স্বাস্থ্য ডেস্ক : অসলে প্রতিদিন এক গ্লাস করে গাজরের রস পান করলে দেহের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। ফলে শরীর ভিতর থেকে এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকারিতা। যেমন ধরুন... 

রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না:

রক্ত তরল অবস্থায় থাকবে, এটাই তো স্বাভাবিক ঘটনা। তাই তো কোনও কারণে ব্লাড ক্লট বাঁধতে শুরু করলেই বিপদ! সেক্ষেত্রে একের পর এক জটিল রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। ফলে আয়ু কমে চোখে পরার মতো। প্রসঙ্গত, এমনটা যাতে আপনার সঙ্গে না ঘটে, তা সুনিশ্চিত করতে নিয়মিত গাজরের রস খাওয়া উচিত। কারণ গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে, যা রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না। সেই সঙ্গে শরীরকে চাঙ্গা রাখতেও সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:

প্রতিদিন এক গ্লাস করে গাজরের রস পান করলে দেহের অন্দরে ভিটামিন এ এবং বিটা-ক্যারোটিন মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। আর একবার ইমিউন পাওয়ার বেড়ে গেলে রোগভোগের আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

ভিটামিনের ঘাটতি দূর হয়:

দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটানোর পাশপাশি সার্বিকভাবে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে গাজরের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ এই সবজিটির অন্দরে থাকা ভিটামিন এ এবং উপকারি বিটা বিটা ক্যারোটিন চোখের ক্ষমতা মারাত্মক বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে ছানি পরার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়।

হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে:

বুড়ো বয়সে আর্থ্রাইটিস মারে যদি শয্যাশায়ী হতে না চান, তাহলে এখন থেকেই গজরের রস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মলবে। কারণ এর মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম, হাড়ের শক্তি এতটা বাড়িয়ে দেয় যে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড় দুর্বল হয়ে পরার আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে নানাবিধ হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর চাহিদা মেটে:

শরীর থেকে সব ধরনের টক্সিক উপাদানদের বের করে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে এই উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, শীতকালে নানা কারণে আমাদের ইমিউন পাওয়ার খুব দুর্বল হয়ে যায়। এই কারণেই তো নানা রোগ ঘাড়ে চেপে বসে। এবার বুঝেছেন তো বছরের এই সময় বেশি করে গাজরের রস খাওয়ার পরামর্শ কেন দেওয়া হয়!

ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে:

শীতকাল মানেই স্কিনের আদ্রতা হারিয়ে যাওয়া এবং সেই সঙ্গে নানাবিধ ত্বকের রোগের মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা। এমন পরিস্থিতিতে ত্বককে বাঁচাতে পারে একমাত্র গাজর। কারণ এই সবজিটির মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের অন্দরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানের শরীর থেকে বার করে দেয়। সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। তবে এখানেই শেষ নয়, গাজরের অন্দরে থাকা একাধিক ভিটামিন এবং মিনারেল ড্রাই স্কিনের সমস্যা দূর করতে, কালো কালো ছোপ দাগ কমাতে এবং বলিরেখা ভ্যানিশ করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:

এ কথা নিশ্চয় জানা আছে যে গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে ডায়াবেটিস রোগের প্রকোপ এত মাত্রায় বৃদ্ধি পয়েছে যে সারা বিশ্বের মধ্যে এদেশ ডায়াবেটিস ক্যাপিটালে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকেদের মতে এইভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে আগামী দিনে ভারতবর্ষের প্রতিটি ঘরে একজন করে ডায়াবেটিক রোগী থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে গজরের রস খাওয়ার পয়োজন যে আরও বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ গাজরের থাকা ভিটামিন এবং মিনারেল ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে ডায়াবেটিস রোগ ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগটুকু পায় না।

লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায়:

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে লিভারের অন্দরে থাকা বর্জ্য পদার্থদের বের করে দিয়ে শরীরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গটির কর্মক্ষমতা বাড়াতে গাজরের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে:

১০০ গ্রাম গাজরের অন্দরে থাকে দিনের চাহিদার প্রায় ৩৩ শাতাংশ ভিটামিন এ, ৯ শতাংশ ভিটামিন সি এবং ৫ শতাংশ বি৬। সেই সঙ্গে থাকে প্রচুর মাত্রায় থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই সবকটি উপাদান হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে শূন্য এসে দাঁড়ায়। সূত্র: বোল্ডস্কাই

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২৯, ২০১৮)