ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : বন্যায় বিধ্বস্ত হওয়ার ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের দক্ষিণ গিদারী কালির বাজার গ্রামে নালার উপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়নি। বর্তমানে ভেঙে যাওয়ার কারণে সেতুস্থলে তৈরি করা বাঁশের সাঁকোটির উপর দিয়েও মানুষ চলাচল করতে পারছে না। ফলে সাঁকোর নিচে শুকনো নালা দিয়ে কষ্ট করে মানুষ চলাচল করছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগেই সাঁকোটি মেরামত না হলে যাতায়াতে সাতটি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ ও ছাত্রছাত্রীকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হবে।

স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ১২ বছর আগে প্রবল পানির চাপে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চরকেরঘাট এলাকায় প্রায় ১৫০ ফুট ভেঙে গেলে দক্ষিণ গিদারী কালির বাজার গ্রামে নালার উপর সেতুটি ভেঙে যায়। এরপর ওই সেতুস্থলে একটি সাঁকো নির্মাণ করা হয়। পরে সেটি প্রতিবছর মেরামত করা হয়। কিন্তু গত বর্ষা মৌসুমের পর আর সাঁকোটি মেরামত না করায় সোনাইলের ভিটা, চরপাড়া, বালিয়ার ছড়া, কালির বাজার, প্রধানের বাজার, বারো ডিগ্রি, খলিসার পটল গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ ও ছাত্রছাত্রীকে চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। চালকরা অটোরিকশা, রিকসা-ভ্যান, সাইকেল-মোটরসাইকেল চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

কালির বাজার গ্রামের সমাজসেবক খন্দকার শাফায়েতুর রহমান সাফী বলেন, সাঁকোটির উপর দিয়ে চলাচল করতে না পারায় আমাদেরকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা কষ্টের শিকার হতে হচ্ছে বেশি। সামনে বর্ষার আগে সাঁকোটি চালু করতে না পারলে আমাদের কষ্টের শেষ থাকবে না।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল বলেন, ওই স্থানে সেতু নির্মাণের দাবিতে আমরা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আজও সেখানে একটি সেতু নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেয়নি।

গিদারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ ইদু বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের অল্প বাজেটে সাঁকোটি মেরামত করা হয়। যার কারণে সেটি বেশিদিন টেকসই হয় না। চলাচল নির্বিঘ্ন করতে খুব শিগগির সাঁকোটি আবারো মেরামত করা হবে।

সদর উপজেলা পরিষদের প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ মোল্লা বলেন, সেঁতুটি নির্মাণের জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন হয়েছে। সেটি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রায় ছয় মাস লাগে। আশা করি, আগামী জুলাই-আগস্ট মাসের দিকে আমরা টেন্ডার করতে পারব। এরপরেই কাজ শুরু করা হবে।

সেতু নির্মাণ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আপাতত বাঁশের সাঁকোটি মেরামত করা যায় কিনা প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে প্রকৌশলী বলেন, বিষয়টি নিয়ে ১২ এপ্রিল উপজেলা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এজন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে সাঁকোটি মেরামতের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

(এসআইআর/এসপি/এপ্রিল ২৪, ২০১৮)