ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ১৪ বছরের এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তকে ছেড়ে দিয়ে মীমাংসার মাধ্যমে স্থানীয় প্রভাবশালীরা এ ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের হুমকির মুখে ঘটনা চেপে রাখতে বাধ্য হয় কিশোরীর পরিবার। পরে এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও এখনও আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

বাদী পক্ষের অভিযোগ, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাদের ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছে। সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিয়ার রহমান জানান, আসামি পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না।

গত (১০ এপ্রিল) সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ছাতিনামারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত কালাম মিয়া (২৩) ওই গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে।

কিশোরীর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন বিকালে বাড়ির পাশে বাঁশ ঝাড়ে খড়ি কুড়াতে যায় ওই কিশোরী। সেখানে তাকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে কালাম মিয়া। এ সময় কিশোরীর চিৎকারে আশপাশের লোক এগিয়ে এসে কামালকে হাতেনাতে আটক করে।

কিশোরীর স্বজনদের অভিযোগ, ধর্ষক কালামকে ছেড়ে দিয়ে আপোস-মীমাংসার জন্য চাপ দেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী কয়েকজন। এরপর থেকে বিভিন্ন হুমকি আর ও ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন ধর্ষকের স্বজন ও প্রভাবশালীরা। এক পর্যায়ে ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। অব্যাহত হুমকির মুখে মামলা না করে মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় কিশোরীটির পরিবার।

ঘটনার এক সপ্তাহ পরও কোনও মীমাংসা না হলে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা বাদী হয়ে বুধবার (১৮ এপ্রিল) সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এর পর তিন দিনেও অভিযুক্ত আসামি কালামকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। বাদীর অভিযোগ, এখন আসামির পক্ষে তার স্বজন ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা মামলা তুলে নিয়ে আপোসের জন্য হুমকি দিচ্ছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। পরে মেয়েটির জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত।

জানতে চাইলে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিয়ার রহমান বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা ও আদালতে জবানবন্দি গ্রহণের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্ত কালাম পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তাকে গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যহত আছে।’


(এসআইআর/এসপি/এপ্রিল ২০, ২০১৮)