গলাচিপা প্রতিনিধি : বছরের পর বছর ধরে প্রচন্ড জরাজীর্ণ ভবনের মধ্যে চলছে পটুয়াখালীর গলাচিপা শাখা সোনালী ব্যাংকের কার্যক্রম। ব্যাংকের ভল্ট কক্ষের দেয়ালের দু’ পাশের ফাটল মারাত্মক আকার নিয়েছে। ভল্ট রক্ষায় তাই লাগানো হয়েছে টিন।

যা পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করেছে। ব্যাংকের ছাদেও ফাটল ধরেছে। বর্ষায় অঝোরে তা দিয়ে চুইয়ে পানি পড়ছে। এতে মূল্যবান কাগজপত্র ভিজে সব একাকার হয়ে যাচ্ছে।

দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। বিমের রড বেরিয়ে পড়েছে। মোট কথা ভবনটি এতটাই ঝূকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে যে, এর কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে গ্রাহক, সবার মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যে কোন মূহুর্তে পুরো ভবনটি ধসে পড়তে পারে।

এছাড়া, সবার মাথার ওপর ঝুলছে বিদ্যুতের নড়বড়ে তার। এদিয়েও ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। এ অবস্থায় সোনালী ব্যাংক গলাচিপা শাখা অন্যত্র স্থানান্তরে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার লিখিত আবেদন করলেও কোন সুরাহা হয়নি। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সকলকে কাজ করতে হচ্ছে।

গলাচিপা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংক শাখার কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৬৬ সালে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান নামে। ওই সময়ে গলাচিপা সদর ইউনিয়ন পরিষদের কাছ থেকে ভবনটি ভাড়া নেয়া হয়েছিল। এরপরে দীর্ঘ ৪৮ বছর কেটে গেছে। কিন্তু ভবন সংস্কারে কখনই গুরুত্ব দেয়া হয়নি। অথচ এ সময়ের মধ্যে ব্যাংকের কার্যক্রমের পরিধি বেড়েছে অনেক। বেড়েছে লোকবল। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঠাসাটাসি করে বসে কাজকর্ম করতে হচ্ছে।

বিশেষ করে প্রতি মাসে শিক্ষকদের বেতন ভাতা পরিশোধের সময় ব্যাংকের ভিতরে দুঃসহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, সম্প্রতি গলাচিপা শহরে একাধিক ব্যাংক দূর্ঘটনা বিশেষ করে গত ১৩ জুন রাতে পূবালী ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা কালে দুই ডাকাত আটক হয়। এ ধরণের দূঘর্টনার ভয় ছাড়াও অবকাঠামোগত দূর্বলতার কারণে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ভল্টে প্রয়োজনীয় নগদ টাকা সংরক্ষণ করছেন না। ফলে গ্রাহকদের নগদ টাকা পরিশোধ নিয়ে কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রায়ই পটুয়াখালী কিংবা স্থানীয় অন্য ব্যাংক থেকে নগদ টাকা আনতে হচ্ছে।

বর্তমানে গলাচিপা শাখা সোনালী ব্যাংক থেকে উপজেলার সকল পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা-কর্র্মচারীদের বেতন ভাতা, অবসর ভাতা, কল্যাণ ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ছাড়াও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বিধবা, বয়স্ক, মাতৃত্বকালীণ ভাতা, উপজেলার বেসরকারী সমস্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্র্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধ করা হয়। ফলে ব্যাংকটিতে কাজের চাপ অন্যান্য ব্যাংকগুলো থেকে অনেক বেশি। একদিকে কাজের চাপ। অন্যদিকে ভবন ধসে পড়ার মতো ঝূঁকি। এরমধ্যেই কাজ করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। গ্রাহকরাও পোহাচ্ছেন চরম দুর্ভোগ।

এ বিষয়ে গলাচিপা সোনালী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাংক শাখায় সংঘটিত ডাকাতির কারণে ব্যাংকের ভল্টে সীমিত পর্যায়ে নগদ টাকা সংরক্ষণের কর্তৃপক্ষের নির্দেশ রয়েছে। যে কারণে গ্রাহকরা কিছুটা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তারপরেও গ্রাহকদের সেবার মান বজায় রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা রয়েছে। ব্যাংক শাখাটি অন্যত্র স্থানান্তরের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। #

(এসএলডি/এস/জুলাই ০৯, ২০১৪)