স্বাস্থ্য ডেস্ক : তরমুজ হচ্ছে একটি রসালো ফল যার মাঝে অনেক পানি থাকে। গরমের দুপুরে লালচে শাসযুক্ত এই ফলটির তুলনাই হয় না। দেহের সতেজতা আনা এই ফলটি আমাদের দেশে গরমের সময় পাওয়া যায় এবং কিছুটা সাশ্রয়ী। তরমুজে থাকে ৬% চিনি এবং ৯২% পানি। আমাদের দেশে মূলত এই ফলটির লাল রঙেরই বেশি পাওয়া যায় এবং এই রঙটি এসে থাকে তরমুজে থাকা লিউকোপিন নামক যৌগের উপস্থিতির কারনে।

লাল রঙের অন্য ফল বা সবজিতেও যেমন টমেটোতেও এই যৌগটি থাকে। সাধারণত দেখা যায় তরমুজ খাওয়ার পর আমরা এর বিচি গুলো ফেলে দেই। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে এই তরমুজের বিচিরই অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে।

তবে অনেকেই তরমুজ খাওয়ার পর বিচি ফেলে দিই। তরমুজের বিচি হজম পদ্ধতিতে সাহায্য করে। তবে আস্ত বিচি খেলে পরিপাক নালি তাদের অক্ষতভাবে বের করে দেয়। তাই এর উপকারিতা তেমন পাওয়া যায় না। যদি তরমুজের বিচির উপকারিতা পেতে চান, তবে অবশ্যই একে সেদ্ধ করে গুঁড়ো করে খেতে হবে। এমনটাই জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলদি ফুড টিম ডটকম।

তরমুজের বিচি অন্ত্রের প্যারাসাইটের বিরুদ্ধে কাজ করে। যাঁরা জন্ডিসের সমস্যায় ভুগছেন এবং প্রদাহজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য এটি উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রক্ত ধমনি বৃদ্ধিতে কাজ করে। এটি উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ রোধে সাহায্য করে। বিংশ শতাব্দীতে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা বলেন, তরমুজের বিচি কিডনি ও প্রস্রাবের সমস্যায় অনেক উপকারী উপাদান।

গবেষকরা আরো বলেন, তাজা তরমুজের বিচি ব্যবহার করে চাও পান করতে পারেন আপনি; এটি শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের পাথর বের করে দিতে কাজ করে। এতে শরীরের পেশি ও হৃৎপিণ্ড ভালো থাকবে। তরমুজের বিচি মনোযোগ এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে। চায়ের জন্য যেসব বিচি তৈরি করা হয়, সেগুলো ডায়াবেটিস রোধে উপকারী। পুরুষের কামশক্তি বাড়াতেও কাজ করে এটি। এর মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন-এ, বি ও সি, আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, পলিআনস্যাচুরেটেট এবং মনোস্যাচুরেটেট চর্বি।

চা তৈরিকরণ প্রক্রিয়া:

চার চা চামচ ফ্রেশ তরমুজের বিচি নিন। এর পর এগুলো গুঁড়া গুঁড়া করুন। দুই লিটার পানিতে সেই গুঁড়া নিয়ে সেদ্ধ করুন ১৫ মিনিট। তরমুজের বিচি দিয়ে তৈরি এই চা আপনি দুদিন পর্যন্ত খান। এর পর তৃতীয় দিন চা পানে বিরতি দিন। এ প্রক্রিয়ায় দ্রবণটি পান করা অব্যাহত রাখুন কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত। তরমুজের বিচির গুঁড়া যেহেতু একেবারেই প্রাকৃতিক, তাই এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২০, ২০১৮)