স্টাফ রিপোর্টার : সাভারে সুপার ক্লিনিকে এক নবজাতককে পাচার করতে না পেরে মৃত বাচ্চাকে প্রায় ৪০ ঘন্টা আটকে রেখে টাকা আদায়ের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর হাসপাতালে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। এসময় কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে কৌশলে মৃত বাচ্চাসহ রোগীটিকে সরিয়ে ফেলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার প্রসব ব্যাথা উঠলে আসমা আক্তারকে সুপার ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আসমাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। এসময় ডা: সামসুল ইসলাম লিটন সুপার ক্লিনিকে ভর্তি হওয়া আসমার সিজার করেন।

সিজার হওয়ার পর শিশুটির শারিরীক অবস্থার কিছুটা অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকেলে শিশুটি মারা যায়। এরপর থেকে মৃত শিশুটিসহ আসমিকে আটকে রেখে হাসপাতালের প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা বিল আদায়ের জন্য চাপ দিতে থাকে।

মৃত নবজাতকের মা আছমা আক্তার বলেন, ডাক্তার লিটন ফারুক নামে একজন লোক নিয়ে আসেন যিনি আমার সন্তান প্রসবের সমস্ত খরচ বহন করবেন এবং জন্মের কয়েকদিন পরে শিশুটিকে নিয়ে যাবেন। তার কথায় রাজি হয়ে আমি সুপার ক্লিনিকে ভর্তি হই। কিন্তু আমার বাচ্চাটি শনিবার বিকেলে মারা যাওয়ার পর থেকে ফারুক নামে ওই লোককে আর হাসপাতালে দেখা যায়নি।

ডাক্তার লিটনও বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ফারুক নামের লোকটি হাসপাতালের খরচ বহন করবেন ও শিশুটিকে নিয়ে যাবেন এই শর্তেই আসমাকে সুপার ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। কিন্তু বাচ্চাটি মারা যাওয়ার পর ফারুক নামের সেই লোকটি না আসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিল ছাড়া রোগীকে ছাড়পত্র দিচ্ছেনা।

সুপার ক্লিনিকের পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, নবজাতক মৃত্যুর বিষয়ে শনিবার রাতেই ফয়সালা হয়ে গেছে। আপনারা সাংবাদিকরা বিষয়টি নিয়ে কেন ঘোল পাকাচ্ছেন? এসময় তিনি মা এবং শিশুর লাশ আটকে রাখার বিষয়টি ভূল বলেও দাবি করেন।

উল্লেখ্য, এর আগে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগে সাভারের সুপার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভাঙচুর চালিয়েছেন রোগীর স্বজনরা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে ক্লিনিক কতৃপক্ষ।

জানা গেছে, পেটে ব্যথা নিয়ে রবিবার দিনগত রাত ৩টার দিকে ক্লিনিকে ভর্তি হন পৌরসভার চাঁপাইন মহল্লার মৃত মোহাম্মদ মজিদের ছেলে হায়দার আলী (৫০)। সকাল ১০টার দিকে তার তলপেটে আবারো ব্যথা উঠলে চিকিৎসকরা তাকে একটি ‘ল্যাসিকস’ ইনজেকশন দেন। এর পরপরই মৃত্যুর হয় তার
তার আগে চিকিৎকের অবহেলায় জাহানারা খাতুন (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এই সুপার ক্লিনিক থেকে।

(টি/এসপি/এপ্রিল ২৩, ২০১৮)