী হাসনাত মোল্যার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তার বাড়িতে গুলি ও বোমা হামলা চালিয়ে ওই সাংবাদিক দম্পতিকে হত্যার চেষ্টা চালায়। ওই হামলায় তাদের দুজনকেই পঙ্গুত্ব বরন করতে হয়েছে। সুচিকিৎসার ব্যাবস্থা, ন্যায় বিচার ও নিরাপত্তাই এখন তাদের পরিবারের দাবি। মামলার প্রধান আসামীরা জামিনে বেরিয়ে যাওয়ায় গোটা পরিবারই ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়। আসামীদের আস্পালনের কারনে আদালতে স্বাক্ষ্য প্রমান উপস্থাপন করা তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে বলে তাদের  অভিযোগ।

জানা যায়, স্থানীয় চরমপন্থী সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি সহ নানা অপকর্মে বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণে কলাবাড়িয়া গ্রামের মৃত জহুর মোল্যার পুত্র হাসনাত মোল্যার নেতৃত্বে একদল স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী ওই রাতে সাংবাদিক মিটুর বাসভবনে গুলি ও বোমা হামলা চালালে সাংবাদিক মিটুর ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী উড়ে যায়। বুকে বিদ্ধ হয় বোমার স্পিলিন্টার স্ত্রী রিনার মাথায় ও মুখে গুলি বিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হয়। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে তারা প্রাণে বেঁচে গেলেও তাদেরকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে। ওই ঘটনায় মিটুর ভাই বাদি হয়ে ১১ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় পুলিশ হত্যা প্রচেষ্ট ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি অভিযোগ পত্র আদালতে দাখিল করে। সাংবাদিক মিটু ও তার পারিবারিক সুত্র জানায় এর মধ্যে হত্যা প্রচেষ্টা মামলায় আদালত সকল আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে স্বাক্ষের দিন ধার্য্য করেছেন। অপর দিকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দাখিলকৃত মামলার অভিযোগ গঠনের সময় সন্ত্রাসীদের নেতা হাসনাত মোল্যা সহ কেরামত মোল্যা,আজাদ মীর,অরিফ মীর,মনির মীর, রুবেল মীর, ফারুক মীর,রিয়াজ খন্দকারকে আদালত অব্যাহতি দেয়ায় হাসনাত মোল্যা মিষ্ঠি বিতরন ও বিজয় উল্লাস করায় সাংবাদিক মিটুর পরিবার ও মামলার স্বাক্ষীরা আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আদালতে স্বাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপনও তাদের জীবনের ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। উল্লেখ্য যে, সাংবাদিক মিটুর উপর হামলার ঘটনায় দায়ের কৃত মামলার আসামীদের মধ্যে হাসনাত মোল্যা, শের আলী, মনির মীর, রুবেল মীর, মেহেদী খন্দকার,রিয়াজ খন্দকার উচ্চ আদালতের জামিনে রয়েছে। এবং কেরামত মোল্যা,লাকি ওরফে মিলন মীর, আজাদ মীর, আরিফ মীর ও ফারুক মীর ঘটনার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি রয়েছে। অনেকে আবার মামলার পাশাপাশি পুলিশ সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তালিকা ভুক্তো সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকলেও পুলিশ যেমন তাদের টিকিও স্পর্শ করতে পারছেনা, তেমন ভুক্তোভোগীরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের তো দুরের মুখ খুলতেও সাহস পায়না বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই হামলাকারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি সহ ন্যায় বিচার নিশ্চিত, হামলায় ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার,সাংবাদিক মিটুর নিরাপত্তা বিধান ও সুচিকিৎসার ব্যাবস্থা করতে এলাকার কর্মরত সাংবাদিকরা ও বিভিন্ন মহল প্রধানমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট সকলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

(এমএইচএম/পি/জুলাই ০৯,২০১৪)