বদরুন নাহার : চারদিকে পানি। একদিনের টানা বর্ষণে খেই হারিয়ে ফেলেছে নরসিংদী জেলার মাধবদী পৌরসভার আনন্দী গ্রামবাসী। পরিকল্পিত উন্নয়নের অভাব ও পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামের বিভিন্ন রাস্তাসহ বাড়ির উঠানগুলোতে জমেছে হাঁটু পানি, কোথাও পানি জমেছে কোমর পর্যন্ত।

শনিবার(২১ এপ্রিল)সকাল থেকে অবিরাম বৃষ্টি হওয়ায় গ্রাম থেকে বাজারে যাবার প্রধান সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে ভোগান্তিতে পরে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামীসহ নানা পেশার কর্মজীবী মানুষ। পানিবন্দি হয়ে পড়ে পুরো গ্রামবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, জলাবদ্ধ হয়ে প্রধান সড়কপথ চলাচলের অযোগ্য হয়ে আছে। কোথাও কোমর, কোথাও হাঁটু পানি জমেছে। ছোট ছোট যানবাহনও ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে এই জমে থাকা পানির মধ্যে। পানি জমার কারণে অচল হয়ে পড়ছে ব্যবসা বাণিজ্য। এছাড়াও ঋষিপাড়ার ১৫/২০টি ঘড় তলিয়ে আছে পানিতে।

পানিতে আটকে পড়া বাড়ির বাসিন্দা তসলিমা বেগম বলেন, জমে থাকা পানির কারণে বাড়িতে রান্না করতে সমস্যা হচ্ছে। আমার মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাকে আমরা স্কুলে পাঠাতে পাড়ছি না। একবার স্কুলে পাঠাতে গিয়ে পানিতে পড়ে বইখাতা সব ভিজে গেছে।

ভুক্তভোগী ইদ্রিস মিয়া বলেন, পানি জমার কারণে কাজকর্ম ফেলে একেবারেই অচল হয়ে আছি। নামাজেও যেতে পাড়ি না। সন্ধ্যার আগেই ঘরে ঢুকতে হচ্ছে।

হানিফ নামের এক দোকানি বলেন, তাঁর সংসারের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে মুদির একটি দোকান। কিন্তু সামনের রাস্তায় পানি জমে থাকায় দোকানটিও বন্ধ। অলস সময় পার করা ছাড়া তাঁর আর কিছুই করার নেই। তিনি আরও জানান, আগে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার টাকার বিক্রি হতো। কিন্তু আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৫০০ টাকা বিক্রি করতে পেরেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনুর রহমান জনান, একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তার বাড়ি হাঁটু পানিতে তলিয়ে আছে। কারণ, পয় নিষ্কাসনের যেসব ড্রেন আছে সেগুলো বন্ধ হয়ে আছে। বেশিরভাগ এলাকায় নেই কোন ড্রেন। এতে করে পানি আর নামতে পারছে না। যার ফলে ভোগান্তিতে আছে পুরো গ্রামবাসী।
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড(১১নং) কমিশনার এ. আর বোরহান মিয়া বলেন, রাস্তায় পানি জমে থাকার কারণে তিনি আনন্দী ১১নং ওয়ার্ডের জন্য ড্রেনের প্রস্তাব রাখেন। সেটি মঞ্জুর হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তবে কিন্তু ড্রেনের কাজ কবে নাগাদ শুরু হবে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তা এখনো জানা যায়নি।

(এসএস/বিএন/এপ্রিল ২২, ২০১৮)