সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের কৃষকরা প্রাকৃতিক দূর্যোগ সহ নানাবিধ সংকট মোকাবেলা করেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হচ্ছে তাদেরকে। গতবছর আগাম বন্যায় কৃষকদের সব বোরো পাঁকা ধান তলিয়ে গিয়েছিল। এবার সেই শোক ভুলে গিয়ে জমিতে বাম্পার ফলন ফলালেও শ্রমিক সংকটে কৃষখরা দিশেহারা। এক মন অর্থাৎ ৪০ কেজি পাকা ধানের মূল্য দিয়েও মিলছে না একজন শ্রমিক। এতে নিরুপায় হয়েই এরচেয়ে বেশি মূল্য দিয়ে শ্রমিক কিনে বোরো পাকা ধান কাটতে হচ্ছে তাদেরকে। 

কেন্দুয়া উপজেলার সাজিউড়া, বানিয়াগাতি, হারুলিয়া, তেতুলিয়া, সাগুলী, পালড়া, গগডা, মোজাফরপুর গ্রামের অনেক কৃষক খালিয়াজুড়ি উপজেলার ফেনি, ধর্মাই ও বর্ণি হাওড়ে জিরাতি হিসেবে এক ফসলী বোরো জমি আবাদ করতে যান প্রতিবছর।

সাজিউড়া গ্রামের পূর্বপাড়ার কৃষক জিল্লুর রহমান বলেন ফেনির হাওড়ে পুরাপুরি ধানকাটা শুরু হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকটের কারনে তারা ধানকাটা নিয়ে এখনও অনেক বেকায়দায় আছেন।

তিনি বলেন, পাঁকা ধান কেটে খলায় বিক্রি করতে ৬ শ থেকে ৬ শ ৫০ টাকার বেশি মূল্য পাওয়া যায় না। তা ছাড়া ওজনেও দিতে হয় এক মনের জায়গায় ৫০ কেজির মত।

একই গ্রামের সজিদ মিয়া বলেন, একজন কৃষি শ্রমিককে একদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ধান কাটার জন্য ৭ শ থেকে ৮ শ টাকা দিতে হয়।

তিনি বলেন, ১ মন ধানের মূল্য ৬ শ থেকে ৬ শ ৫০ টাকা আর একজন শ্রমিকের মূল্য ৭শ থেকে ৮ শ টাকা। অর্থাৎ ১ মন ধানের মূল্য দিয়েও একজন শ্রমিক মিলানো যাচ্ছে না।

একই কথা বলেন বানিয়াগাতি, হারুলিয়া, বাট্টা, গগডা গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষক। মুঠো ফোনেই শনিবার তাদেরকে ধানকাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা এ মন্তব্য করেন।

বাট্টা গ্রামের কৃষক শিক্ষক একে.এম মুখসুমুল হাকিম মনু বলেন, তিনি প্রতি মন ধান খলায় রেখে ৭ শ টাকায় বিক্রি করছেন। তবে নগদ টাকায় নয় বাকিতে । ওই টাকা আষাঢ় মাসে পরিশোধ করবেন মহাজনরা। জমিতে সার, কীটনাশক, নিরানী, সেচ সহ ১০ শতাংশ জমিতে যে খরচ হয় সেই খরচ মেটাতে প্রায় অর্ধেকের চেয়ে বেশি ধানের মূল্য চলে যায়। তিনি প্রতিমন ধান ১ হাজার টাকা নির্ধারনের জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।

(এসবি/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০১৮)