শেরপুর প্রতিনিধি : জোড়ালো বক্তব্য, যুক্তি, পাল্টা যুক্তি ও যুক্তি খ-নের মধ্য দিয়ে শনিবার শেরপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘বসুন্ধরা খাতা-কালের কণ্ঠ জাতীয় স্কুল বিতর্ক’ প্রতিযোগিতা। শহরের আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুলিশ লাইন একাডেমী ফর ক্রিয়েটিভ এডুকেশন (প্লেস) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় শহরের সব বিদ্যালয়কে টেক্কা দিয়ে বাজিমাত করেছে প্রত্যন্ত পল্লীতে অবস্থিত নকলা উপজেলার নয়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়। জেলার আটটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের মধ্যে অনুষ্ঠিত যুক্তিতর্কের এ লড়াইয়ে তারা সেরা নির্বাচিত হয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেছে।

কালেরকন্ঠ পাঠক সংগঠন শুভসংঘের আয়োজনে সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া প্রাণবন্ত এ বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি অতিরিক্তি ডিআইজি পদোন্নাতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল হাসান গণি।

এসময় পুলিশ লাইন একাডেমীর উপাধ্যক্ষ বিভুতি ভুষণ মিত্রের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি সহকারি পুলিশ সুপার মিথুন সরকার, সাংবাদিক এম.এ হাকাম হীরা, শেরপুর ডিস্ট্রিক্ট ডিবেট ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক এসএম ইমতিয়াজ চৌধুরী শৈবাল, সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি জোবাইদা খাতুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এসময় কালেরকন্ঠ শুভসংঘ সহ-সাধারণ সম্পাদক বিতার্কিক এমদাদুল হক রিপনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন কালেরকন্ঠের শেরপুর জেলা প্রতিনিধি হাকিম বাবুল।

প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার মো. রফিকুল হাসান গণি তাঁর বক্তব্যে বলেন, যুক্তির তর্কই হলো বিতর্ক। বিতর্ক একজন মানুষকে যুক্তিবান, প্রজ্ঞাবান, সহনশীল, জ্ঞানবান করে তোলে। জ্ঞান মনের অন্ধকার দুরিভুত করে মানুষের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করে। মানুষ যত জ্ঞানের চর্চা করবে, সমাজে ততোই হিংসা-বিদ্বেষ, অপরাধ প্রবণতা কমবে।

এ বিতর্ক প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠতে সহায়তা করবে। তিনি দেশব্যাপী জাতীয় স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন করায় বসুন্ধরা খাতা-কালেরকন্ঠ শুভসংঘকে অভিনন্দন জানান।

উদ্বোধনী পর্বের সভাপতি বিভুতি ভুষণ মিত্র বলেন, শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের পাশাপাশি যুক্তিনির্ভর সমাজ গঠনে এ বিতর্ক প্রতিযোগিতা কার্যকর ভুমিকা রাখবে। সুস্থ্য প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যুক্তিবান মানুষ গড়ে ওঠবে, যারা সমাজকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে। এ ধরনের আয়োজন যতো বেশী হবে, ততো বেশী সমাজ উপকৃত হবে।

প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া স্কুলগুলো হলো-সদর উপজেলার সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমী, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নবারুণ পাবলিক স্কুল, আইডিয়াল প্রিপারেটরি এন্ড হাই স্কুল, পুলি, লাইন একাডেমী ফর ক্রিয়েটিভ এডুকেশন, অনুরণ এক্সক্লুসিভ স্কুল, উত্তরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এবং নকলা উপজেলার নয়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়।

চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় শহরের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়কে হারিয়ে সেরা নকলার নয়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়। এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন শেরপুর সরকারী কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো. আব্দুল কাদের, কবি হাসানুজ্জামান শরাফত, শেরপুর ডিস্ট্রিক্ট ডিবেট ফেডারেশনের সভাপতি দেবাশীষ ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক এসএম ইমতিয়াজ চৌধুরী শৈবাল, শেরপুর সরকারি কলেজ ডিবেটিং ক্লাবের সাবেক সভাপতি এমদাদুল হক রিপন, শুভংকর সাহা, এম.এ.হাকাম হীরা, সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি জোবাইদা খাতুন। অনুষ্ঠানে সকল প্রতিযোগিকে সনদপত্র, টি-শার্ট ও স্কুলগুলোকে ক্রেস্ট দেওয়া হয়। এছাড়া উপহার হিসেবে সব প্রতিযোগী ও উপস্থিত শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় বসুন্ধরা খাতা।

প্রতিযোগিতায় অন্যদের মধ্যে কালেরকণ্ঠ শুভসংঘ শেরপুর জেলা কমিটির উপদেষ্টা জনউদ্যোগ আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, শুভসংঘ সভাপতি মো. শামীম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেডের এসিসট্যান্ট সেলস এক্সিকিউটিভ মো. জাকির হোসেন, সাংবাদিক শরিফুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া সহযোগিতায় ছিলেন শুভসংঘ ও শেরপুর ডিস্ট্রিক্ট ডিবেট ফেডারেশন সদস্য তানভীর রানা, রিফাত, ফারাভী ও কাউসার।

(এসআর/এসপি/এপ্রিল ২১, ২০১৮)